বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
বিশেষ নিবন্ধ
 

মেরুদণ্ড বাঁচাবার লড়াই
হারাধন চৌধুরী 

স্থানীয় বাজারে যে মুদির দোকান থেকে জিনিসপত্র কেনাকাটা করি, সেখানে সারাদিনই ক্রেতাদের উপছে পড়া ভিড়। মালিক ব্যস্ত থাকেন টাকাপয়সা গুনতে। ক্রেতাদের সামলায় তিনটি অল্প বয়সি ছেলে। দুর্গাপুজো, দীপাবলি, ভাইফোঁটা, এমনকী ছটপুজোও মিটে গিয়েছে। এমনই একদিন সকালে যে দৃশ্য দেখা গেল তাতে দোকান মালিক ভবতোষবাবু সম্পর্কে অনেকেরই ধারণা পাল্টে গেল। ফোন করে একজনকে বলছেন, ‘পল্টুকে আমি কিন্তু ছুটি দিয়ে দিয়েছি। বলেছি, এখনই বাড়ি যেতে। দেখবেন, ও আজ অবশ্যই স্কুলে যায় যেন। উনিশ-কুড়ি মাস বাদে স্কুল খুলছে।’ সেদিন দেখা গেল, ভবতোষবাবুর দোকান কর্মী দু’জন। জানা গেল, ওই মুহূর্তে অনুপস্থিত জনই হল পল্টু। সে ২০২২ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। পল্টুর বাবা একটি ছোট কারখানার শ্রমিক। করোনা পরিস্থিতিতে কারখানাটি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। পল্টুর বাবা নতুন চাকরি পাননি দেড় বছরেও। টুকটাক ফাইফরমাশ খেটে কিছু উপায় করেন মাত্র। পল্টুর মা এক বাড়িতে রান্নার কাজ করেন। কিন্তু করোনার একটা করে ঢেউ আছড়ে পড়ে আর তাঁর চাকরি কিছুদিনের জন্য নট হয়ে যায়। শহর শান্ত হলে ফের কাজে ডাক পান। পরিবারের যৎসামান্য আয়টুকুও অনিয়মিত, অনিশ্চিত। পল্টুর দিদির কলেজ বন্ধ। সে প্রাইভেট পড়িয়ে তার পড়ার খরচ জোগাড় করে। করোনার ভয়ে ছাত্রের বাড়িতে প্রবেশাধিকার হারিয়েছে এই তরুণী। অতএব পল্টুকে কাজেকর্মে নামতেই হয়েছে। ভবতোষবাবু বললেন, ‘আমার লেখাপড়া হয়নি। সে লম্বা ইতিহাস। যাই হোক, আমি চাই, কাজের পাশাপাশি পল্টু পড়াশোনাটা চালিয়ে যাক। আমার এটুকুতে যদি ওর স্বপ্নের কিছুটা পূরণ হয়, পরিবারটার উপকার হলে ভালো লাগবে।’   
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অধীন স্কুলগুলি ১৬ নভেম্বর খুলেছিল। পল্টু স্কুলে গিয়েছিল। এরাজ্যে এবং সারা দেশে তার মতো ছেলেমেয়ের সংখ্যা অগুনতি। বলা হল নবম-দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়ারা স্কুলে গিয়েই ক্লাস করবে। কারণ সামনেই তাদের বোর্ড ফাইনাল এগজাম। অফলাইন মোডে বা পুরনো স্বাভাবিক পদ্ধতিতে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা নেওয়া হবে। এই সরকারি ঘোষণাই বহাল রয়েছে। অতএব টেস্টও নেওয়া হল। টানা দু’বছর স্বাভাবিক পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেওয়া যায়নি। স্কুলশিক্ষায় স্বাভাবিকতা ফেরানোর দাবি ক্রমে জোরদার হচ্ছে। স্কুলশিক্ষায় গতি ফেরাতে সরকারও আন্তরিক। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণা মতো স্কুলগুলি দ্রুত জীবণুমুক্ত এবং মেরামতও করা হয়। কিন্তু, দুর্ভাগ্য, মাঝপথে চলে এসেছে ওমিক্রনের রক্তচক্ষু এবং তৃতীয় ঢেউ। স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় খুলেও ফের তালা ঝোলাতে বাধ্য হয়েছে রাজ্য। বড়দিনের টানা কয়েক দিনের ছুটির পর থেকে এখনও পর্যন্ত খোলা যায়নি। শুধু মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিকের ফর্ম ফিলাপ করা গিয়েছে।
পরিস্থিতি বিচারে ঠিক ছিল, কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় স্তরে অনলাইন ক্লাস হবে। কিন্তু তাতেও বাদ সাধল ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে কিছুদিনের সংক্রমণের তীব্রতা। খোদ কলকাতাতেই একের পর এক ক্যাম্পাসে শিক্ষকরা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। রেহাই মেলেনি অনেক পড়ুয়ারও। ফলে সেমেস্টার পরীক্ষা এবং সিলেবাসের খামতি পূরণ নিয়েও সমস্যায় পড়ল অধিকাংশ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান। একাধিক ছাত্র সংগঠন সমস্ত পরীক্ষা আপাতত স্থগিত রাখার দাবি জানাল। মানবিক আর্জির সামনে দোটানায় কর্তৃপক্ষ। 
করোনার উপর্যুপরি ঢেউ নিয়ে ভাবছেন বিশেষজ্ঞরা। কিছু পরামর্শ দিয়েছে কলকাতার একটি নামী ম্যানেজমেন্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: মোবাইলে অনলাইন শিক্ষা পড়ুয়াদের কাছে নানাভাবে আকর্ষণীয় করে তুলতে হবে। শিক্ষার সঙ্গে মেশাতে হবে বিনোদনও। পাঠদানের ধরনটাকে ‘এডুটেইনমেন্ট’-এ বদলে ফেলতে হবে। প্রয়োজনে স্কুল ও ক্লাসঘরের চেহারাও করে তুলতে হবে আকর্ষণীয়। যাতে স্কুলে ফেরার জন্য পড়ুয়ারা মুখিয়ে থাকে। বহু পড়ুয়ার ডেটা রিচার্জের সামর্থ্য নেই। সেক্ষেত্রে সরাসরি দেখা করতে পারলে ভালো, না-হলে শিক্ষকরা সপ্তাহে অন্তত একদিন ফোন করুন পড়ুয়াদের। পড়ুয়ারা স্কুলেরই অংশ—এই বোধটা অক্ষুণ্ণ থাকা জরুরি। কারণ, পড়াশোনা বার বার ব্যাহত হলে ছাত্রছাত্রীরা প্রতিষ্ঠান বিমুখ হতে পারে। রাজ্য স্কুলশিক্ষা দপ্তরের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে আইআইএম কলকাতা সম্প্রতি ১৩০০ স্কুলকে নানা বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। সবচেয়ে বেশি জোর দেওয়া হয়েছে স্কুলছুট রোখার উপর। মনে রাখতে হবে, করোনাকালের এটাই বড় সমস্যা।
আর একটি ন্যায্য চর্চার বিষয় হল, শহরের সম্পন্ন বাড়ির পড়ুয়াদের মতো অনলাইন ক্লাসের পরিকাঠামোগত সুবিধা সবার নেই। শহরের গরিব এবং গ্রামের বেশিরভাগ পরিবার এই বন্ধনীতে আসে। ৯ অক্টোবর প্রকাশিত কেন্দ্রীয় শিক্ষাদপ্তরের রিপোর্টে মেনে নেওয়া হয়েছে: অসম, অন্ধ্রপ্রদেশ, বিহার, গুজরাত, ঝাড়খণ্ড, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড প্রভৃতি সাত রাজ্যে ৪০-৭০ শতাংশ পরিবারের ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস (স্মার্ট, টিভি ইত্যাদি) নেই! অন্যদিকে, অনেক শিক্ষক এবং পড়ুয়া ল্যাপটপ, ট্যাব, এমনকী স্মার্ট ফোনের ব্যবহারে সড়গড় নন। আর যন্ত্রের ‘মেমরি লস’ নিয়েও ভুগছেন অনেকে। সব মিলিয়ে অনলাইন ক্লাসের সীমাবদ্ধতা একটি বড় অংশের কাছে বিড়ম্বনায় পরিণত হয়েছে।
এরাজ্যে ২০২০ সালের ১৫ মার্চ থেকে স্কুল-কলেজ বন্ধ হয়। পড়ুয়াদের সুরক্ষার কথা ভেবে। কিন্তু অনলাইনে ক্লাসের কিছু বাস্তবিক সমস্যা থাকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি খোলার দাবি উঠতে থাকে ক্রমে। সেই সূত্রে পুজোর ছুটি শেষের আগেই মুখ্যমন্ত্রী স্কুল-কলেজ খোলার দিন ঘোষণা করেন। ফলে আবারও স্কুল-কলেজমুখী হয় পড়ুয়ারা। কিন্তু ততদিনে একটা দীর্ঘ অনভ্যাস, অনীহা চলে এসেছে অনেকের মধ্যে। অংশত দেখা দিয়েছে স্কুলছুটের সমস্যা।
ডিম্বেরের শেষদিকে কচিকাঁচাদের স্কুলে ফেরাতে অভিনব কিছু উদ্যোগ দেখা যায় নানা জেলায়। যেমন বীরভূমে শুরু হয় ‘দুয়ারে শিশু ভর্তি’ কর্মসূচি। শিশুদের স্কুলে ফেরানোর আর্জি নিয়ে বাড়ি বাড়ি গেলেন জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের কর্তা ও শিক্ষকরা। বিতরণ করা হল মাস্ক, স্যানিটাইজার এবং মিষ্টি। অভিভাবকরা বলেন, ‘বাচ্চাদের পড়াশোনায় দীর্ঘ ছেদ পড়েছিল। পড়া তো ভুলেই যাচ্ছে। স্কুলে গিয়ে বাচ্চাদের ভর্তি করাতে হতো। এবার দুয়ারে শিক্ষকদের পেয়ে সুবিধা হল।’
মাধ্যমিকের টেস্ট শুরু হওয়ার পরেও অনেকে স্কুলে যায়নি। পড়ুয়াদের ফেরাতে সহপাঠীদের সঙ্গে নিয়ে তাদের বাড়ি-বাড়ি গিয়েছিলেন আউশগ্রামের কিছু শিক্ষক। আউশগ্রামের দেখানো পথে হেঁটে পূর্ব বর্ধমানের আরও অনেক শিক্ষক পৌঁছে গিয়েছেন পডুয়াদের বাড়ি। এভাবে অনেক পড়ুয়া স্কুলে ফিরেছে এবং পরীক্ষা দিয়েছে। এমনকী, যেসব ছাত্রীর বিয়ে হয়ে গিয়েছে, শ্বশুরবাড়ি থেকে ডেকে এনেও পরীক্ষায় বসানো হয়েছে তাদের।
ডিসেম্বরের মাঝামাঝির ঘটনা। গ্রামের প্রাথমিক পড়ুয়াদের কাছে হাজির হল ‘খেলতে খেলতে লেখাপড়া, পড়তে পড়তে খেলা’ নামক এক ‘সব পেয়েছির আসর’। সৌজন্যে, বাঁকুড়ার রাধানগর বোর্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করে ফেলেন। পাঠ্যবইয়ের বিষয়গুলির অনুসরণে তৈরি হল ভিডিও। চন্দ্রগ্রহণ, সূর্যগ্রহণ থেকে লসাগু, গসাগু অনেক কিছু শেখালেন তাঁরা হাতেকলমে, মজার ছলে।
‘কেভ সিনড্রোম’ থেকে পড়ুয়াদের মুক্তি কীভাবে? তা নিয়ে আলোচনার আয়োজন করল বারাসতের একটি স্কুল। মূলত অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়াদের অভিভাবকদের নিয়ে। এতে তাঁরা খুশি। পড়ুয়ারা অনেক দিন স্কুলে আসতে পারেনি। ফলে শিক্ষকদের সঙ্গে একটা দূরত্ব তৈরি হয়ে গিয়েছে। পড়ুয়া, অভিভাবক, শিক্ষক দূরত্ব ঘোচাতেই এই আয়োজন। এই বিষয়ে উল্লেখযোগ্য কিছু কাজ করেছে পশ্চিমবঙ্গের প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ম্যাকাউটও।
সম্প্রতি কেন্দ্রীয় মূল্যায়নে প্রাথমিক শিক্ষায় বড় রাজ্যগুলির মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ সেরার শিরোপা পেয়েছে। এই সাফল্য ধরে রাখতে এখন থেকেই সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। সবচেয়ে বেশি জোর দিতে হবে আবার স্কুল খোলার উপরে।
শিক্ষাক্ষেত্রে করোনার প্রভাবের উপর নজর রাখছে বিশ্ব ব্যাঙ্ক। স্কুল খোলার কারণে সংক্রমণ বৃদ্ধির কোনও তথ্য-প্রমাণ তারা পায়নি। ভারতে পড়ুয়াদের (১৫-১৮ বছর) টিকাকরণ সপ্তাহ দুই আগেই শুরু হয়ে গিয়েছে। তাতে মিলেছে উৎসাহব্যঞ্জক সাড়া। ১২-১৫ বর্ষীয়দের টিকাকরণ মার্চের গোড়ায় শুরু হতে চলেছে। যদিও টিকাকরণের আগে স্কুল না-খোলার পক্ষে কোনও যুক্তি খুঁজে পায়নি বিশ্ব ব্যাঙ্ক। তাদের বক্তব্য, স্কুল বন্ধের ফলে যে ক্ষতিটা পড়ুয়াদের হচ্ছে তা করোনায় শারীরিক ক্ষতির অধিক। ভারতের পড়ুয়াদের লার্নিং পভার্টি ৫৫ থেকে বেড়ে ৭০ শতাংশ হওয়ার আশঙ্কা করছে বিশ্ব ব্যাঙ্ক। এর সার্বিক প্রভাব পড়বে আয় বা বৃদ্ধির উপর। অর্থাঙ্কে এই ক্ষতির পরিমাণ কত? বিশ্ব ব্যাঙ্কের ২০২০ সালের হিসেবে ছিল ৪০ হাজার কোটি মার্কিন ডলার! ২০২২ সালে ক্রমপুঞ্জিত ক্ষতির পরিমাণ কত দাঁড়াবে? এটাই পণ্ডিতদের মাথাব্যথার কারণ হতে চলেছে নিঃসন্দেহে।    
তৃতীয় ঢেউ দুর্বল হচ্ছে। ওমিক্রনের মারণ ক্ষমতা তুলনামূলকভাবে অনেক কম। অর্থনীতি ধুঁকছে। তির গতি নিয়েছে দারিদ্র। আর যেসব ক্ষতির পরিমাপ টাকার অঙ্কে অসম্ভব, সেটাই হয়তো সবচেয়ে বড়। দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া এই পরিস্থিতিতে, সবচেয়ে বেশি দরকার বোধহয় সাহস, ঘুরে দাঁড়ানোর শক্তি। করোনাকে যম ভাবা বন্ধ করে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চোখে চোখ রেখে লড়াইটা চালিয়ে যাওয়া জরুরি। তাতে সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকেও শামিল করা বুদ্ধিমানের কাজ নয় কি? সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছে সারা বাংলা সেভ এডুকেশন কমিটি। সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার পক্ষে তারা। ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নিতে হবে সরকারকে। শিক্ষা যদি মেরুদণ্ড হয়ে থাকে, তবে আমাদের আজকের সমস্যা ও লড়াইটা মেরুদণ্ড বাঁচাবার।  
দু’দিন আগে রাতে একটি ক্যাবে বাড়ি ফিরছিলাম। চালকের বাড়ি ঝাড়খণ্ডের কোডারমা। বিশ বছর যাবৎ কলকাতার বাসিন্দা তিনি। বললেন, ‘দেশে সুন্দর চাষ হয়। সারা বছরের খাবার কিনতে হয় না।’ তাহলে কলকাতায় কীসের টানে? —‘ভেবেছিলাম একমাত্র মেয়েকে কলকাতার কলেজ থেকে বিএ/এমএ পাশ করাব।’ তারপর থেমে বলেন, ‘ইদানীং আয়পত্তর প্রায় নেই। তেলের দামই ওঠে না কোনও কোনও দিন। ভাবছি দেশেই ফিরে যাব।’ তাহলে মেয়ের পড়ার কী হবে? জবাবে ক্যাব চালক একটি মোক্ষম প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে চুপ করে গেলেন—‘ক্লাসই তো হচ্ছে না। ঘরে বসে পড়ার পর যে সার্টিফিকেট মিলবে, তা দিয়ে কোন চাকরি হবে?’  

19th     January,   2022
 
 
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ