বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
দক্ষিণবঙ্গ
 

বোঝা নয়, আসল দেবতা মা-বাবাই, বর্তমান প্রজন্মকে
বার্তা দিতে মূর্তি গড়ে পুজো বর্ধমানের প্রাক্তন ব্যাঙ্ককর্মীর

নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: এই মন্দিরের দেবতা বাবা-মা। এখানে পুরোহিত যোগ্য ছেলে। এই মন্দিরে পুজোর মন্ত্র ‘পিতা স্বর্গ, পিতা ধর্ম, পিতাহি পরমং তপ’। মায়ের উদ্দেশ্যেও এমনই মন্ত্র জপ করা হয় এই মন্দিরে। সিকিমে গিয়ে ‘বাবা মন্দির’ দর্শন করে এসেছেন অনেকেই। কিন্তু ‘বাবা-মা’ মন্দির চাক্ষুষ করতে হলে আসতে হবে বর্ধমান শহরের কানাইনাটশালে। এখানেই অবসরপ্রাপ্ত ব্যাঙ্ককর্মী মন্দির তৈরি করে নিজের বাবা ও মায়ের মূর্তি বসিয়েছেন। রোজ সকাল, সন্ধ্যা নিয়ম করে পিতা-মাতার পুজো করেন। বাস্তবের মাটিতে বাবা-মা আসল দেবতা। তাঁদের উপরে আর কেউ নয়। তাই  শেষ বয়সে তাঁদের বৃদ্ধাশ্রমে না পাঠিয়ে বাড়িতে দেবতা রূপে রাখা হোক। নতুন প্রজন্মকে এমনই বার্তা দিতে অবসরপ্রাপ্ত ওই ব্যাঙ্ককর্মী এমন মন্দির তৈরি করেছেন। তিনি এখানেই থেমে নেই। বাবা-মায়ের স্মৃতির উদ্দেশে দাতব্য চিকিৎসালয় তৈরি করেছেন। দুঃস্থ মেধাবীদেরও পাশে দাঁড়াচ্ছেন। 
মন্দিরের পাশে দাঁড়িয়ে কামিনীকান্তি বিশ্বাস বলেন, ব্যাঙ্কের চাকরিতে যোগ দেওয়ার তিনদিন পরেই বাবা কালীচরণ বিশ্বাস মারা যান। সেটা ১৯৮১ সাল। বাবার হাড়ভাঙা পরিশ্রমের জন্যই প্রতিষ্ঠিত হতে পেরেছিলাম। মা সরোজিনী বিশ্বাস ২০০৯ সালে মারা যান। তাঁর আত্মত্যাগও আমাকে প্রতিষ্ঠা পেতে সাহায্য করেছিল। তাঁরা ঈশ্বর ছাড়া আর কী হতে পারে! ভগবানকে চোখে দেখা যায় না। ভগবান রূপে মা-বাবা বাড়িতে থাকেন। তাঁদের খোঁজখবর না রেখে অনেকেই মন্দিরে যান। তাতে পুণ্য হয় না। বাবা-মায়ের সেবা করলেই সবকিছু পাওয়া যায়। কামিনীবাবুর এক ছেলে ও এক মেয়ে। তাঁরা দু’জনেই প্রতিষ্ঠিত। একজন নামী আইটি সংস্থায় কাজ করেন। অন্যজন কর্পোরেট সংস্থায় রয়েছেন। তাঁরাও বাবার এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। অবসরপ্রাপ্ত ওই ব্যাঙ্ককর্মী বলেন, নতুন প্রজন্মের অনেকের কাছেই শেষ বয়সে বাবা-মায়ের গুরুত্ব থাকে না। তাঁদের বৃদ্ধাশ্রমে পাঠিয়ে দায় সারছেন। অনেকে আবার তাঁদের খোঁজখবর রাখেন না। তাঁদের উদ্দেশেও এই মন্দির তৈরি করা হয়েছে। এলাকার অনেকেই এই মন্দিরে আসেন। এক দোল পূর্ণিমার দিনে অভিনব এই মন্দিরের উদ্বোধন হয়েছিল। মন্দিরে বাবা-মায়ের মূর্তি দেখে অনেকেই ওই ব্যাঙ্ককর্মীর তারিফ করেছেন। জীবিত অবস্থাতেও পিতা-মাতাকে ঈশ্বরের আসনে বসিয়ে সেবা করা উচিত বলে ওই ব্যাঙ্ককর্মী মনে করেন। অনেকেই বলছেন, সবার বাড়িতে এমন ছেলে থাকলে হয়তো এত বৃদ্ধাশ্রম তৈরি হতো না। গুনগুনিয়ে কোনও বৃদ্ধ বা বৃদ্ধাকে বলতে হতো না, ‘স্বামী-স্ত্রী আর অ্যালসেসিয়ান, জায়গা বড় কম। আমার ঠিকানা তাই বৃদ্ধাশ্রম’।  বাবা-মায়ের মূর্তিতে পুজো করছেন কামিনীকান্তি বিশ্বাস।-নিজস্ব চিত্র

9th     June,   2023
 
 
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ