মুম্বই: ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্ট জিততে না পারায় কিছুটা চাপে টিম ইন্ডিয়া। তার উপর মুম্বইয়ে চলছে অকাল বৃষ্টি। ফলে কোচ রাহুল দ্রাবিড়ের কপালে চিন্তার ভাঁজ আরও চওড়া হয়েছে। দু’দিন ধরে উইকেট ঢাকা। আউট ফিল্ড ভিজে। বাধ্য হয়ে ভারতকে প্র্যাকটিস করতে হয়েছে ইন্ডোরে। নিউজিল্যান্ড আবার সেই পথও মাড়ায়নি, করোনার ভয়ে।
প্রথম দিন খেলা নির্ধারিত সময়ে শুরু হবে কিনা বলা কঠিন। ঠিক যেন ইংলিশ কন্ডিশন। টসে জিতে যে কোনও দলই চাইবে আগে ফিল্ডিং করতে। কারণ, নতুন বল স্যুইং হবে বেশি। বিপক্ষ দলে টিম সাউদি, কাইল জেমিসনের মতো পেসার আছেন, যাঁরা গতি ও স্যুইংয়ে বেসামাল করে দিতে পারেন ভারতীয় ব্যাটিংকে। তার ট্রেলার দেখা গিয়েছিল কানপুরের নির্বিষ পিচেও। সেখানে ওয়াংখেড়ের বাইশগজ সাউদিদের কাছে তো ভূস্বর্গ। তাই স্যুইং কমাতে উইকেট একেবারে ন্যাড়া করে দেওয়া হচ্ছে। রোদ উঠলে বল টার্ন করবে। সেক্ষেত্রে রবিচন্দ্রন অশ্বিন, রবীন্দ্র জাদেজাদের স্পিন খেলতে সমস্যায় পড়বেন নিউজিল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা। কিন্তু ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলির কথা শুনে মনে হল, তিন পেসার নিয়ে মাঠে নামতে পারেন তিনি। সেক্ষেত্রে ইশান্ত শর্মা, উমেশ যাদবের সঙ্গে খেলতে পারেন মহম্মদ সিরাজও। সেক্ষেত্রে বাদ পড়ার সম্ভাবনা থাকছে অক্ষর প্যাটেলের।
কয়েক দিন বিশ্রামের ফলে বেশ তরতাজা দেখাচ্ছে ক্যাপ্টেন কোহলিকে। কোচ রাহুল দ্রাবিড়ের থ্রো ডাউনে নেটে দীর্ঘক্ষণ নকিং করতে দেখা যায় তাঁকে। টাইমিং ও শট চয়নে বড় রানের খিদে স্পষ্ট ধরা পড়ছিল। দীর্ঘদিন শতরান নেই কোহলির ব্যাটে। ২০১৯ সালে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে গোলাপি টেস্টে ইডেনে শেষবার সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন তিনি। টি-২০ বিশ্বকাপে ব্যর্থতা, অধিনায়কত্ব ছাড়া-- অনেক ঝড় ঝাপ্টা সামলাতে হয়েছে বিরাটকে। যাবতীয় বিতর্ক ভুলে আলোর পথযাত্রী হতে চান কোহলি। এক্ষেত্রে তাঁর সারথী কোচ রাহুল দ্রাবিড়। এই জুটি কতটা সফল হয়, সেটাই দেখার।
তবে বিরাট ফেরায় কে বসবেন, তা নিয়ে ধোঁয়াশা অব্যাহত। একটা সময় শোনা গিয়েছিল, মায়াঙ্ক আগরওয়াল বাদ পড়বেন। চোট থাকায় ঋদ্ধিমান সাহার জায়গায় কেএস ভরত খেলবেন এবং ওপেন করবেন। ম্যাচ শুরুর চব্বিশ ঘণ্টা আগে ভারত অধিনায়ক জানিয়ে দিয়েছেন, ঋদ্ধি পুরো ফিট। তাহলে বাদ পড়বেন কে? ক্রিকেটীয় যুক্তিতে রাহানের উপরই কোপ পড়ার কথা। কারণ, একেবারেই ছন্দে নেই তিনি। প্রায় পাঁচ বছর পর টেস্ট ক্রিকেট ফিরছে মুম্বইয়ে। স্বাভাবিকভাবে ক্রিকেটপ্রেমীদের মধ্যে উৎসাহ রয়েছে। তবে করোনা নতুন করে মাথাচাড়া দেওয়ায় বেশ সতর্ক মুম্বই ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন। দর্শক প্রবেশের উপর আরোপ হয়েছে বিধি-নিষেধ।
এদিকে, নিউজিল্যান্ড এখানে শেষ টেস্ট খেলেছিল ১৯৮৮ সালে। বেঙ্কসরকারের ভারতকে ১৩৬ রানে হারিয়েছিল জন রাইটের নিউজিল্যান্ড। কেন উইলিয়ামসন তখনও পৃথিবীর আলো দেখেননি। তবে তিন দশকে কিউয়ি ক্রিকেট আমূল বদলে গিয়েছে। পূর্বসূরিদের দেখানো পথে নিউজিল্যান্ডকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এক নতুন উচ্চতায় তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন উইলিয়ামসন। ভারতের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্টের ড্রয়ে উজ্জীবিত কিউয়ি ব্রিগেড দ্বিতীয় টেস্ট জিততে মরিয়া। ব্যাটিংয়ে তাদের বড় ভরসা টম লাথাম, ইয়ং, উইলিয়ামসম, রস টেলর। পাশাপাশি এই ম্যাচে নজর থাকবে আজাজ প্যাটেলের উপর। নিউজিল্যান্ডের এই মুম্বইজাত স্পিনারটি প্রথম টেস্টে দুর্দান্ত বোলিং করেছিলেন। ‘ঘরের মাঠে’ আরও আগ্রাসী হয়ে উঠতে পারেন তিনি। এই লড়াইয়ে তাঁর সঙ্গী হবেন আর এক ভারতীয় বংশোদ্ভূত রাচীন।