বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
চারুপমা
 

বৈশাখ  বসনে

গ্রীষ্মের চোখরাঙানি হার মানে নববর্ষে। অফুরন্ত উদ্যমে বর্ষবরণে মাতে বাঙালি। তার ভরসা সাবেকি সাজেই। লিখছেন অন্বেষা দত্ত।

গরমে ঘেমেনেয়ে সাজ যতই মাটি হোক, এ সাজের ভাগ হবে না! কারণ ক্যালেন্ডার বলছে ১৪৩০। এ যে পয়লা বৈশাখ! তাপপ্রবাহ গায়ে জ্বালা ধরালেও মনের ফূর্তিতে কমতি নেই বাঙালির। তাই বাংলা নববর্ষের স্বাদ ষোলো আনা উশুল করে নিতে সদাই তৎপর আমরা। তা সে সাজগোজ হোক, বা খাওয়াদাওয়া— লিস্টি থেকে বাদ পড়বে না কিছুই। 
হালখাতা করতে যাওয়ার চল হালআমলের শহুরে ছেলেমেয়েদের কাছে হয়তো অনেকটাই ফিকে। কিন্তু লাল সে খাতা মনে এনে দেয় অসংখ্য স্মৃতি। ফেলে আসা সে সময়ের পাতায় সযত্নে তোলা আছে নানা দোকানের নানা মিষ্টির মেলবন্ধন। মন ভিজে যায়, যখন পড়ে পাওয়া কোল্ড ড্রিঙ্কস-এর স্বাদ গুটি গুটি পায়ে এসে জানান দেয়, আহা কী মহার্ঘ্যই না ছিল সে তরলটুকু। কোথাও আবার মোটা কাগজের টুকরোয় গোলাপি-সাদায় মাখামাখি টু-ইন-ওয়ান আইসক্রিম গলে গলে পড়ে। ছোট কাঠিচামচে জিভ পর্যন্ত তার যাত্রার আগেই নতুন জামায় ঠাঁই হয় কয়েক ফোঁটার। চটচটে দাগ নিয়ে সদর্পে বাড়ি ফেরা। কারণ মন জানে, আজ বকুনি দেবে না কেউ। 
এসময়ের নববর্ষের আমেজ স্মার্ট। সেলিব্রিটিদের সাবেকি সাজ জানান দেয় সে কথা। শাড়ি বা পাঞ্জাবি, সাজগোজের পারিপাট্যে ফাঁক নেই।  
 ‘গৌরী এল’ এবং ‘মন দিতে চাই’ সিরিয়ালের পরিচিত মুখ অলিভিয়া মালাকার। সিরিয়ালের সুবাদে পরিচিতি বেড়েছে বলে তাঁর নববর্ষ পালনের ধরন কি বদলেছে? ‘কিছুটা। ব্যস্ততা বেড়েছে শ্যুটিংয়ে। আগেকার মতো নববর্ষ পালনের সুযোগ বা সময় তো হয় না,’ বললেন তিনি। 
পয়লার প্ল্যান কী? ‘বাঙালি সাজে সাজতে চাই, শাড়ি পরে মাথায় জুঁইফুল লাগিয়ে। কিন্তু এবার শ্যুটিংয়েই ব্যস্ত থাকব। ‘গৌরী এল’-র শ্যুট থাকলে সব শিল্পী মিলে খাওয়াদাওয়া হবে,’ বলেন অলিভিয়া। 
‘সোহাগ জল’-এর জনপ্রিয় মুখ শ্বেতা ভট্টাচার্য জানালেন নববর্ষ-স্মৃতির কথা। তাঁর কথায়, ‘ছোটবেলার হালখাতা মনে পড়ে। আমাদের দোকান ছিল। সাজানো হতো। কোল্ড ড্রিঙ্ক, মিষ্টির প্যাকেট, ক্যালেন্ডার! সবাই আসত। অদ্ভুত ভালোলাগা। দোকানে দোকানে হালখাতা করতে যেতাম। আইসক্রিম খাব ভেবে আনন্দ হতো। ক্যালেন্ডারে ভালো ছবি পেলে কেটে রাখতাম।’ ছোটবেলার স্মৃতি ভাগ করে নিলেন অলিভিয়া, ‘অন্যরকম দিন ছিল। পয়লা বৈশাখ মানেই হালখাতা। বাবা-মায়ের কিনে দেওয়া নতুন জামা পরে দোকানে যাওয়া। ভালো খাবার খাওয়া। এই দিনগুলো ভোলার নয়। এখন ভীষণভাবে মিস করি।’
এখনকার সেলিব্রেশন কেমন? শ্বেতা বলেন, ‘আনন্দ আগের মতোই আছে। বাড়িতে স্পেশাল মেনু। পোলাও-মাটন। তবে শ্যুটিং তো থাকেই। হালখাতা করতে আর যাওয়া হয় না।’ 
এই দিনটা কী করেন অলিভিয়া? ‘আমি যত সকালেই শ্যুটিংয়ে বেরই না কেন, মা ঠিক তার আগে উঠে পুজো দেবেন। পুজো দিয়ে এসে প্রসাদ দেওয়া নিয়ম। নতুন বছরে এটা হবেই হবে,’ জানালেন তিনি।
  বৈশাখের আমেজ তো মাসজুড়েই থাকে। কোন পোশাকে স্বচ্ছন্দ অলিভিয়া? ‘শাড়ি, সবসময়। সরস্বতী পুজোয় মায়ের শাড়ি ব্লাউজ নিয়ে পরা দিয়ে শুরু। তখন থেকেই আমার শাড়ির প্রতি টান। বৈশাখের সাজে সাদা বা অন্য কোনও নরম রঙের শাড়িই পছন্দ আমার। মূলত মলমল এসময় পারফেক্ট। সেটাই পরি।’ শ্বেতাও জানালেন, ‘নববর্ষ মানেই শাড়ি। ভীষণ ভালোবাসি। শাড়ির সঙ্গে গয়নায় একটু সাজব। আর এই গরমে যতটা হালকা পরা যায়! সুতির আরামদায়ক পোশাক পরতেই পছন্দ করি।’ 
সারা বছর নিজের সংস্কৃতি ভুলতে চাইলেও এসময়ে বাঙালি আপাদমস্তক বাঙালিই থাকতে চায়। শ্বেতা, অলিভিয়া এবং দিব্যজ্যোতি দত্ত চারূপমায় পাতায় ধরা দিলেন সেই চিরন্তনী সাজে। 

15th     April,   2023
 
 
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ