ডুরান্ড কাপ। ভারতের প্রাচীনতম ফুটবল প্রতিযোগিতা। ১৮৮৮ সালে শুরু। ব্রিটিশ ইন্ডিয়ার প্রাক্তন বিদেশ সচিবের নামে (মোর্টিমার ডুরান্ড) সেনাবাহিনী আয়োজন করে এই টুর্নামেন্ট। শুরু সিমলায়। মাঝে নয়াদিল্লিতে দীর্ঘদিন বসেছে এই আসর। পরের কয়েক বছর গোয়াতেও হয় ডুরান্ড কাপ। ২০১৯ সালের পর এবারও কলকাতায় হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী টুর্নামেন্ট। এবার ১৩০তম সংস্করণ। এই প্রতিযোগিতার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে অনেক ঘটনা। শুধুমাত্র বর্তমানের পাঠকদের জন্য স্মৃতি রোমন্থনে ব্যস্ত প্রাক্তন তারকারা। আজ কলম ধরলেন প্রাক্তন দুর্গপ্রহরী।
তনুময় বসু : সিকিম গভর্নর্স গোল্ড কাপে নজর কেড়েছিলাম। সালটা ১৯৮৫। সিকিম থেকে ফিরে আসার পর মোহন বাগান টিম ডুরান্ড কাপের প্রস্তুতি নিচ্ছে। প্র্যাকটিসে চোট পেলেন প্রথম গোলরক্ষক প্রতাপ ঘোষ। দলে সুযোগ পেয়ে কাজে লাগালাম। ফাইনালে টাই-ব্রেকারে জেসিটি’কে হারালাম ৩-২ গোলে। পেনাল্টি শ্যুট-আউটে শেষ দু’টি শট বাঁচিয়ে হলাম নায়ক। ওদের যশবীর সিং ও চরণজিৎ লালের শট আটকে দিয়েছিলাম। আমাদের গোলদাতা মিহির বসু, জেভিয়ার পায়াস ও সমর ভট্টাচার্য। জেসিটি’র হয়ে গোল করেছিল পারমিন্দর সিং ও পারমার। নির্ধারিত সময় শেষ হয় গোলশূন্যভাবে। সেই পর্বে পারমিন্দর সিংয়ের দু’টি শট অনবদ্য সেভ করে আনন্দ পেয়েছিলাম। একটা ওয়ান-টু-ওয়ান, অন্যটি দূরপাল্লার। আমার দেখা ভারতীয় ফুটবলের অন্যতম সেরা শ্যুটারের নাম পারমিন্দর সিং। কাছাকাছি রাখব কুলজিৎ সিংকে। তবে টেকনিক্যালি সাউন্ড ছিলাম বলে অনেক কঠিন পরিস্থিতি সহজে উতরে গিয়েছি। ডুরান্ড কাপকে ঘিরে আমাদের মতো বাঙালি ফুটবলারদের কাছে অন্য আবেগ ছিল। খেলা শুরু হওয়ার ঘণ্টা দুয়েক আগে থেকে মাঠ ভরে যেত। রাজধানীর বেশিরভাগ বাঙালি মাঠে ভিড় জমাতেন। আর্মিদের শৃঙ্খলা আর বাঙালি আবেগের মিশেলে অন্যরকম পরিবেশ তৈরি হতো। ১৯৮৪ থেকে ৮৬, টানা তিন বছর মোহন বাগানের হয়ে ডুরান্ড কাপ খেলেছি। এরমধ্যে ’৮৪ সালে দ্বিতীয় গোলরক্ষক ছিলাম। পরের দু’বছর চুটিয়ে খেলেছি। টানা তিন বছর চ্যাম্পিয়ন। তবে সবচেয়ে তৃপ্তি পেয়েছিলাম, ১৯৯৪ সালে মোহন বাগানকে ডুরান্ড চ্যাম্পিয়ন করে। সেবার আমি অধিনায়ক। ফাইনালে ইস্ট বেঙ্গলকে ১-০ গোলে হারিয়েছিলাম।