বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
দক্ষিণবঙ্গ
 

যুবসমাজকে মাঠমুখী করাই লক্ষ্য
ভুবনডাঙা জাগরণী সঙ্ঘের

ইন্দ্রজিৎ রায়, বোলপুর: রবীন্দ্র স্মৃতিবিজড়িত বিশ্বভারতীর সবচেয়ে কাছের গ্রাম ভুবনডাঙা। বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছাকাছি হওয়ায় গ্রামে শিক্ষা, সংস্কৃতিরও উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়ে। পাশাপাশি এলাকার প্রবীণ ব্যক্তিরাও যুবসমাজের মধ্যে শিক্ষা প্রসারের কাজে উদ্যোগ নেন। তবে আর্থিক কারণে এলাকায় হাতেগোনা কয়েকটি দুর্গাপুজোই হতো। ভিন পাড়াগ্রামে গিয়ে বাসিন্দাদের পুজোর আনন্দ উপভোগ করতে হতো। এজন্য আক্ষেপ ছিল স্থানীয় গৃহবধূ ও কচিকাঁচাদের। এই ভাবনা থেকেই প্রায় ৪৫ বছর আগে ১৯৭৭ সালে তৈরি হয় ভুবনডাঙা জাগরণী সঙ্ঘ। বর্তমানে বোলপুর পুরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত এই ক্লাব। ভুবনডাঙা ও সুকান্তপল্লির বেশ কয়েকজন বাসিন্দা এই ক্লাব গড়ে তুলেছিলেন। কালের অমোঘ নিয়মে তাঁরা আজ অনেকেই বেঁচে নেই। কিন্তু তাঁদের স্বপ্নের প্রতিষ্ঠানটি স্বমহিমায় রয়ে গিয়েছে। সেদিনের চারাগাছ আজ রীতিমতো মহীরুহ। 
প্রথম দিকে আশ্রয় বলতে ছিল একটি খড়ের চালের বাড়ি। সেখানেই ক্লাব প্রতিষ্ঠা হয়। পরবর্তীকালে পাড়ার সকলের প্রয়োজনে পাকা বাড়ি তৈরি করা হয়। শুরুর দিকে ধুমধাম করে কালীপুজো ও সরস্বতীপুজোর আয়োজন করা হতো। কিন্তু তখনও এলাকায় দুর্গাপুজো হতো না। এজন্য স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রবল আক্ষেপ ছিল। এরপর জাগরণী সঙ্ঘের উদ্যোগে ১৯৮৯ সালে এলাকায় প্রথমবার দুর্গাপুজোর আয়োজন করা হয়। নব্বই দশক পর্যন্ত ভালো করে প্যান্ডেল খাটিয়ে পুজো হতো। এখন অবশ্য এলাকায় সুদৃশ্য মন্দির তৈরি হয়েছে। রয়েছে নাটমন্দিরও। ক্লাব কর্তাদের দাবি, এই মুহূর্তে বোলপুরের অন্যতম বড় দুর্গামন্দির। এলাকাবাসীকে আর আগের মতো আফশোস করতে হয় না। পুজোর সময় সকল ধর্ম, বর্ণের মানুষের উপস্থিতিতে জমজমাট হয়ে ওঠে মন্দির চত্বর। চারদিন ধরে চলে বিভিন্ন সংস্কৃতি অনুষ্ঠান। সেখানে পাড়ার সবাই অংশগ্রহণ করে।
তবে কেবল পূজার্চনার মধ্যেই নিজেদের সীমাবদ্ধ রাখেনি জাগরণী। বিভিন্ন সামাজিক ও মানবিক কাজেও ঝাঁপিয়ে পড়েন ক্লাবের সদস্যরা। এলাকার মানুষের জন্য বছরের বিভিন্ন সময়ে রক্তদান, দুঃস্থ মানুষের জন্য স্বাস্থ্য শিবিরের আয়োজন করা হয়। ক্লাব সদস্য দীনু দাস বলেন, স্বাধীনতা দিবস, রবীন্দ্র জয়ন্তী, বৃক্ষরোপণ উৎসবও ঘটা করে পালন করা হয়। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় তৈরি নাট্যমঞ্চেই এই সমস্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
ক্লাবের সম্পাদক রাজু থাপা বলেন, বর্তমান প্রজন্মের অনেকেই সারাক্ষণ মোবাইলের নেশায় বুঁদ হয়ে থাকে। এরা আমাদের সমাজের ভবিষ্যৎ। ওদের সঠিক পথ দেখানোই আমাদের নৈতিক দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। সেক্ষেত্রে খেলাধুলোর কোনও বিকল্প নেই। এলাকার যুব সমাজকে এক জায়গায় জড়ো করে ক্রিকেট, ফুটবল, ভলিবলের মতো খেলাগুলোয় পারদর্শী করা হয়েছে। বছরের বিভিন্ন সময় প্রতিযোগিতারও আয়োজন করা হয়। এতে এলাকায় খেলার আকর্ষণও বজায় থাকে।
ক্লবের বর্তমান পরিচালক মণ্ডলীর অন্যতম সদস্য হিসেবে রয়েছেন রমাপদ সরকার, অতুল হাজরা। তাঁরা বলেন, পাড়ার কোনও দুঃস্থ পরিবারের মেয়ের বিয়ের সময় আমরা সাহায্য করি। এছাড়াও গরিব পরিবারের কেউ মারা গেলে ক্লাব সদস্যরা এগিয়ে যান। ৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলারের স্বামী জাহাঙ্গির হোসেন আমাদের পাশে দাঁড়ান। সেইসঙ্গে ৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলার সুকান্ত হাজরার অবদানও অপরিসীম। তাঁরা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন বলেই ক্লাব আরও উন্নতি করছে।

15th     August,   2022
 
 
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ