বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
দক্ষিণবঙ্গ
 

বাসুদেবপুরের জঙ্গলে
তিনজনের ঝুলন্ত দেহ
বিষ্ণুপুরে শোরগোল, তদন্তে পুলিস

সংবাদদাতা, বিষ্ণুপুর: রবিবার সকালে বিষ্ণুপুরের বাসুদেবপুরের জঙ্গলে পৃথক দু’টি জায়গায় তিনজনের ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়ায়। প্রথমে বাসুদেবপুরের বিরসা মুণ্ডা হল্ট স্টেশন এলাকায় একই শাড়িতে যুগলের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। মৃতদের নাম অসিত লায়েক(৩০) ও মামনি লায়েক(২৬)। অসিতের বাড়ি তালডাংরা থানার ধডাঙা গ্রামে। মামনির বাড়ি ওন্দা থানার পুঞ্চা গ্রামে। দু’জনেই বিবাহিত। তাঁদের মধ্যে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক ছিল বলে বাসিন্দাদের। ওই ঘটনার কিছুক্ষণ পরই দু’কিলোমিটার দূরে জঙ্গলের মধ্যে পিচরাস্তার ধারে প্রদীপ লাহা(৩৪) নামে এক যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। তাঁর বাড়ি পাত্রসায়র থানার আখড়াশাল গ্রামে। মৃতের পরিবারের দাবি, স্ত্রীর বিবাহিতবহির্ভূত সম্পর্কের কারণে সংসারে অশান্তি চলছিল। পুলিসকে উপযুক্ত তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে।
পুলিস জানিয়েছে, এদিন জঙ্গলে ছাতু কুড়তে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা যুগলের মৃতদেহ দেখতে পান। এছাড়াও অপর যুবকের ঝুলন্ত দেহ রাস্তায় যাতায়াতকারীদের চোখে পড়ে। তিনজনের মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য বিষ্ণুপুর জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। দু’টি ঘটনাতেই অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করা হয়েছে। 
পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ধডাঙা গ্রামের বাসিন্দা অসিত পেশায় চাষি। বাড়িতে স্ত্রী ও দুই শিশু সন্তান রয়েছে। পুঞ্চার বাসিন্দা মামনির বাড়িতে তাঁর স্বামী ও এক সন্তান রয়েছে। প্রায় দু’বছর ধরে দু’জনের মধ্যে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে ওঠে বলে এলাকাবাসীর দাবি। সম্প্রতি তাঁরা দু’জনে সংসার পাতার স্বপ্ন দেখেন। সেই উদ্দেশ্যে গত সোমবার মামনি স্বামীকে ছেড়ে অসিতের বাড়িতে চলে আসেন। অসিতের স্ত্রী এনিয়ে আপত্তি জানান। ঘটনার কথা গ্রামের লোকজনদের বলেন। খবর পেয়ে পুলিসও আসে। তবে যেহেতু দু’জনেই বিবাহিত তাই গ্রামের সালিশি সভায় মামনিকে ফিরে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।  চাপে পড়ে মামনি ওইদিনকার মতো ফিরে যান। কিন্তু, সংসার পাততে না পারায় মামনি ও অসিত দু’জনে শনিবার বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। সাইকেলে করে তাঁরা বিষ্ণুপুরের বাসুদেবপুর জঙ্গলে যান। সেখানে যুগলে আত্মঘাতী হন। স্থানীয় বাসিন্দা তথা সিভিক ভলান্টিয়ার প্রসেনজিৎ পাত্র বলেন, কয়েকদিন আগে ওই মহিলা গ্রামে এলে গ্রামবাসীরা মীমাংসা করে তাঁকে স্বামীর কাছে ফিরিয়ে দেন। এদিন দু’জনের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়।
আখড়াশালের বাসিন্দা প্রদীপের সংসারে অশান্তি চলছিল। যে কারণে তাঁর স্ত্রী একাধিকবার বাপেরবাড়ি চলে যান। শনিবার প্রদীপ তাঁর স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে গড়বেতার গিলাবনী গ্রামে শ্বশুরবাড়ি যান। রবিবার ভোরে ফেরার পথে বাসুদেবপুরের জঙ্গলে গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার হয়। গাছের পাশে তাঁর বাইকটিও দাঁড় করানো ছিল। তবে যেভাবে প্রদীপের মৃতদেহ মাটিতে হাঁটু মোড়া অবস্থায় উদ্ধার হয়েছে তাতে তাঁকে খুন করা হয়েছে বলে মনে করছেন পরিবারের লোকজন। 
প্রদীপের দাদা শ্যামাপদ লাহা বলেন, ১০ বছর আগে ভাইয়ের বিয়ে হয়। তাদের ন’বছরের একটি ছেলে করেছে। ভাইয়ের স্ত্রী একাধিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছিল। এনিয়ে সংসারে তুমুল অশান্তি হয়। আমরা তাকে অনেকবার বুঝিয়েছি। তবু সে কথা শোনেনি। এমনকী বাপেরবাড়ির লোকজনদের দিয়ে ভাইকে মার খাইয়েছে। অপমান সত্ত্বেও ভাই সংসার ভাঙতে চায়নি। তাই ও আত্মহত্যা করেছে বলে আমরা মানতে পারছি না। পুলিসের কাছে উপযুক্ত তদন্তের আর্জি জানিয়েছি।

15th     August,   2022
 
 
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ