বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
দক্ষিণবঙ্গ
 

মঙ্গলপুর শিল্পতালুকে বাঙ্কার ভেঙে ছাই চাপা পড়ল ৩ শ্রমিক, জখম ১
রানিগঞ্জ

নিজস্ব প্রতিনিধি, আসানসোল: শুক্রবার গভীর রাতে রানিগঞ্জের মঙ্গলপুর শিল্পতালুকে ছাই বাঙ্কার ভেঙে নিখোঁজ তিন শ্রমিক। জখম হয়েছেন একজন। রাতে বাঙ্কারের ছাই সরানোর কাজ করার সময় হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে বিশাল পরিকাঠামো। তখনই এক শ্রমিক ছিটকে পড়েন, বাকি তিনজন ছাই চাপা পড়েন। ছিটকে পড়া শ্রমিক জখম হলেও প্রাণে বেঁচে যান। ছাইয়ের স্তূপে চাপা পড়া তিন শ্রমিককে উদ্ধার করতে রাত থেকে মেশিন নামানো হলেও শনিবার বিকেল পর্যন্ত তাঁদের হদিশ মেলেনি। দুর্ঘটনার পর কারখানা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন শ্রমিকরা। অভিযোগ, দীর্ঘদিন বাঙ্কারের সংস্কার না হওয়াতেই এই দুর্ঘটনা। ঘটনার পরই কারখানা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন স্থানীয় বিধায়ক থেকে বিরোধীরা। ঘটনায় উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক অরুণ প্রসাদ।
রানিগঞ্জের বিধায়ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, কারখানা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এফআ‌ইআর করতে হবে। তাদের অবহেলাতেই এই ঘটনা। একশ্রেণির নেতা রয়েছে, যারা কর্তৃপক্ষের দালালি করে নিজেদের আখের গোছাতেই ব্যস্ত। তাই মালিক পক্ষ এত বেপরোয়া। অতিরিক্ত জেলাশাসক অভিজিৎ শেভালে বলেন, পুরো ঘটনার উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক। আমরা প্রতিটি বিষয় খতিয়ে দেখব। কোনও গাফিলতি ধরা পড়লে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বেসরকারি কারখানার আধিকারিক সাহেব সিং বলেন, আমাদের কোনও গাফিলতি ছিল না। এটা নিছকই একটি দুর্ঘটনা। জানা গিয়েছে, মঙ্গলপুর শিল্পতালুকে এই নামী বেসরকারি কোম্পানির একাধিক ইউনিট রয়েছে। স্পঞ্জ আ‌য়রন, ফেরোর পাশাপাশি নিজস্ব পাওয়ার প্ল্যান্টও রয়েছে। সেখান থেকে উৎপন্ন টন টন ছা‌ই ছাই বিশাল ছাই বাঙ্কারের লোড হতো। সেখান থেকে ছাইয়ের একটি অংশ কারখানা কর্তৃপক্ষের ইটভাটায় যেত। বাকি ছাই ডাম্পারে লোড হতো। সেই ছাই বাঙ্কারেই রাতে কাজ করছিলেন, রানিগঞ্জের জেকে নগরের শিবনাথ রাম, অণ্ডাল থানার হরিশপুরের দিলীপ গোপ, পূর্ব বর্ধমানের তন্ময় ঘোষ ও বাঁকুড়া জেলার পখন্নার শিবশঙ্কর ভট্টাচার্য। হঠাৎই গভীর রাতে তা ভেঙে পড়ে। তখন সেখান থেকে ছিটকে প্রাণে বেঁচে যান শিবনাথ। তাঁকে উদ্ধার করে দুর্গাপুরের বেসরকারি হাসপাতালে পাঠানো হয়। বাকিদের কোনও হদিশ নেই। দুর্ঘটনার পরই শিল্পাঞ্চলে কারখানা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন সকলেই। অভিযোগ, পরিবেশ দূষণ ঠেকানো থেকে শ্রমিক নিরাপত্তার স্বার্থে নির্দিষ্ট সময় অন্তর যে মেনটেনেন্সের প্রয়োজন, তার কোনও কিছুই করে না বহু কারখানা কর্তৃপক্ষ। শ্রমিকদের নিরাপত্তা না নিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা বাড়তি মুনাফা করে। আন্দোলন ঠেকাতে কিছু অসাধু নেতাকে ‘উপঢৌকন’ দিয়ে তারা সব কিছু ম্যানেজ করে নেয়। সেক্ষেত্রে যে সব আধিকারিক ফ্যাক্টরি পরিদর্শনের দায়িত্বে রয়েছেন, তাঁরাও সঠিক ভূমিকা পালন করছেন না বলেই স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ। এনিয়ে ডিরেক্টর অব ফ্যাক্টরির সহকারী অধিকর্তা দেবব্রত চক্রবর্তীকে ফোন করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। এসএমএসেরও কোন উত্তর দেননি। ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকাজুড়ে চাপা উত্তেজনা রয়েছে। বিশাল পুলিস বাহিনী এলাকাটি ব্যারিকেড করে রেখেছে। সিটুর কেন্দ্রীয় কাউন্সিল সদস্য সুপ্রিয় রায় বলেন, কারখানা কর্তৃপক্ষের অমানবিক আচরণের জন্য রুজিরুটির টানে প্রাণ হাতে নিয়ে শ্রমিকদের কাজ করতে হচ্ছে। 

28th     November,   2021
 
 
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ