বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
অমৃতকথা
 

দেহ

মহারাজ: যোগাভ্যাস করো—স্থূল ও সূক্ষ্ম দেহের দাসত্ব থেকে নিস্তার পেতে। তা না হলে বুড়ো বয়সে টের পাবে। যদি মুক্ত না-ও হও, তাহলেও রোজ চিন্তা করতে করতে দৃঢ় প্রত্যয় হবে এবং দেহের কষ্টকে পরের কষ্ট ভাবতে চেষ্টা করেও খানিকটা স্বস্তি পাবে। সেবক গীতাপাঠ করছে।
প্রশ্ন: গীতায় যে ‘অহম্‌’, ‘মম’ বলেছে, সেগুলোতে কি নৈর্ব্যক্তিক অহম্‌, না শ্রীকৃষ্ণকে বোঝায়?
মহারাজ: ‘অব্যক্তং ব্যক্তিমাপন্নং…।’ ‘অবজানন্তি মাং মূঢ়াঃ’—বলতে নৈর্ব্যক্তিক ঈশ্বরকেই বোঝায়। তবে ‘যে যথা মাং প্রপদ্যন্তে’—যে যেভাবে তাঁর আরাধনা করবে, সে সেইভাবে তাঁকে পাবে। বাসুদেব শ্রীকৃষ্ণ ভাবলে নিত্যকৃষ্ণ বোধ করবে।
প্রশ্ন: তাতে কি বিরহ নেই?
মহারাজ: সে-বিরহ আনন্দেরই আরেক অবস্থা।
প্রশ্ন: যারা গাছ, পাথর ইত্যাদি পূজা করে, তাতে তাদের মুক্তি হবে না?
মহারাজ: হবে, যদি তারা একটা শিলার মধ্যেও নৈর্ব্যক্তিক ঈশ্বরের ধারণা করে, তা না হলে—
‘যান্তি দেবব্রতা দেবান্‌ পিতৃন্‌ যান্তি পিতৃব্রতাঃ।
ভূতানি যান্তি ভূতেজ্যা যান্তি মদ্‌যাজিনোঽপি মাম্‌।।’
‘স্থূল’শরীর, ‘সূক্ষ্ম’শরীরের পারে গেলেই ‘কারণ’ শরীর, সেখানে আনন্দময় কোষ। কারণ শরীরের পারে গেলেই নির্বাণ—মুক্তি।
প্রশ্ন: ঠাকুর, স্বামীজী—এঁরা কি সবসময় আনন্দময় কোষে থাকতেন?
মহারাজ: না। যখন স্বামীজী বিশ্বনাথ দত্তর ছেলে তখন নয়, ঠাকুর যখন এই জগতের স্তরে নামতেন তখন নয়, চৈতন্যদেব যখন ভক্তসঙ্গে রঙ্গে থাকতেন তখন নয়।
সেবক: মহারাজ, তিথিপূজার দিন মঠে না গিয়ে ঘরে জপ-ধ্যান করলেই তো হয়।
মহারাজ: না, উৎসবে যাওয়ার দরকার আছে। মাঝে মাঝে যেতে হয়।
সেবক: কই, আগ্রহ তো হয় না। ইষ্টের প্রতি টান ও আত্মীয়তা তো বোধ করি না।
মহারাজ: আত্মীয়তা বোধ হলে তো হয়েই গেল।
মহারাজ: দেখ, হয় পাঠ অথবা serious কিছু নিয়ে আলোচনা সর্বদা করতে হয়। তোমরা যে হাসিঠাট্টা কর, তাতে আমার কষ্ট হয়। আমি যখন কথা বলতে পারতাম, তখন জোর করে সর্বদা কথা বলে এসব আলোচনা বন্ধ রাখতাম।
জনৈক সন্ন্যাসী সোনার রঙের জামার বোতাম পরেছেন দেখে মহারাজ বললেন, “সন্ন্যাসীর যেমন মেয়েদের দিকে, তেমনি সোনার দিকেও তাকাতে নেই। এসব পরমহংসোপনিষদে আছে।”
সেবক: মহারাজ, গীতায় আছে—‘প্রকৃতিং যান্তি ভূতানি নিগ্রহঃ কিং করিষ্যতি।’ এই নিগ্রহ মানে কী?
মহারাজ: ইন্দ্রিয়-নিগ্রহ। জোর করে নিগ্রহ করলে কিছু হয় না। যেমন, শুধু ব্রত-উপবাস ইত্যাদিতে কিছু হয় না। যত ঈশ্বরের দিকে এগুবে, ততই ইন্দ্রিয়াসক্তি কমবে—তখন আর জোর করে নিগ্রহ করতে হবে না। যতই পুবে যাবে পশ্চিম ততই দূরে পড়বে। আর ঈশ্বরানুরাগ হলে যেরকম প্রয়োজন স্বাভাবিকভাবেই সেই রকম নিগ্রহও হবে।
স্বামী সুহিতানন্দ সম্পাদিত ‘সারগাছির স্মৃতি’ থেকে

14th     January,   2022
 
 
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ