বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
দক্ষিণবঙ্গ
 

মহারাজের এটিএম কার্ড হাতিয়ে ৯০ হাজার নিয়ে চম্পট শিষ্যের

সংবাদদাতা, বিষ্ণুপুর: অতি ভক্তি চোরের লক্ষণ! এটা শুধু যে কথার কথা নয়, তা আবারও প্রমাণিত হল। ঘনঘন গুরু প্রণাম। দই, মিষ্টি কিনে এনে খাওয়ানো সবটাই হয়েছিল কোতুলপুরের একটি আশ্রমের মহারাজকে। এমনকী আশ্রমকে দিয়েছিল পাঁচ হাজার টাকা ডোনেশনও। কিন্তু, এই গুরুভক্তির সবটাই যে তাঁর টাকাতেই হচ্ছে, তা মহারাজ বুঝতে পারেননি। যখন বুঝতে পারেন, তখন পেশায় নৃত্যশিল্পী পার্থ আদক পগাড় পাড়। মহারাজের এটিএম হাতিয়ে নিয়ে ৯০ হাজার টাকা তুলে সে চম্পট দেয়। তবে শেষরক্ষা হয়নি। পুলিসের পাতা ফাঁদে সে ধরা পড়ে। নাচের স্কুলের শিক্ষক হওয়ার টোপ দিয়ে ডেকে এনে রবিবার রাতে পার্থকে কোতুলপুর থানার পুলিস গ্রেপ্তার করে। পুলিস জানিয়েছে, তাকে জেরা করে সে আরও কোনও প্রতারণার সঙ্গে জড়িত কি না তা জানার চেষ্টা চলছে।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, কোতুলপুরের ওই আশ্রমে কয়েকদিন আগে পার্থ আসে। বিভিন্ন আশ্রমের নামী মহারাজদের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা আছে বলে জানায়। আধাত্মিকতার প্রতি প্রবল ঝোঁক দেখে মহারাজ তাকে আশ্রমে আশ্রয় দেন। এরপর পার্থ মহারাজকে জানায়, তার বাবা সরকারি চাকরি করেন। তিনি আশ্রমে মোটা টাকা ডোনেশন দিতে চান। সে নিজেও কিছু টাকা ডোনেশন দেওয়ার কথা বলে। তার জন্য মহারাজের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর চায়। মোবাইলে অনলাইন পেমেন্ট করার জন্য এটিএম কার্ডের পিন নম্বর জেনে নেয়। ওই সময় মহারাজ অল্পসময়ের জন্য বাথরুমে গেলে সে সযোগ বুঝে এটিএম কার্ডটি পকেটে ঢুকিয়ে নেয়। তারপর মহারাজের জন্য দই মিষ্টি আনার নাম করে কোতুলপুরে যায়। সেখানে ৪০হাজার টাকা তুলে আশ্রমে ফিরে আসে। মহারাজের জন্য দই, মিষ্টি নিয়ে আসে। আশ্রমকে পাঁচ হাজার টাকা ডোনেশন দেয়। পরের দিন ভোরে মহারাজকে না জানিয়েই সে আশ্রম থেকে চম্পট দেয়। তারপর সে জয়রামবাটিতে গিয়ে আরও ৩০হাজার টাকা তুলে নেয়। এছাড়াও ওইদিনই আরামবাগের একটি দোকান থেকে ২৪হাজার ৪০০টাকা দামের মোবাইল কেনে। তার বিলও এটিএম কার্ডে মেটায়। টাকা তোলার মেসেজ মহারাজের মোবাইলে আসে। সন্দেহ হওয়ায় মহারাজ আশ্রমের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখেন। তাতে পার্থকে এটিএম কার্ডটি পকেটে ঢোকাতে দেখা যায়। এরপরেই মহারাজ পুলিসের দ্বারস্থ হন। ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিস মহারাজের এক পরিচিত পুলিস কর্মীর সহযোগিতায় খোঁজ নিয়ে জানতে পারে, পার্থর বাড়ি আরামবাগের পুড়শুড়ায়। সে সাধারণ নিম্নবিত্ত পরিবারের ছেলে। শাস্ত্রীয় নৃত্য শিল্পী হলেও ওই বিষয়ে তার কোনও ডক্টরেট ডিগ্রি নেই। এরপর পুলিস তাকে শ্রীরামপুরে নাচের স্কুলে মোটা মাইনের চাকরির টোপ দিয়ে বর্ধমানের কেশবপুর এলাকায় ডেকে পাঠায়। সেই টোপ গিলেই পার্থ পুলিসের জালে ধরা পড়ে।
মহারাজ বলেন, পার্থ আমার আশ্রমে দু’দিন ছিল। সে হুগলির হরিপালের বাসুদেবপুরের বাসিন্দা বলে নিজের পরিচয় দিয়েছিল। সে ওড়িশি নৃত্যে ডক্টরেট করেছে বলে জানিয়েছিল। তার স্বপক্ষে নৃত্যের কিছু ভিডিও দেখায়। বিভিন্ন আশ্রমের নামী মহারাজদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা আছে বলায় সন্দেহ হয়নি। আমাকে বেশ সম্মান জানাচ্ছিল। ঘন ঘন প্রণাম করছিল। তাছাড়া এই বয়সে ওর গুরুভক্তি দেখে আমি ওকে সহজেই বিশ্বাস করেছিলাম। কিন্তু, অতি ভক্তি যে চোরের লক্ষণ, তা বুঝতে পারিনি।

26th     September,   2023
 
 
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ