বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
দক্ষিণবঙ্গ
 

খুন হতে পারেন, থানার দ্বারস্থ বৃদ্ধা

নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: পুলিস কনস্টেবল ছেলের হাতেই খুন হওয়ার আশঙ্কা করছেন বৃদ্ধা মা। পাশাপাশি মেয়ে-জামাইয়েরও প্রাণ সংশয় রয়েছে বলে বৃদ্ধার অভিযোগ। ওই ঘটনায় তমলুক শহরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। অভিযোগকারী বৃদ্ধার নাম লক্ষ্মী পট্টনায়েক। বাড়ি তমলুক পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের আবাসবাড়ি চরে। ২৩তারিখ তিনি ছেলে সমীরণ পট্টনায়েক ও বউমা দোলন পট্টনায়েকের বিরুদ্ধে তমলুক থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযুক্ত সমীরণ বাগনান থানায় কনস্টেবল হিসেবে কর্মরত। ছেলের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে গত ১৫মার্চ লক্ষ্মীদেবী একাধিক ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন। তমলুক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার পর অবশ্য প্রাণে বেঁচে যান। সম্প্রতি ছেলে তাঁকে বেধড়ক মারধর করার পর প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছেন বলে লক্ষ্মীদেবীর অভিযোগ। ওই বিধবা বৃদ্ধার লিখিত অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু করেছে তমলুক থানার পুলিস।
অভিযোগকারী লক্ষ্মীদেবীর স্বামী গোকুলচন্দ্র পট্টনায়েকও পেশায় পুলিস কর্মী ছিলেন। ২৬বছর আগে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে তিনি মারা যান। তখন ছেলে সমীরণের বয়স ১০বছর। মেয়ে টুম্পার বয়স ১২বছর। কর্মরত অবস্থায় স্বামীর মৃত্যুর পর লক্ষ্মীদেবীকে পুলিসের চাকরির অফার করা হয়। কিন্তু, ছেলের কথা ভেবে তিনি গ্রহণ করেননি। ছেলে সাবালক হওয়ার পর সেই চাকরিতে যোগ দেন। ইদানীং তমলুক শহরে ওই বসতবাড়ি সহ বাস্তুজমি লিখিয়ে দেওয়ার জন্য লাগাতার চাপ দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। তাতে রাজি না হওয়ায় শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার চালানো হচ্ছে। সুগার, থাইরয়েড এবং হার্টের সমস্যায় লক্ষ্মীদেবী শয্যাশায়ী। সর্বক্ষণ দেখাশোনা করার জন্য একজন কেয়ারটেকার আছেন তাঁর।
মা এবং ছেলে-বউমা আলাদা থাকেন। বাড়ির নীচের তলায় অসুস্থ অবস্থায় থাকলেও ছেলে-বউমা দেখভাল করেন না বলে অভিযোগ। মেয়েকে না জানিয়ে যাবতীয় সম্পত্তি রেজিস্ট্রি করে দেওয়ার জন্য নাগাড়ে চাপ দেওয়া হচ্ছে। তাতে রাজি না হওয়ায় অকথ্য অত্যাচার চালানো হচ্ছে বলে লক্ষ্মীদেবীর অভিযোগ। ছেলের চাকরির কথা ভেবে এতদিন মুখ বুজে সব হজম করেছেন বৃদ্ধা মা। কিন্তু, তাঁকে এবং মেয়ে-জামাইকে বধূ নির্যাতনের মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দিতে শেষপর্যন্ত তমলুক থানায় ছেলে-বউমার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জানানোর সিদ্ধান্ত নেন তিনি। এই মুহূর্তে তিনজনই প্রাণসংশয়ে ভুগছেন বলে জানিয়েছেন।
অভিযোগকারী লক্ষ্মীদেবী বলেন, স্বামীর মৃত্যুর পর অনেক কষ্ট করে আমি তমলুক শহরের আবাসবাড়ি এলাকায় বাড়ি তৈরি করেছি। বিয়ের পর থেকেই ছেলে এবং বউমা সেই বাড়ি রেজিস্ট্রি করে দেওয়ার জন্য আমার উপর লাগাতার চাপ তৈরি করছে। আমি নানা রোগে শয্যাশায়ী। ছেলে-বউমা আমাকে দেখভাল করে না। বরং যথেচ্ছ গালিগালাজ করে। শারীরিক নিগ্রহও বাদ যায়নি। তারপর বউমা মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দিচ্ছে। শেষপর্যন্ত আমি তমলুক থানায় গিয়ে ছেলে-বউমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে বাধ্য হয়েছি।
অভিযুক্ত পুলিস কনস্টেবল সমীরণ পট্টনায়েক বলেন, আমার স্ত্রী ও মেয়ের উপর মা অত্যাচার করছেন। আমার স্ত্রীও ফিনাইল খেয়ে আত্মহত্যা করতে যাচ্ছিলেন। কেয়ারটেকার হিসেবে বাড়িতে থাকা ব্যক্তিই এখন মায়ের কাছে প্রিয়। ছেলে-বউমা ও নাতনিকে পর করে দিয়েছেন। তমলুক থানার আইসি শান্তনু মণ্ডল বলেন, লক্ষ্মীদেবীর অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। 

26th     September,   2023
 
 
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ