বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
শিল্প -বাণিজ্য
 

বাংলার শিল্পপতিদের সঙ্গে
ঘন ঘন বৈঠক কেন্দ্রের

বাপ্পাদিত্য রায়চৌধুরী, কলকাতা: এবার বাংলার শিল্পমহলের সঙ্গে যোগাযোগ ও ঘনিষ্ঠতা বাড়াচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। এ রাজ্যে শিল্প স্থাপনে বা ব্যবসা চালাতে কারও কোনও অসুবিধা হচ্ছে কি না, তা জানতে চাইছেন স্বয়ং রেল ও বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল। নিয়মিত তিনি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিভিন্ন বণিকসভার সঙ্গে বৈঠক করছেন। কথা বলছেন শিল্পপতিদের সঙ্গে। যদিও ভোটের আগে এই ধরনের উদ্যোগকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেই মনে করছেন অনেকে। 
বিভিন্ন শিল্প সংস্থার অনুষ্ঠান হোক বা চেম্বার অব কমার্সের আলোচনাসভা— সারা বছরই কোনও না কোনও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজ্যে হাজির হন। বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্প বা সরকারি উদ্যোগ সম্পর্কে তাঁরা বিস্তারিতভাবে জানান। করোনা সংক্রমণ বা লকডাউন পর্ব শুরু হওয়ার আগে পর্যন্ত এই রেওয়াজই চলত। কিন্তু পরিস্থিতি বদলে যেতে শুরু করে গত মার্চ মাস থেকে। সশরীরে উপস্থিত না হয়ে বিভিন্ন ওয়েবিনারের মাধ্যমে শিল্পমহলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন  কেন্দ্রের মন্ত্রী বা আমলারা। কিন্তু সবটাই ছিল এখানকার শিল্পমহলের আমন্ত্রণে বা উদ্যোগে। তবে বিগত কয়েক মাসে বদলে গিয়েছে পরিস্থিতি। 
রাজ্যের বণিকমহল সূত্রে খবর, কয়েক মাস আগে পীযূষ গোয়েলের অফিস থেকে যোগাযোগ করা হয় এখানকার  একাধিক চেম্বার অব কমার্সের সঙ্গে। বলা হয়, রেল ও বাণিজ্যমন্ত্রী যোগাযোগ রাখতে চান তাদের সঙ্গে। কবে কীভাবে মন্ত্রী যোগাযোগ করবেন, সেই সম্পর্কে বিশদ জানানো হয় বণিকসভাগুলিকে। তারপর থেকেই নিয়মিতভাবে অনলাইনে বৈঠক সারছেন পীযূষ গোয়েল। দেড় থেকে দু’ঘণ্টা সময় দিচ্ছেন তিনি। অনলাইনে উত্তর দিচ্ছেন বিভিন্ন প্রশ্নের। যদি শিল্পমহলের তরফ থেকে কোনও অসুবিধার কথা জানানো হয়, তাহলে তার প্রতিকার করা হবে বলেও আশ্বাস দিচ্ছেন মন্ত্রী। কোনও মাসে একবার, আবার কোনও মাসে একাধিকবার চলছে সেই ভার্চুয়াল বৈঠক।
কেন্দ্রের এই উদ্যোগে খুশি শিল্পমহল। সরকারের সঙ্গে সমন্বয় রেখে চলতে চায় সব মহলই। তাই কেন্দ্রের এই উদ্যোগকে আন্তরিকভাবে গ্রহণ করছেন অনেকেই। মার্চেন্টস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল শুভাশিস রায় বলেন, রাজ্য সরকারকে আমরা যে কোনও সমস্যায় সব সময় পাশে পাই। কিন্তু শিল্পের ক্ষেত্রে অনেক জট থাকে, যা ছাড়াতে পারে একমাত্র কেন্দ্রই। যেহেতু বণিকসভাগুলির কাজের অনেকখানি আমদানি-রপ্তানি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত, তাই এক্ষেত্রে কেন্দ্রের সাহায্য জরুরি। পাশাপাশি আছে বেশ কিছু ইস্যু, যার জন্য আমাদের কেন্দ্রের কাছে তদ্বির করার দরকার হয়। বাণিজ্যমন্ত্রী যখন নিজে উদ্যোগ নিয়ে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন ও সমস্যার সমাধানের আশ্বাস দিচ্ছেন, এর থেকে ভালো আর কিছু হয় না। রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্র যেভাবে আমাদের পাশে দাঁড়াচ্ছে, তা সত্যিই সাধুবাদযোগ্য, বলছেন শুভাশিসবাবুরা।
২০১১ সালে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ রাজ্যে শিল্পের জন্য একটি কোর কমিটি গঠন করেন। শিল্পমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী সহ বিভিন্ন মন্ত্রী সেই কমিটির মাথায় ছিলেন। শিল্পের সঙ্গে রাজ্যের যে সমস্ত দপ্তর যুক্ত, তার আমলারাও এই কমিটিতে ছিলেন। নিয়মিত সেই কমিটির বৈঠক হতো। একাধিকবার মুখ্যমন্ত্রী নিজেই হাজির থেকেছেন ওই বৈঠকে। একেবারে সেই ধাঁচের না হলেও, প্রায় একই কায়দায় এবার বৈঠক শুরু করেছে কেন্দ্র। তবে এতদিন পর কেন নরেন্দ্র মোদি সরকারের টনক নড়ল, প্রশ্ন উঠছে তা নিয়েও। সামনেই রাজ্যে বিধানসভা ভোট। তার আগে শিল্পমহলের সঙ্গে, বলা ভালো শিল্পপতিদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়িয়ে রাজনৈতিকভাবে ফায়দা তোলার চেষ্টা হচ্ছে কি না, সেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে একাধিক মহল থেকে। দিন কয়েক আগেই শহরের একটি পাঁচতারা হোটেলে শিল্পপতিদের নিমন্ত্রণ করা হয় কেন্দ্রীয় শাসক দলের তরফে। সেখানে হাজির ছিলেন বাংলা ও দিল্লির তাবড় নেতারা। শিল্প বার্তা দেওয়া হয় সেখানেও। 
এতদিন কেটে গেলেও শুধুমাত্র ভোটের আগেই কেন কেন্দ্রের এত শিল্প দরদ, তার ব্যাখ্যা খুঁজতে চেষ্টা করছেন অনেকেই।

31st     January,   2021
 
 
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ