বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
দক্ষিণবঙ্গ
 

মনসার পুজো ঘিরে বলরামপুরে
শুরু হল সয়লা মেলা ও উৎসব

নিজস্ব প্রতিনিধি, আরামবাগ: আরামবাগের বলরামপুরে শুরু হল সয়লা মেলা ও উৎসব। মা মনসার ‘মারিভয়’ পুজো ঘিরে হয় এই উৎসব। যা প্রতি ১২ বছর অন্তর হয়। উৎসবে মান অভিমান ভুলে গ্ৰামবাসীরা একে অপরের সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতায়।
গ্ৰামবাসীদের বিশ্বাস দেবী তাঁদের রক্ষা করেন। দেবীকে স্মরণ করে বাসিন্দারা গ্ৰাম থেকে বের হন। দীর্ঘ এই পরম্পরা আজও বয়ে চলছে মায়াপুর-১ পঞ্চায়েতের বলরামপুর গ্ৰামে। ১২ বছর পর মায়ের মৃন্ময়ী মূর্তি নতুন করে গড়া হয়। সেই পুজো ঘিরে সয়লা উৎসবে গ্ৰামের মেয়েরা সই এবং ছেলেরা পাতায় স্যাঙাত। রবিবার নতুন মন্দির স্থাপন করে শুরু হল বলরামপুর মনসামাতা ঠাকুরানির ‘সয়লা’ মেলা ও উৎসব। ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এই এই উৎসব চলবে। মন্দিরে মায়ের প্রাণ প্রতিষ্ঠা হল যজ্ঞ ও ধর্মীয় প্রথা রীতি মেনে। পুজো উপলক্ষে আশেপাশের গ্ৰামের বহু মানুষ এদিন ভিড় করেন। নতুন মন্দির ভবনের পাশেই প্রতিষ্ঠা করা হয় শিবলিঙ্গের। ২৯ মাঘ পর্যন্ত হবে পালা গান। আগামী ১৩ তারিখ থেকে শুরু হবে সয়লা উৎসব। প্রাণের এই উৎসব ঘিরে গ্ৰামবাসীরা একে অপরের সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতাবেন। বাউল, কীর্তনের সঙ্গে নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। বসবে মেলাও।
অধ্যাপক তারাপদ ঘোষ বলেন, বিদেশ থেকে ছুটে এসেছি গ্ৰামের এই উৎসবে যোগ দিতে। গ্ৰামের এই সয়লা উৎসব কয়েক শত বছর ধরে চলে আসছে। এই এলাকা ছিল একসময় সর্পসঙ্কুল ও অন্তজ বাসিন্দাদের বসবাস। গ্ৰামবাসীরা আজও বিশ্বাস করেন দেবী সব বিপদ থেকে রক্ষা করেন। মনসামঙ্গলকাব্যে মা মনসা ও চাঁদ সদাগরের যে লড়াই ও মিলনের কথা পাই, তার অন্তরাল স্মৃতি বোধ হয় এই সয়লা উৎসবে মধ্যে রয়ে গিয়েছে। এক দশকের মান অভিমান ভুলে সই-স্যাঙাতের মিলন উৎসব দীর্ঘদিন ধরেই গ্ৰামে হয়ে চলেছে।
সয়লা মেলা ও উৎসব কমিটির সভাপতি তপন মণ্ডল বলেন, এই সয়লা উৎসব ১২ বছর অন্তর হয়। করোনা মহামারীর কারণে ১৬ বছর পর এই উৎসব হচ্ছে। নতুন করে মন্দির নির্মাণ করে এদিন মায়ের প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা হল। প্রথমে এই মন্দির মাটির ছিল। পরে শ্যামপদ ঘোষ, মোহনচন্দ্র নায়েক, সন্তোষ মণ্ডল, শঙ্করীকান্ত মণ্ডল সহ গ্ৰামের একাধিক ব্যক্তি নিজ পরিশ্রমে একটি ইটের মন্দির তৈরি করেন। সেই মন্দির ভগ্ন হয়ে যাওয়ায় নতুন করে এই মন্দির স্থাপন করা হল। তারাপদ ঘোষ, সনৎ ঘোষ সহ অন্যান্যরা সহযোগিতা করেন। মারিভয় পুজোর প্রধান অঙ্গ গ্ৰামবাবাসীরা সব মান অভিমান ভুলে বন্ধুত্ব পাতানোর সয়লা উৎসব করব।
কমিটির অন্যতম সদস্য প্রতিভা ভট্টাচার্য বলেন, এই উৎসব পালনের জন্য আমরা ১২ বছর অপেক্ষা করি। ১৩দিন ধরে আমরা উৎসব পালন করি। এবার উৎসবে সাঁতালি পর্বত ও লখিন্দরের সর্প দংশন থিম করা হয়েছে। সাঁতালি পর্বতে ছিল বেহুলা-লখিন্দরের বাসর ঘর। সেটাকেই তুলে ধরা হয়েছে।
রাজহাটি এলাকার বাসিন্দা করবী রায় বলেন, প্রায় একদশক পর এই উৎসব হয়। ভক্তিভরে এদিন মায়ের পুজো দিলাম। আমাদের বিশ্বাস, দেবী আমাদের বিপদে আপদে রক্ষা করবেন। বলরামপুর গ্ৰামের বাসিন্দা দুলাল মালিক বলেন, দেবী আমাদের খুব জাগ্ৰত। তাঁকে প্রণাম না করে গ্ৰাম থেকে বের হয় না।

6th     February,   2023
 
 
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ