বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
দক্ষিণবঙ্গ
 

হারিয়ে যাচ্ছে টিনের ট্রাঙ্ক ও সুটকেস
নবদ্বীপে চরম আর্থিক সঙ্কটে কারিগররা

সমীর সাহা, নবদ্বীপ: আধুনিকতার সঙ্গে তাল মেলাতে না পেরে হারিয়ে যাচ্ছে টিনের ট্রাঙ্ক ও টিনের সুটকেস। বাজারে এসে গিয়েছে অত্যাধুনিক স্টিল ও প্লাইউডের আলমারি, ফাইবার বা কাপড়ের হাল্কা ট্রলি ব্যাগ। সেইসঙ্গে ট্রলি ব্যাগে লাগানো থাকছে চাকা। ফলে, পরিবহণযোগ্য হওয়ায় ফাইবারের সুটকেসের, ট্রলি ব্যাগের চাহিদা বাড়ছে। তুলনায় অনেকটাই কমছে টিনের ট্রাঙ্কের বাজার। বিক্রি কমে যাওয়ায় চরম আর্থিক সঙ্কটের মধ্যে দিন কাটছে নবদ্বীপের টিনের বাক্স তৈরির কারিগরদের।
তবুও সংসার চালাতে পুরনো পেশাকে আঁকড়ে ধরেই বাঁচতে চাইছেন সেখানকার ট্রাঙ্ক ও সুটকেস কারিগরেরা। কলকাতা থেকে টিনের সিট আনিয়ে  নিয়ে চলছে ট্রাঙ্ক তৈরির কাজ। তৈরির পর বিক্রির জন্য সেগুলি ছড়িয়ে পড়ছে নবদ্বীপ সহ পার্শ্ববর্তী পূর্ব বর্ধমান জেলার কালনা, কাটোয়া, ধাত্রীগ্রাম, নাদনঘাট সহ বিস্তীর্ণ এলাকায়। একটা সময় নবদ্বীপের একটি দোকান থেকে যেখানে বিক্রি হতো দিনে ১২ থেকে ১৪টি টিনের ট্রাঙ্ক, সেখানে এখন প্রতিদিন বিক্রি হচ্ছে একটি থেকে দু’টি। ফলে, কারিগররা ট্রাঙ্ক তৈরির অর্ডার পাচ্ছেন কম। উৎপাদন কম, তাই রোজগারও কমেছে কারিগরদের। আগে যেখানে সারা দিনে ১২ ঘণ্টা পরিশ্রম করে পাঁচ থেকে ছ’শো টাকা রোজগার হতো, এখন সেটা এসে দাঁড়িয়েছে মাত্র দু’শো থেকে আড়াইশো টাকায়। 
বাড়ির জরুরি জিনিসপত্র নিরাপদে রাখার জন্য সাধারণ মানুষের প্রধান ভরসা ছিল টিনের ট্রাঙ্ক। বাজার রোডের ব্যবসায়ী প্রবীরকুমার দত্ত বলেন, পোকামাকড়, ইঁদুরের হাত থেকে বাঁচতে এখনও টিনের ট্রাঙ্কের জুড়ি মেলা ভার। কিন্তু এই আধুনিক সময়ে মানুষ চাইছেন কম খরচে বেশি সুবিধা। তাই তাঁরা বেশি ঝুঁকছেন ফাইবারের ট্রলি ব্যাগের দিকে। 
নবদ্বীপ বরিশালপাড়ার কারখানা দিলীপ দেবনাথের। তিনি বলেন, ৪০ বছর ধরে এই কাজ করছি। আগে বিয়েতেও মানুষ এই ট্রাঙ্ক যৌতুক হিসাবে দিতেন।  এখন অনেকে লেপ, তোষক রাখার জন্য কিনে নিয়ে যান। ট্রাঙ্ক তৈরির টিনের প্লেন সিটের দাম অনেক বেড়ে গিয়েছে। ফলে টিনের ট্রাঙ্ক, সুটকেসের তৈরির খরচ বেড়ে গিয়ে চারগুণ দাম হয়েছে। এখন বছরের মাঘ থেকে বৈশাখ এই চার মাস কাজ হয়।
প্রতাপনগরের বাসিন্দা অরবিন্দ পাল বলেন, বিকল্প কোনও কাজ না থাকায় আমরা কম মজুরিতে এই টিনের ট্রাঙ্ক বানাতে বাধ্য হচ্ছি। লকডাউনের পর থেকে বাজারের পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে।  চরমাজদিয়া পূর্বপাড়ার বাসিন্দা রণজিৎ বর্মণ বলেন, প্রায় ৪০ বছর ধরে এই কাজের সঙ্গে যুক্ত। বর্তমানে পরিবার নিয়ে খুব আর্থিক কষ্টের মধ্যে চলছে। একারণে আগামী প্রজন্ম টিনের ট্রাঙ্ক তৈরির কলাকৌশল শিখতে চাইছে না। সময়ের নিয়মে হারিয়ে যেতে বসেছে আরও এক শিল্প। চটিরমাঠ তৃতীয় লেনের বাসিন্দা বাবু সাহা বলেন,  এখন বাজারের পরিস্থিতি খুব খারাপ। সারা বছর কাজ থাকে না। তবুও বিকল্প কোনও আয়ের পথ নেই। সরকার যদি আর্থিকভাবে সাহায্য করেন, তবে এই শিল্পকে বাঁচানো সম্ভব।
 প্রতীকী চিত্র

6th     February,   2023
 
 
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ