বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
অমৃতকথা
 

নামের নাদ

নামের যে নাদ তার মধ্যে যেমন নামী বিদ্যমান, নামের যে সত্তা তার মধ্যে আমিও স্বরূপত বিরাজমান। নামী নামের মধ্যে অবস্থান করছেন—নামের অন্তে বিরাজ করছেন—নামের আদিতে স্থিত আছেন। নামের লক্ষ্যার্থ হলেন তিনি। নাম একটি নাদ, একটি অর্থ, একটি ইঙ্গিত, একটি ভাব বহন করে—সেই নাদ, ভাব, অর্থ, ইঙ্গিত ইত্যাদি হলেন স্বয়ং তিনি। নাদ, ভাব ইত্যাদি তাঁরই অস্তিত্ব-উপস্থিতি অনুক্ষণ ঘোষণা করছে। ধোঁয়া দেখে যেমন আগুনের অস্তিত্ব বোঝা যায়, নামের নাদ তাঁর উপস্থিতিকেই তেমন ব্যক্ত করে। আমি জপ করি, মানে আমি নির্দ্দিষ্ট নামটিকে আমার ভিতরে শুনতে চেষ্টা করি। প্রথমে আমি একটি মন্ত্র নিয়ে সুরু করি। মন্ত্র মাত্রেরই একটি নাদ বা শব্দ আছে। আমি সেই নাদকে অনুসরণ ক’রে সাধনপথে এগিয়ে চলি। সেই নাদ ক্রমশ আমার অন্তঃকর্ণের দুয়ার উন্মোচিত ক’রে দেয়। আমার চেষ্টাকৃত নাদ স্বতঃস্ফুর্ত্ত মহানাদের সঙ্গে ক্রমে আমার মিলন ঘটিয়ে দেয়। প্রথমে চেষ্টা চরিত্র ক’রে ‘ধরাই’ দিয়ে ঘুড়ি উড়াতে হয়। মাঝে মাঝে ঘুড়ি গোত্তা খায়। কিন্তু তারপর আকাশের উপরে যখন উঠে যায়, তখন মহাবায়ুতে ভর ক’রে ঘুড়িখানি শুধু মহানন্দে মহাকাশে ভাসতে থাকে। তখন আমাকে কিছুই করতে হয় না, মাঝে মাঝে শুধু সুতো ধরে একটু-আধটু টান দিয়ে সেই বিশাল মহাকাশের সঙ্গে আমি আমার যোগসূত্রের আনন্দরস উপভোগ করি। ঐ ঘুড়িখানি হলাম যেন আমি; আমিই যেন মহাকাশে মহানন্দে ভাসছি। তা না-হলে ঘুড়ি ওড়াবার রস বা মজা কোথায়? আমি এই দেহ নিয়ে নেহাত্‌ ঐ উঁচুতে উঠতে পারছি না, কিন্তু আমার সূক্ষ্ম সত্তা ঐ ঘুড়ির সঙ্গে অভিন্ন হয়ে ঐ ঊর্দ্ধলোকে  বিরাজ করছে। আমি তখন দ্যুলোকের জীব—এই মর্ত্ত্যের সঙ্গে আমার কোন সম্পর্কই যেন নাই—শুধুমাত্র ঐ একটি অদৃশ্যপ্রায় সুতো ছাড়া। নামের মধ্যে তিনি যেমন বিরাজমান, নামের মধ্যে আমিও তেমনিই সূক্ষ্মভাবে বিরাজমান। তা না-হলে আমি নামকে ভালবাসব কিভাবে? নাম যে আমারই বিবর্ত্তিত অন্তিম রূপটি। আমি এই আকারেই ছিলাম, আমি পুনরায় ঐ আকারেই ফিরে যাব আমার বর্ত্তমান স্থূল অস্তিত্ব ক্রমশ বিবিধ স্তর অতিক্রম ক’রে অন্তিমে ঐ মহানাদের সঙ্গে অভিন্নতা লাভ করে। সেখানেই রয়েছে বিশ্বপ্রাণের আদিতম স্পন্দন—আমার প্রাণস্পন্দনটিও সেখান থেকেই আসছে। মাছের ডিমের মতন আমরা তাঁরই মধ্যে মহাকারণে লীন হয়ে থাকি। রুইমাছের পেটে যে ডিমের পেটি পাওয়া যায়, তার প্রতিটি অণু থেকে এক একটি অনুরূপ বড় রুইমাছ হতে পারে। যদি সবগুলি ফোটে ও বৃদ্ধি পায় তবে লক্ষাধিক মত্‌স্য ঐ পেটির মধ্যে সুপ্ত আকারে বিরাজ করছে। ডিমের অবস্থায় তাদের আকার এক ও অভিন্ন।
অযাচকের ‘জপ’ থেকে

4th     March,   2023
 
 
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ