বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
দক্ষিণবঙ্গ
 

ভট্টাচার্য বাড়ির লালদুর্গার পুজোয় হয় না 
চণ্ডীপাঠ, চন্দ্রবাড়িতে বসে গানের আসর

সংবাদদাতা, নবদ্বীপ: নবদ্বীপের ভট্টাচার্য বাড়ির সাড়ে তিনশো বছরের লালদুর্গার পুজো ঘিরে এখনও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে উন্মাদনা রয়েছে। চণ্ডীপাঠ ছাড়াই পুজো হয়ে আসছে। আজও প্রথা মেনে নবমীতে থোড় ও বোয়াল মাছের ভোগ দেওয়া হয়। অন্যদিকে, ১৩৮ বছরের প্রাচীন চন্দ্র বাড়ির পুজোর দিনগুলিতে আজও রীতি মেনে প্রতিদিন সন্ধ্যায় নাটমন্দিরে বসে আগমনি, ঠুংরি, খেয়াল গানের আসর। 
যোগনাথতলায় ভট্টাচার্য বাড়িতে পুরোহিত নন, বংশ পরম্পরায় পরিবারের সদস্যরাই দুর্গাপুজো করে আসছেন। এই বাড়ির প্রতিমার রং রক্তবর্ণ অর্থাৎ লাল। দুর্গা প্রতিমা রক্ত বর্ণ হওয়ার পেছনে অলৌকিক একটি কারণ আছে। পরিবারের সদস্য পণ্ডিত কুমারনাথ ভট্টাচার্য বলেন, কথিত আছে এই বংশের পূর্বপুরুষ রাঘবরাম নবমীর দিন চণ্ডীপাঠ করছিলেন। নবমী তিথির সময় কম থাকায় রাঘবরাম দ্রুত চণ্ডীপাঠ করছিলেন। রাঘবরামের ছেলে রামভদ্র চণ্ডীপাঠ শুনতে পেয়ে তাঁর মাকে বলেন, যেভাবে চণ্ডীপাঠ করা হচ্ছে, সেটির যথার্থ  উচ্চারণ হচ্ছে না। রাঘবরামের কানে পৌঁছয় সেই কথা। তিনি তখন সেই পাঠ বন্ধ করে রামভদ্রকে চণ্ডীপাঠ করার নির্দেশ দেন। মা দুর্গার মূর্তি ছিল দক্ষিণমুখী, রাঘবরাম বসলেন উত্তরমুখী হয়ে, আর ছেলে রামভদ্রকে বসতে বললেন পূর্বমুখী হয়ে। বাবার নির্দেশে রামভদ্র শুরু করলেন চণ্ডীপাঠ। সেই সময় অলৌকিক এক ঘটনা ঘটল। দেবীর মূর্তি পশ্চিমমুখী হয়ে রামভদ্রের মুখোমুখি হয়ে যায়।  দেখা যায় দেবী রক্তবর্ণ হতে শুরু করেন। আর ছেলে রামভদ্রের দেহ ফ্যাকাসে অর্থাৎ রক্তশূন্য হয়ে যায়। দশমীর দিনই রামভদ্র প্রাণত্যাগ করেন। সেই সময় থেকেই রাঘবরাম বলে গিয়েছিলেন, এই বাড়িতে আর কোনও দিনই চণ্ডীপাঠ করা হবে না। সেই থেকেই লালদুর্গা বাড়ির পুজোতে চণ্ডীপাঠ হয় না।দেবীকে প্রতিদিনই নিরামিষ, আমিষ দু’রকমই ভোগ দেওয়া হয়। কিন্তু নবমীর দিন বিশেষ ভোগ হিসাবে দেবীকে থোড় আর বোয়াল মাছ ভোগ দেওয়ার রীতি রয়েছে। শুরুতে বলির প্রথা থাকলেও, এখন কুমড়ো বলি দেওয়া হয়। দশমীর সকালে পরিবারের সদস্যদের কাঁধে চেপে ভাগীরথী নদীতে প্রতিমা নিরঞ্জন করা হয়। অন্যদিকে, আজও ঐতিহ্য মেনে বৈষ্ণবীয় মতে নবদ্বীপের চন্দ্রবাড়ির পুজো হয়ে আসছে। পুজোর ক’টা দিন সুরের মূর্ছনায় ভাসে দুর্গামণ্ডপ। পাঁচ পুরুষ ধরে কলকাতার খিদিরপুর আর নবদ্বীপের দোকান ও বাড়ি ভাড়ার টাকায় চলে আসছে এই পুজো। একচালা সাবেকি প্রতিমার রূপ রাজরাজেশ্বরীর মতো। এখানে সিংহ নরসিংহ রূপী। মহালয়ার পর দ্বিতীয়ায় প্রতিমা তৈরি সম্পূর্ণ করে নাটমন্দিরে আনা হয়। এছাড়া যে পদই ভোগ নিবেদন করা হোক না কেন, তার সংখ্যা কোনও মতেই ২৪টির বেশি নয়। আগে চাল, কুমড়ো, আখ, কলা বলি দেওয়া হলে এখন তা উৎসর্গ করা হয়। ষষ্ঠী, সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী এবং দশমী পুজোর শেষে বংশ-পরম্পরা ও রীতি মেনে দেবী বিসর্জনে যান ২৪ জন বেহারার কাঁধে চেপে। পরিবারের সদস্য সুশোভন চন্দ্র বলেন, পুজোর দিনগুলিতে নিরামিষ খাবারের আয়োজন থাকলেও বিজয় দশমীর দিন দেবীর বিদায় জানানোর আগে বাড়ির মহিলারা মাছ ভাত খেয়ে পানের খিলি মুখে দিয়ে দেবীকে বরণ করেন। বরণ শেষে প্রথা মেনে ভাগীরথী নদীতে বিসর্জিত হন চন্দ্রবাড়ির দেবীদুর্গা।

28th     September,   2021
 
 
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ