বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
দক্ষিণবঙ্গ
 

স্বামীজির বাণীকে পাথেয় করে এগিয়ে
চলেছে জিয়াগঞ্জের হাতিবাগান সর্বজনীন

আনন্দ সাহা, লালবাগ: স্বামীজির ‘জীব সেবাই শিব সেবা’ বাণীকে পাথেয় করে ৮৫ বছর ধরে মানবসেবার কাজ করে চলেছে জিয়াগঞ্জ শহরের হাতিবাগান সর্বজনীন দুর্গাপুজো কমিটি। দুর্যোগ বা গভীর রাত, যে কোনও প্রয়োজনে বা বিপদের দিনে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন পুজো কমিটির সদস্যরা। স্বাভাবিকভাবে জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ পুরসভার পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী এলাকার মানুষের আপদে-বিপদে ভরসার নাম হাতিবাগান সর্বজনীন। ৮৫ বছর আগে জিয়াগঞ্জ শহরের হাতিবাগান এলাকায় সর্বজনীন দুর্গাপুজো কমিটির মোড়কে ক্লাবের প্রতিষ্ঠা হয়। বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজোকে কেন্দ্র করে ক্লাবের পথচলা শুরু হলেও প্রথম বছর থেকেই মানুষের সেবা এবং বিভিন্ন সামাজিক কর্মসূচিকে গুরুত্ব দিয়ে আসছেন তাঁরা।
১৯৩৭ সালে অর্থাৎ দেশের স্বাধীনতা লাভের ১০ বছর আগে হাতিবাগান ব্যবসায়ী সমিতি প্রতিষ্ঠা হয়। সুধীররঞ্জন চক্রবর্তী, কালী সিংহ, অম্বরীশ দত্ত, রাধানাথ কর্মকার সহ শহরের বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ীর হাত ধরেই দুর্গাপুজোকে কেন্দ্র করে ব্যবসায়ী সমিতি গঠিত হয়। তাঁদের তত্ত্বাবধানে বেশ কয়েকবছর দুর্গাপুজো পরিচালিত হয়। পরে নাম পরিবর্তন হয়ে হাতিবাগান সর্বজনীন দুর্গাপুজো কমিটি হয়। প্রাচীন রীতি মেনে ক্লাবের নিজস্ব দুর্গা মন্দিরে প্রতিবছর মায়ের আরাধনা হয়। থিমের রমরমার সময়েও হাতিবাগান সর্বজনীনের মাকে দর্শন করতে জেলার বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ জিয়াগঞ্জে আসেন। ডাকের সাজে মৃন্ময়ী মা চিন্ময়ী হয়ে ওঠেন। থিমের প্রতিমা, মণ্ডপ ও আলোকসজ্জাকে উপেক্ষা করে দর্শনার্থীরা মাকে দর্শন করেন। 
পুজোর পাশাপাশি সারা বছর ধরে মানুষের সেবা ও সামাজিক কাজে নিজেদের নিয়োজিত রাখেন পুজো কমিটির সদস্যরা। সহায় সম্বলহীন পরিবারের মৃতদেহ সৎকার, দুঃস্থ কন্যাদায়গ্রস্ত পিতাকে অর্থ সাহায্য, গরিব মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনায় সাহায্যে ঝাঁপিয়ে পড়েন ক্লাবের সদস্য মলয় রায়, অতীন্দ্র চক্রবর্তী, তরুণ রায়, জয়দেব দত্ত, পরমজিৎ সিং, মনোজিৎ  সাহারা। ২০০০ সালের বন্যায় বন্যাদুর্গত কয়েকশো পরিবারকে অর্থ এবং খাবার দিয়ে সাহায্য করা হয়। করোনা মহামারীর সময়ে বিশেষ করে দ্বিতীয় ঢেউয়ে বর্তমান সদস্যরা জীবনকে বাজি রেখে করোনা আক্রান্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। লকডাউনে কর্মহীন প্রায় এক হাজার পরিবারকে খাদ্যসামগ্রী বিলি করা হয়। করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে মাস্ক, স্যানিটাইজার, সাবান বিলি সহ সচেতনতার প্রচার চালানো হয়। আগে স্থানীয় মাঠে ক্রিকেট, ভলিবল নিয়মিত অনুশীলন হতো। বেশ কয়েকবার ক্রিকেট ও ভলিবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হয়। তবে বেশ কয়েক বছর ধরে খেলাধুলো বন্ধ রয়েছে।
দুর্গাপুজো কমিটির প্রধান উদ্যোক্তা তথা ক্লাবের সভাপতি মলয় রায় বলেন, থিমের রমরমার বাজারেও সাবেকি দুর্গাপুজো করে আমরা দর্শনার্থীদের টানতে সক্ষম হয়েছি। আমাদের এখানকার দুর্গাপ্রতিমা দর্শন করতে জিয়াগঞ্জ শহরের পাশাপাশি জেলার বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ আসেন। নবমীর দিনে দেড়-দু’ হাজার মানুষকে পাত পেড়ে ভাত, পাঁচ তরকারি, ছানার ডালনা, পোলাও, চাটনি, বোঁদে খাওয়ানো হয়। দুর্গাপুজো নিয়ে সদস্যরা সপ্তাহখানেক মেতে থাকলেও সারা বছর মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সাহায্য করার চেষ্টা করে থাকি। কোনও মানুষ আমাদের কাছে সাহায্যের জন্য এসে খালি হাতে ফিরে যাননি। 
ক্লাবের সক্রিয় সদস্য অতীন্দ্র চক্রবর্তী বলেন, দুর্গাপুজো কমিটির নামেই ক্লাব। বিভিন্ন সামাজিক কর্মসূচি চলে। মানুষের যে কোনও প্রয়োজনে ডাক পেলেই আমরা হাজির হই। সাধ্যমতো পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করি।

15th     August,   2022
 
 
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ