বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
উত্তরবঙ্গ
 

বন্ধ বাগান খোলার স্বপ্নে বিভোর চা
শ্রমিকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিলেন

রবীন রায় ,আলিপুরদুয়ার : লকডাউন ও করোনা পরিস্থিতিতে একবছরে আলিপুরদুয়ার জেলায় ১১টি চা বাগান খুলে দিয়েছিল রাজ্য সরকার। বাগান খোলার একবুক আশা নিয়ে শনিবার জেলার বাকি পাঁচটি বন্ধ বাগানের শ্রমিকরা ভোট দিলেন। বন্ধ কালচিনির তোর্সা, মধু, মাদারিহাটের ঢেকলাপাড়া, লঙ্কাপাড়া ও বান্দাপানি বাগানের বুথগুলিতে শ্রমিকদের দীর্ঘ লাইনেই তার প্রমাণ মিলেছে। 
সকাল সকাল চা শ্রমিকদের ভোট দেওয়ার একই চিত্র দেখা যায় ভোটের আগে খুলে যাওয়া মাদারিহাটের গ্যারগেন্দা, হান্টাপাড়া, বীরপাড়া, তুলসীপাড়া, ধুমচিপাড়া, ডিমডিমা, মুজনাই, কালচিনি ব্লকের কালচিনি ও রায়মাটাং চা বাগানের বুথগুলিতেও। দিনের শেষে শ্রমিকরা কোনও রাজনৈতিক দলকে ভোট দিল তা অবশ্যই ২ মে’র আগে জানা সম্ভব নয়। 
তবে চা সুন্দরী, জয় জোহার প্রকল্প, বন্ধ বাগান খোলা, দৈনিক মজুরি বৃদ্ধি ও নিঃশুল্ক রেশন সহ চা শ্রমিকদের কল্যাণে রাজ্যের তৃণমূল সরকারের নিরন্তর প্রয়াসে চা শ্রমিকদের এই স্বতঃস্ফূর্ত ভোট দেওয়ার ঘটনা যথেষ্ট ইঙ্গিতবাহী বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। 
তোর্সা টি জি প্রাইমারি স্কুলের বুথেই দেখা হল বাগানের ৩ নম্বর লাইনের শ্রমিক আল্পনা ওঁরাওয়ের সঙ্গে। ভোট দিয়ে বেরিয়ে এসেই আল্পনা বলেন, রাজ্য সরকার তো ভোটের আগে অনেক বাগানই খুলে দিয়েছে। আশা করছি, ভোটের পরে তোর্সা বাগানও খুলবে, এই আশায় ভোট দিলাম। ৩ নম্বর লাইনের আরএক মহিলা শ্রমিক মগদালি মুর্মু বলেন, ২০২০ সালের অক্টোবর মাস থেকে বন্ধ আমাদের বাগান। ঠাকুরের কাছে একটাই প্রার্থনা ভোটের পরে যেন তাড়াতাড়ি বাগানটি খোলে এই আশাতেই ভোট দিলাম আমরা। 
তোর্সা চা বাগানে শ্রমিক সংখ্যা ৮০০’র মতো। এদিকে ২০১৩ সাল থেকে বন্ধ কালচিনির মধু চা বাগানটি। বাগানে শ্রমিক সংখ্যা ৯৯৯। মধু টি জি হাইস্কুলের বুথে ভোট দিতে যাওয়ার আগে বাগানের অসুর লাইনের চা শ্রমিক চামেলি ওঁরাও বলেন, বাগান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বাগানে বেরোজগার বাড়ছে। পাশেই ভুটানে লকডাউন চলায় সেখানেও কাজে যেতে পারছি না। ভোটের পরে যে সরকারই ক্ষমতায় আসুক বাগানটি যেন খোলে এটাই আমাদের দাবি।
মাদারিহাটের বন্ধ ও ভোটের আগে খুলে যাওয়া চা বাগানগুলিতেও এদিন শ্রমিকদের দলবেঁধে ভোট দিতে দেখা যায়। ডিমডিমা চা বাগানের বাসিন্দা জয়প্রকাশ টোপ্পোর ইঙ্গিতবাহী মন্তব্য, রাজ্য সরকার চা শ্রমিকদের কল্যাণে একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে। চা শ্রমিকদের ঢেলে ভোট দেওয়া তারই ইঙ্গিত। 
মাদারিহাটের একাধিক বুথে বিজেপি এজেন্ট দিতে পারেনি। বুথের বাইরে টেবিল নিয়েও বসতে দেখা যায়নি গেরুয়া সমর্থকদের। বিজেপির আলিপুরদুয়ার জেলা সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা সেটা কার্যত স্বীকার করে নিয়ে বলেন, একাধিক বুথ নয়। মাদারিহাটের তুলসীপাড়া চা বাগানের পাঁচটি বুথে আমাদের দলের এজেন্ট ছিল না। টিএমসি বের করে দিয়েছে। 
মাদারিহাটের খুলে যাওয়া ডিমডিমা চা বাগানে দেখা হয় তৃণমূল প্রার্থী রাজেশ লাকড়ার সঙ্গে। প্রার্থী বলেন, বিজেপির অভিযোগ ঠিক নয়। আমরা কোনও রাজনৈতিক দলের এজেন্টকে বুথ থেকে বের করে দিইনি। বিজেপি বুথে এজেন্ট দিতে না পারলে আমরা কি করতে পারি। 
চা মহল্লায় একটা কথা চালু আছে ‘চায়ে বাগান যেকার, জিত হুই সেকার।’ অর্থাৎ চা বাগান যার জয় তার। চা বাগানের শ্রমিকরা কোন দলের নির্ণায়ক হয়ে উঠবে সেটাই ভোটের ফল বের হওয়ার পরেই জানা যাবে। তবে বন্ধ বাগান ও খুলে যাওয়া বাগানের শ্রমিকরা যেভাবে ভোট দিয়েছে তাতে তা খুবই ইঙ্গিতবাহী বলে মনে করা হচ্ছে।  নিজস্ব চিত্র

11th     April,   2021
 
 
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ