বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
দক্ষিণবঙ্গ
 

নেতাজির স্মৃতিধন্য বাড়ি হেরিটেজ
ঘোষণা করে সংরক্ষণের দাবি উঠল

আনন্দ সাহা, লালবাগ : ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম মুক্তিসূর্য সুভাষচন্দ্রের স্মৃতিবিজড়িত জিয়াগঞ্জের ভট্টপাড়ার অধিকারী বাড়িটি দেখভাল ও পরিচর্যার অভাবে আগাছায় কার্যত ভূতুড়ে বাড়িতে পরিণত হয়েছে। আগাছায় বাড়ির গেট থেকে অন্দরমহলের প্রবেশপথ ঢাকা পড়েছে। সুভাষচন্দ্রের ১২৬তম জন্মদিনের প্রাক্কালে নেতাজির স্মৃতিবিজড়িত অধিকারী বাড়িটি সংরক্ষণের দাবিতে সরব হয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা থেকে শহরবাসী। তাঁদের দাবি, ভারতের স্বাধীনতা যুদ্ধের অন্যতম প্রধান সেনাপতি সুভাষচন্দ্রের স্মৃতিবিজড়িত বাড়িটি হেরিটেজ ঘোষণা করে সংরক্ষণের জন্য সদর্থক পদক্ষেপ গ্রহণ করুক স্থানীয় প্রশাসন ও পুরসভা। এই বিষয়ে শহরবাসী বা অধিকারী পরিবারের পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত লিখিতভাবে কোনও দাবি জানানো হয়নি। দাবি জানালে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হবে বলে পুরসভার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
সুভাষচন্দ্রের স্নেহধন্য ও ঘনিষ্ট সুকুমার অধিকারীর বসতবাড়ি রয়েছে জিয়াগঞ্জের ভট্টপাড়ায়। সুভাষচন্দ্রের স্মৃতিবিজড়িত ভট্টপাড়ার এই বাড়িটি অধিকারী বাড়ি নামে পরিচিত। ১৯২৯ সাল থেকে ১৯৩৯ সাল পর্যন্ত ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ দশ বছরে জিয়াগঞ্জ শহরের ওই বাড়িতে চারবার এসেছিলেন সুভাষচন্দ্র। প্রথমবার ১৯২৯সালে বঙ্গীয় প্রাদেশিক আইনসভার নির্বাচনে কংগ্রেস প্রার্থী তাজবাহাদুর দুগারের হয়ে প্রচার করতে এখানে এসেছিলেন তিনি। প্রচারে এসে অনুগামী সুকুমার অধিকারীর বাড়িতে আতিথ্য গ্রহণ করে রাত্রিযাপন করেন তিনি। এরপরে ১৯৩৭, ১৯৩৮ এবং ১৯৩৯ সাল এই তিন বছরে তিনবার ভট্টপাড়ার অধিকারী বাড়িতে এসেছিলেন সুভাষচন্দ্র। সুকুমারবাবুর নাতি কলকাতার বাসিন্দা পেশায় আইনজীবী অমিতাভ অধিকারী বলেন, সুভাষচন্দ্র যখন ভট্টপাড়ার বাড়িতে এসেছিলেন তখন আমার জন্ম হয়নি। বাবা-ঠাকুরদাদের মুখ থেকে শুনে জেনেছি, সুভাষচন্দ্রের সঙ্গে ঠাকুরদা সুকুমার অধিকারীর নিয়মিত চিঠি আদান-প্রদান চলত। সুভাষচন্দ্র জিয়াগঞ্জে এলেই ভট্টবাড়িতে আতিথ্য গ্রহণ করতেন। জিয়াগঞ্জের অন্য কোথাও খাওয়ার এলাহি আয়োজন থাকলেও এই বাড়িতেই তিনি খাওয়া-দাওয়া সারতেন। 
স্বাধীনতা অন্দোলনে মুর্শিদাবাদ জেলার অনন্য নারী মৃণালদেবী ছিলেন সুভাষচন্দ্রের ঘনিষ্ঠ। মৃণালদেবীর দিদি ছিলেন সুকুমার অধিকারীর স্ত্রী মণিমালাদেবী। সুভাষচন্দ্র সহযোদ্ধা মৃণালদেবীর সূত্রে মণিমালা দেবীকে দিদি বলে ডাকতেন। দিদির হাতের রান্না বিশেষ করে গলদা চিংড়ির মালাইকারি সুভাষচন্দ্র খেতে ভালোবাসতেন। তাই নেতাজি যতবার জিয়াগঞ্জে এসেছেন ততবারই অধিকারী বাড়িতে আতিথ্য গ্রহণ করেছেন। জিয়াগঞ্জের বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মানব বিশ্বাস বলেন, জিয়াগঞ্জ শহরের ভট্টপাড়ার বাড়িতে সুভাষচন্দ্রের আসার কথা এই প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা জানে না বললেই চলে। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, তাদের মধ্যে এনিয়ে কোনও আগ্রহ লক্ষ্য করা যায় না। দেশের মুক্তি সংগ্রামের নক্ষত্র নেতাজির স্মৃতি ধরে রাখতে বাড়িটিকে হেরিটেজ ঘোষণা করে সংরক্ষণ করা উচিত। জানা গিয়েছে,  সুকুমার অধিকারীর বর্তমান প্রজন্মের কেউই ভট্টপাড়ার বাড়িতে থাকেন না। স্থানীয় একজনকে বাড়িটি দেখাশোনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ পুরসভার প্রশাসক প্রসেনজিৎ ঘোষ বলেন, অধিকারী পরিবারের পক্ষ থেকে বাড়িটি অধিগ্রহণ করে সংরক্ষণ করার জন্য কোনও কিছু জানানো হয়নি। অবেদন পেলে পরিবারের বর্তমান সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। মুর্শিদাবাদ জেলা হেরিটেজ অ্যান্ড কালচারাল ডেভেলপমেন্ট সোসাইটির যুগ্ম সম্পাদক স্বপন ভট্টাচার্য বলেন, বাড়িটি জেলার অন্যতম সম্পদ। বাড়িটি সংরক্ষণের জন্য শীঘ্রই জেলা হেরিটেজ দপ্তরে লিখিত আবেদন জানানো হবে।

20th     January,   2022
 
 
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ