বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
দক্ষিণবঙ্গ
 

একশো দিনের কাজ বন্ধ, নেই রোজগার
জঙ্গল থেকে শালবীজ সংগ্রহ
করে সংসার চালাচ্ছেন মহিলারা

সংবাদদাতা, ঝাড়গ্রাম: অভাবের তাড়নায় এই কাঠফাটা রোদেও ঝাড়গ্রামের বিভিন্ন জঙ্গলে শালবীজ সংগ্রহ করছেন লাগোয়া গ্রামের মহিলারা। কেন্দ্রীয় সরকারের ১০০ দিনের প্রকল্পের কাজ বন্ধ। রুজি রোজগার লাটে উঠেছে। জঙ্গলের শালবীজ সংগ্রহ করে তা পরিষ্কার করে মহাজনদের কাছে বিক্রি করলে প্রতি কেজিতে মিলছে ১০ থেকে ১২ টাকা। এক একটি পরিবার সারদিনে প্রায় ৪০০ টাকার বীজ সংগ্রহ করছেন। এলাকার বিভিন্ন মহাজন তা কিনে পার্শ্ববর্তী ওড়িশা ও ছত্তিশগড় রাজ্যে বিক্রি করছেন। শালবীজ থেকে  উৎপাদিত তেল যন্ত্রপাতি চালানোর জন্য, সাবান ফ্যাক্টরি ও কসমেটিক ফ্যাক্টরিগুলিতে প্রয়োজন  হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গিয়েছে, ডব্লিউবিটিডিসিসি দপ্তর থেকে ঝাড়গ্রামের বিভিন্ন ল্যাম্পসে ২০১৯ সালে শালবীজ ক্রয় করা হয়েছিল। এ বছরও পার্শ্ববর্তী ওড়িশা ও ছত্তিশগড় রাজ্যের সঙ্গে শালবীজ সরবরাহের জন্য বিভাগীয় দপ্তর থেকে কথা বলা হয়েছিল। পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলি থেকে সেই অর্থে সাড়া পাওয়া যায়নি। মঙ্গলবার ভর দুপুরে ঝাড়গ্রাম শহর থেকে ঢিল ছাড়া দূরত্বে ধরমপুর জঙ্গলে গিয়ে দেখা গেল, সেখানে কিছু আদিবাসী মানুষ শালবীজ সংগ্রহ করে তা পরিষ্কার করছেন। জঙ্গলের পাশের রাজ কলেজ কলোনির বাসিন্দা গোপাল মল্লিক ও পাহাড়ী মল্লিক সহ অন্যান্য মহিলারা ধরমপুর জঙ্গলে শালবীজ সংগ্রহ করছেন। তারা বলেন, আমরা সারাদিনে ৪০ কেজি মতো বীজ সংগ্রহ করছি। মহাজনরা ১০ টাকা কেজি দরে এই বীজ কিনে নিয়ে যাচ্ছে। ১০০ দিনের কাজ তো বন্ধ। রুজি রোজগারের কোনও উপায় নেই। জঙ্গলের খানিকটা দূরে গিয়ে দেখা গেল জামবনীর কেঁন্দুয়া গ্রাম থেকে সুমিত্রা রানা, রঙ্গবতী মাহাত, মালতি মাহাতরা দল বেঁধে ধরমপুর জঙ্গলে শালবীজ সংগ্রহ করতে এসেছেন। মহিলাদের কথায়, আমাদের কেঁন্দুয়ার জঙ্গলে হাতির উপদ্রব রয়েছে। সেখানে আমরা শালবীজ সংগ্রহ করতে পারছি না। তাই এতদূরের জঙ্গলে এসেছি। মহাজন গ্রামে এসে প্রতি কেজি ১০-১২ টাকা দরে কিনে নিয়ে যাবে। কী করব ১০০ দিনের কাজ বন্ধ, রুজি রোজগারের উপায় নেই। ঝাড়গ্রাম ল্যাম্পস (লার্জ সাইজড মাল্টিপারপাস কো অপারেটিভ)-এর দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যানেজার মোহন টুডু বলেন, আসলে এ বছর ডব্লিউবিটিডিসিসি লিমিটেড (ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রাইবাল ডেভেলপমেন্ট কো অপারেটিভ লিমিটড) থেকে শালবীজ সংগ্রহ করার অনুমতি আমরা পাইনি। ২০১৯ সালে আমরা ল্যাম্পস থেকে এলাকায় এই বীজ সংগ্রহ করেছিলাম। এলাকার বাসিন্দারা তা সংগ্রহ করে হয়তো পার্শ্ববর্তী অন্যান্য রাজ্যের মহাজনদের কাছে বিক্রি করছেন। কেন না তা থেকে মেশিনারি চালানোর জন্য  তৈল উৎপাদিত হয়। আমাদের এই রাজ্যে সেই পরিকাঠামো নেই। এই নিয়ে ডব্লিউবিটিডিসিসির ঝাড়গ্রামের রিজিওনাল ম্যানেজার বর্ষারানি বসু বলেন,  আমাদের বিভাগীয় দপ্তর থেকে এবছর শালবীজ সংগ্রহ করা হচ্ছে না। ২০১৯ সালে এমনকী গত বছরেও আমারা কিছু শালবীজ নিয়েছিলাম। দেখা গিয়েছে তা কেনার মতো লোক পাওয়া যায় না। কসমেটিকস ইন্ডাস্ট্রিতে এই বীজের তেলের চাহিদা আছে। তা উৎপাদন হয় ছত্তিশগড়ে। ওই রাজ্যগুলিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে শালবীজ পাওয়া যাচ্ছে। তাই তারা কেনার আগ্রহ দেখায়নি। কেঁন্দুয়া গ্রামের বাসিন্দা দুবরাজ মাহাত বলেন, আমাদের গ্রামের অনেকেই শালবীজ সংগ্রহ করছেন। মহাজনরা গ্রাম থেকে বীজ কিনে নিয়ে যাচ্ছে।  নিজস্ব চিত্র

2nd     June,   2023
 
 
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ