বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
দক্ষিণবঙ্গ
 

রাজ্যপাল, ইলেকশন মাহাত নাম নিয়ে চরম
বিড়ম্বনায় পুরুলিয়ার দুই সিভিক ভলান্টিয়ার

সুকান্ত মাহাত, পুরুলিয়া: শেক্সপিয়র বলেছিলেন, নামে কী এসে যায়! কিন্তু নামে যে অনেককিছুই এসে যায়, তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন পুরুলিয়ার টামনা ও মফস্‌সল থানার দুই সিভিক ভলান্টিয়ার। তাঁদের কথা ভেবেই যেন রবীন্দ্রনাথ লিখে গিয়েছিলেন, ‘নামকে যাঁহারা নামমাত্র মনে করেন আমি তাঁহাদের দলে নই।’ আসলে নাম মানুষের পরিচিতি। তবে এতে নিজের ভূমিকা তেমন থাকে না। বাবা-মা বা গুরুজনরাই জন্মের পর ছেলে-মেয়ের নাম ঠিক করেন। বাড়ির দেওয়া সেই নামই এখন রীতিমতো বিড়ম্বনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে দুই সিভিক ভলান্টিয়ারের। তাঁদের একজনের নাম রাজ্যপাল মাহাত। অন্যজনের নাম ইলেকশন মাহাত। এই নাম নিয়েই তাঁদের শুনতে হয় নানা বিদ্রুপ। কখনওবা ফোনে এই নাম শুনে চমকে যান অপরপ্রান্তের লোকজন। তবে সুবিধাও আছে। এলাকার মানুষ থেকে পুলিস অফিসার, সকলেই তাঁদের এক ডাকে চেনেন। 
পুরুলিয়ার টামনা থানার কড়াডি গ্রামের বাসিন্দা রাজ্যপাল। ছোট বেলাতেই তাঁর বাবার মৃত্যু হয়। বাড়িতে মা ছাড়াও এক ভাই ও বোন রয়েছেন। বর্তমানে টামনা থানাতেই তিনি সিভিক ভলান্টিয়ার পদে কর্মরত রয়েছেন। রাজ্যপাল বলেন, অচেনা কাউকে ফোন করে ‘রাজ্যপাল বলছি’ শুনে অনেকেই আঁতকে ওঠেন। কেউ স্যার বলে ফেলেন। কেউ কেউ আবার মজা করে বলেন, ‘আপনি রাজ্যপাল হলে আমি রাষ্ট্রপতি বলছি।’ পরে তাঁদের বোঝাতে হয় যে, আমার নামই রাজ্যপাল। তিনি আরও বলেন, অনেক আড্ডায়, কখনও আবার থানায় মজা করে আমাকে ডেকে পাঠানো হয়। অফিসার থেকে শুরু করে বন্ধু সহকর্মীরা জিজ্ঞাসা করেন, ‘কী রাজ্যপাল, রাজ্যের কী খবর? বর্তমানে রাজ্য সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক কেমন? সব ঠিকঠাক তো? রাজ্যপাল যা বলছেন তা মন দিয়ে শুনতেই হবে?’ এরকম হাজার রকমের অভিজ্ঞতা হয়েছে নাম নিয়ে। হাসি ঠাট্টার জেরে কখনও কখনও খুব খারাপ লাগে। মনে হয় বাড়িতে কেন এরকম নাম দিল? কিন্তু, বাবা না থাকায় কারণটা জানা হয়নি। তবে কখনও কখনও মনে হয়, এই নামের জন্যই তো এলাকার মানুষ আমাকে এক ডাকে চেনে। তাছাড়া বিড়ম্বনা থাকলেও পরিবর্তন তো আর করতে পারব না। তাই মানিয়ে নিয়েছি। 
পুরুলিয়া মফস্‌সল থানা এলাকার গাড়াফুসরো গ্রামের বাসিন্দা ইলেকশন মাহাতও নামের গেরোয় পড়েছেন। তিনি মফস্‌সল থানার সিভিক ভলান্টিয়ার হলেও বর্তমানে ডিএসপি অফিসে কর্মরত। ইলেকশন বলেন, শুনেছি আমার জন্মের দিনই গ্রামে পঞ্চায়েত ভোট ছিল। তাই বাড়িতে নাম দিয়েছিল ইলেকশন। কাউকে নিজের নাম বল঩লেই চমকে ওঠে। বিশ্বাস করতে চায় না। হাসি ঠাট্টা করে। প্রাথমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে সংস্কৃতে এমএ করা পর্যন্ত সর্বত্র নাম বললেই কেন এই নাম তার বৃত্তান্ত দিতে হয়েছে। তবে সবচেয়ে সমস্যায় পড়েছি আধার কার্ড, প্যান কার্ড, ভোটার কার্ড করাতে গিয়ে। সব ফর্ম ঠিক পূরণ করার পরেও কোনও কার্ডের নামের বানান একবারে ঠিক আসেনি। ইংরেজিতে ইলেকশন বানান লেখার পরই তা পাল্টে দেয়। আবার সংশোধন করতে হয়। বাড়ির দেওয়া নাম তো আর পাল্টানোর উপায় নেই। 
শুধু সিভিক ভলান্টিয়াররাই নন, জেলার বিভিন্ন থানা এলাকায় এমন নাম ছড়িয়ে আছে। পুরুলিয়ার বোরো থানা এলাকার বাসিন্দা অজিতকুমার মাহাতর ছেলের নাম নির্বাচন মাহাত। কয়েকদিন পরেই নির্বাচনের বিয়ে। অজিতবাবু বলেন, ছেলের জন্মের সময় গ্রামে ভোট চলছিল। তাই শখ করে ছেলের নাম রেখেছিলাম নির্বাচন। সেই নামই থেকে গিয়েছে।

26th     May,   2022
 
 
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ