বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
দক্ষিণবঙ্গ
 

১১ জন খেলোয়াড় পেয়েছেন
সিভিক ভলান্টিয়ারের চাকরি
ভারতী মুদির কোচিংয়ে ফুটবল দেখাচ্ছে স্বপ্ন

রামকুমার আচার্য, ছাতনা: যে রাঁধে সে চুলও বাঁধে। প্রমাণ করছেন ভারতী ও তাঁর মেয়েরা। হাতা, খুন্তি ছেড়ে মৌসুমি, পূজারা এখন পায়ে ফুটবল নিয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন মাঠ। তাঁদের ‘অভিভাবকের’ ভূমিকায় রয়েছেন কোচ ভারতী মুদি। শাড়ি পরেই দিচ্ছেন প্রশিক্ষণ। তাঁর প্রশিক্ষণেই খেলোয়াড়রা কাঁপাচ্ছে জেলা থেকে রাজ্য। ফুটবলের সুবাদেই মিলেছে চাকরিও। ছাতনার দুমদুমিতে গৃহবধূ ভারতী মুদির ফুটবল কোচিং ক্লাব এলাকার মেয়েদের এখন অন্যতম ‘ডেস্টিটেনশন’ হয়ে উঠেছে। স্বপ্ন দেখাচ্ছে ফুটবল। তার টানেই বছর ছয়ের নাবালিকা থেকে ২৩ তরুণী সকাল-বিকেল পৌঁছে যাচ্ছে মাঠে। নির্দিষ্ট ‘গোলে’ পৌঁছতে হবে যে। 
ভারতীদেবী উচ্চ মাধ্যমিক পাশ। ১৯৯০ সালে বিয়ের পর আর মাঠে নামা হয়নি। কিন্তু, মেয়েদের মাধ্যমে নিজের স্বপ্নপূরণ করতে কোচের ভূমিকা নেন। শাড়ি পরেই প্রত্যন্ত গ্রামের পাথুরে মাঠে মেয়েদের শিখিয়েছেন কোথা থেকে শর্ট মারলে বল পৌঁছবে গোলের জালে। তাঁর স্বামী শক্তিপদ মুদি চাকরি করেন। তিনিও ছিলেন ফুটবল মাঠের রেফারি। তাই ফুটবলে আপত্তি ছিল না তাঁরও। নিজের তিন মেয়ে ও এলাকার তরুণীদের নিয়ে টিম গড়ে ছাতনায় চমক লাগিয়েছেন ভারতীদেবী। তবে কাজটা সহজ ছিল না।
সালটা ২০০৯। ভারতী মুদির মেজ মেয়ে তানিয়ার হঠাৎ ইচ্ছা হয় ফুটবল খেলবে। মাকে ইচ্ছের কথা জানিয়েই পার পাননি সেদিনের ১১ বছর বয়সি তানিয়া। মা ভারতী মুদির নির্দেশে বান্ধবীদের ডেকে এনেছিলেন দুমদুমির মাঠে। গড়া হয় দল। তবে তা টিকবে কি না, সংশয় ছিল। তাই কয়েক মাস শুধু শরীর চর্চার মধ্যেই এলাকার মেয়েদের ডুবিয়ে রেখেছিলেন ভারতীদেবী। তারপর আস্থা ফিরতেই মেয়েদের হাতে তুলে দেন জার্সি, বুট। ধীরে ধীরে আসতে থাকে সাফল্য। ইতিমধ্যেই ভারতীদেবীর দুই মেয়ে কেয়া, তানিয়া জাতীয় স্তরে খেলার সুযোগ পেয়েছেন। টিমের অন্য মেয়েরাও রাজ্য, জাতীয় স্তরের মাঠ মাতিয়ে দিয়ে এসেছেন। তবে শাড়ি পরে কোচকে দেখে অনেকে ভ্রু কুঁচকে ছিলেন। সাফল্য এনে তার জবাব দিয়েছেন ছিপছিপে চেহারার ভারতী। ২০১৯ সালে বাঁকুড়া স্টেডিয়ামে সৈকত কাপে অংশ নিয়ে ভারতীদেবীর দুমদুমি ফুটবল ক্লাব চ্যাম্পিয়ন হয়। সেই দলের ১১ জন সদস্য ২০২১ সালে সিভিক ভলান্টিয়ারের কাজ পান। ছাতনা থানাতেই তাঁরা কাজে যোগ দেন। সেই দলে ভারতীদেবীর মেজ মেয়ে তানিয়া যেমন রয়েছেন, তেমনই কাঠগড়ার রিম্পা সিং সর্দার, সরস্বতী সিং সর্দার বা হাঁসপাহাড়ির পদ্মাবতী কিস্কুরাও রয়েছেন। সিভিক ভলান্টিয়ারের চাকরি পেয়েও অবশ্য তাঁরা ফুটবল ছাড়েননি। ভারতীদেবী বলেন, মেয়েদের শুধু খেলাতেই নয়, সবসময় পড়াশোনাতেও মন দেওয়ার জন্য বলি। টিম একদিন বাড়তে-বাড়তে এমন হবে ভাবিনি। নিজের স্বপ্ন মেয়েদের মাধ্যমে পূরণের চেষ্টা করছি।

26th     May,   2022
 
 
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ