নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: করোনার কারণে গত দু’বছর ঝিমিয়েছিল উৎসবের মরশুম। তবে এবার সংক্রমণের মাত্রা অনেক কম। যেটুকু আছে, তাকে পাত্তা দিতে নারাজ সাধারণ মানুষ। তাই গণেশ চতুর্থী থেকে দেশে যে উৎসব-পার্বণ শুরু হয়েছে, শীত পর্যন্ত তাতে মাতবেন আট থেকে আশি। একের পর এক উৎসবকে কেন্দ্র করে খরচের দরজা খুলেবেন তাঁরা, আশায় আছে বাণিজ্যমহল। তাদের আশা, দুর্গাপুজো, দেওয়ালি ও ক্রিসমাসকে কেন্দ্র করে দেশে যে বাণিজ্য হবে, তার অঙ্ক প্রায় আড়াই লক্ষ কোটি টাকা। সাম্প্রতিক সমীক্ষায় এমনই দাবি করেছে কনফেডারেশন অব অল ইন্ডিয়া ট্রেডার্স। তবে এর পাশাপাশি তাদের বক্তব্য, গোটা দেশে একেবারে আঞ্চলিক স্তরে যেভাবে ভারতীয় পণ্যের উপর নির্ভরতা বেড়েছে, তাতে এবারও কোণঠাসা হবে চীনা পণ্য। তাতে সেদেশ ব্যবসা হারাতে পারে প্রায় ৭৫ হাজার কোটি টাকার।
কনফেডারেশনের সেক্রেটারি জেনারেল প্রবীণ খান্ডেলওয়াল বলেন, বাজার যে পুরনো ছন্দে ফিরেছে, তার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে গণেশ চতুর্থীতেই। মহারাষ্ট্র তো বটেই, ভালো ব্যবসা করেছে দেশের অন্যান্য প্রদেশও। এক মাসের মধ্যেই শুরু হবে দুর্গাপুজো। তাতে পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি গোটা দেশে উৎসব পালিত হবে। সব মিলিয়ে এবার দেওয়ালি সহ পাঁচ মাসের উৎসব মরশুম ভালো ফল করবে। প্রবীণবাবুর বক্তব্য, দেওয়ালিতে কেমন ব্যবসা হবে, তার আঁচ পাওয়া যায় ছোট ব্যবসায়ীদের পণ্য বরাত দেওয়ার প্রবণতা দেখে। ফেডারেশনের সমীক্ষাকারী শাখা ‘সিয়াট রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেড ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি’ দেশের মোট ২০টি শহরে সমীক্ষা চালিয়েছে। সেই তালিকায় আছে কলকাতাও। সেখানেই দেখা যাচ্ছে, উৎসব উপলক্ষে দোকানগুলি ভালো পরিমাণে মাল মজুত করতে শুরু করেছে। সমীক্ষা বলছে, এবার চীনা পণ্যের বরাতের হার অনেকটাই কম। গত দু’বছর ধরেই সেই ধারা বজায় ছিল। কিন্তু এবার চীনা পণ্য বর্জনের প্রবণতা বেশি। সেই তালিকায় আতসবাজি থেকে শুরু করে লক্ষ্মী-গণেশ মূর্তি পর্যন্ত রয়েছে। দেশের মানুষের চাহিদার এই বদল হওয়ায়, দিনের শেষে ভালো রোজগারের মুখ দেখবেন দেশীয় শিল্পীরাই, বলছেন প্রবীণবাবু। তাঁর কথায়, দেশে সারা বছর যে গণেশ মূর্তি বিক্রি হয়, তার সংখ্যা প্রায় ২০ কোটি। এতে ৩০০ কোটি টাকার ব্যবসা হয়। এবার কিন্তু সেই বাজারে একেবারেই থাবা বসাতে পারেনি চীন। তার সুফল পেয়েছে দেশ।