বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
খেলা
 

শ্রেয়সের মঞ্চে লড়াকু
জবাব ঋদ্ধিমানের
জয়ের গন্ধ পাচ্ছে ভারত

সৌরাংশু দেবনাথ, কানপুর: খেলা তখন দ্বিপ্রহরে গড়িয়েছে। আচমকা লাইভ ক্যামেরা ঘুরল ভারতীয় ড্রেসিংরুমে। পাশাপাশি বসে রয়েছেন অজিঙ্কা রাহানে ও চেতেশ্বর পূজারা। দলের দুই সিনিয়র সদস্যের চোখেমুখে দুনিয়ার যাবতীয় উদ্বেগ। কঠিন সময়ে ফের একবার দলের কাজে আসতে ব্যর্থ উভয়েই। টেকনিকেও ধরা পড়ছে অজস্র ছিদ্র। তা নাহলে কী আর শরীর থেকে দূরে থাকা বাউন্সারে এভাবে উইকেট দিতেন পূজারা? আর রাহানে তো স্পিনারের সোজা বলটাই ধরতে পারলেন না। তাই প্রশ্ন উঠতেই পারে, আর কতদিন এভাবে দয়াদাক্ষিণ্যে চলবে!
লাল বলের ক্রিকেটে দুই মহারথীর ব্যর্থতা খাদের কিনারায় ঠেলে দিয়েছিল ভারতকে। বিশ্বের সেরা টেস্ট দলকে ম্যাচে ফেরার সাদর আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন প্রথম সারির ব্যাটসম্যানরা। অতিথি সৎকারের বিনয়ী  নিদর্শন রেখে পূজি-অজিঙ্কার পথেই জলদি ফেরেন মায়াঙ্ক আগরওয়াল, রবীন্দ্র জাদেজা। তারপরও যে চতুর্থ ইনিংসে ২৮৪ রানের কঠিন টার্গেট নিউজিল্যান্ডের সামনে খাড়া করা গিয়েছে, তার নেপথ্যে শ্রেয়স আয়ার ও ঋদ্ধিমান সাহা। তাঁদের দুরন্ত যুগলবন্দিই শীতের কানপুরে স্বস্তির উষ্ণতা জুগিয়েছে ভারতীয় ড্রেসিং রুমে। দিনের শেষে এক উইকেট খুইয়ে কিউয়িরা তুলেছে চার রান। সোমবার শেষ দিনে তাদের প্রয়োজন আরও ২৮০। আর রাহুল দ্রাবিড় যুগের প্রথম টেস্ট জয়ের জন্য ভারতের চাই ৯ উইকেট। অঘটন না ঘটলে আইসিসি ইভেন্টে নিউজিল্যান্ডের রিরুদ্ধে পরাজয়ের ধারা ভাঙতে চলেছে গ্রিন পার্কেই।
অভিষেক টেস্টে প্রথম ইনিংসে শতরানের পর দ্বিতীয় ইনিংসে হাফ-সেঞ্চুরি, কৃতিত্ব প্রাপ্য শ্রেয়াসের। এই কীর্তি কোনও ভারতীয়ের নেই। এই টেস্টে তাঁর ব্যাটে এল মোট ১৭০ রান। ওয়াংখেড়েতে দ্বিতীয় টেস্টে তাঁর জায়গা নিয়ে আর সংশয় থাকার কথা নয়। বরং মারাত্মক চাপে পড়লেন রাহানে, পূজারা। অদ্ভুত ব্যাপার হল, রাহানে আউট হয়ে ফেরার সময় গ্যালারির হাততালি পরিণত হল গর্জনে। প্রবীণের বিদায় ও নবীনের বরণে যেন সিলমোহর পড়ল মুহূর্তে।
শ্রেয়সের ঝলমলে আবির্ভাবের মঞ্চে দুররন্ত কামব্যাক করলেন ঋদ্ধিমান সাহার। সবসময় তাঁর ঘাড়ের উপরেই ঝুলতে থাকে খাঁড়া। অস্ট্রেলিয়ায় ৩৬ অলআউটের টেস্টে সবাই ব্যর্থ হলেও বাদ পড়তে হয়েছিল তাঁকেই। বিশ্বের সেরা কিপার হয়েও দিনের পর দিন থাকতে হয়েছে সুযোগের অপেক্ষায়। সবসময়ই তাঁকে ব্যাট করতে হয় দমবন্ধ করা চাপের বিরুদ্ধে। কোনও ইনিংসে রান না পেলেই মাথাচাড়া দেয় বাদ দেওয়ার সেই চেনা তত্ত্ব। কানপুরে প্রথম ইনিংসে রান না পাওয়ার পরও তেমনটাই হয়েছে। যেন অবসর না নেওয়া পর্যন্ত এটাই পাপালির ভবিতব্য!
গ্রিন পার্ক থেকে মিনিট কুড়ি দূরের গঙ্গায় দেওয়া হয়েছে বাঁধ। ঋদ্ধির ইনিংস যেন সেই গঙ্গা ব্যারাজের লকগেট খুলে ভাসিয়ে দিল সব কুৎসা আর অপপ্রচারকে। ঘাড়ে ব্যথা নিয়েই তিন ঘণ্টারও বেশি জারি রাখলেন ব্যাট হাতে লড়াই। বোঝালেন তিনি আদ্যন্ত টিমম্যান। ১০৩ রানে ছয় উইকেট পড়ে যাওয়ার পর রীতিমতো কোণঠাসা পরিস্থিতি থেকে দলকে তিনি পৌঁছে দিলেন ২৩৪ রানের স্বস্তিতে। সেই সুবাদে টিম ইন্ডিয়ার লিড পৌঁছল তিনশোর কাছে। শ্রেয়সের সঙ্গে সপ্তম উইকেটে ৬৪ ও অক্ষর প্যাটেলের সঙ্গে অবিচ্ছিন্ন অষ্টম উইকেটে ৬৭ রানের জুটি গড়লেন। সেটাই ব্লটিং পেপারের মতো শুষে নিল সাউদি, জেমিসনদের উদ্যম। ১২৬ বলের ইনিংসে মারলেন চারটি চার ও একটি ছক্কা। তবে বউন্ডারির সংখ্যা দিয়ে এই অপরাজিত ৬১ রানের গুরুত্ব মাপলে ভুল হবে। ঘরের মাঠে পরাজয়ের আশঙ্কা কাটিয়ে জয়ের গন্ধ ছড়িয়ে দেওয়াতেই রয়েছে এই ইনিংসের মাহাত্ম্য।

29th     November,   2021
 
 
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ