বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
বিদেশ
 

দূষণে গলছে বরফ, বিশ্ব উষ্ণায়নে ফুল ফুটছে আন্টার্কটিকাতেও!

নয়াদিল্লি: চারিদিকে বরফের সাদা চাদর। হাড় হিম করা ঠান্ডা। কিন্তু, এরই মধ্যে ফুল ফুটছে। আর এই ঘটনাই হতবাক করে দিয়েছে গোটা বিশ্বের বিজ্ঞানীদের। কারণ, এই ঘোর আশ্বিন মাসে তুষারে মোড়া জায়গাটি কোনও দেশ নয়, বরং বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম মহাদেশ হিমশীতল আন্টার্কটিকা! সেখানকার সিগনি দ্বীপে দুই প্রজাতির উদ্ভিদের বেড়ে ওঠার ঘটনা লক্ষ্য করা গিয়েছে। তাতে ফুলও ফুটেছে। এতে বরফের দেশে বসন্ত এসেছে ভেবে অনেকের হয়তো আনন্দ হতে পারে। কিন্তু, গবেষকরা একেবারেই খুশি হতে পারছেন না। তাঁদের আশঙ্কা, এই ছবি বিশ্ব উষ্ণায়নের ফল। সংশ্লিষ্ট এলাকার জলবায়ু পরিবর্তনেরই ইঙ্গিত। দূষণের জেরে হিমবাহ-হিমশৈলগুলি স্বাভাবিকের তুলনায় কয়েকগুণ দ্রুত হারে গলতে শুরু করেছে। তাই ফুল ধরেছে দুই প্রজাতির উদ্ভিদে।
আন্টার্কটিকা সারা বছর বরফের চাদরে মোড়া থাকে। গড় তাপমাত্রাও হিমাঙ্কের অনেক নীচে। কোনও উদ্ভিদের পক্ষে এই পরিস্থিতিতে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়। বছর ২০ আগে সেখানে সবুজের উপস্থিতি দেখা যেত। কিন্তু হাড়কাঁপানো ঠান্ডায় সেগুলি বেশিদিন বাঁচত না। এখন তাদের দ্রুত বেড়ে ওঠা এবং ফুল ফোটার ঘটনা অবশ্যই ব্যতিক্রমী। গবেষকদের রিপোর্ট অনুযায়ী, ১৯৬০ থেকে ২০০৯ সালের মধ্যে এই ধরনের উদ্ভিদের বৃদ্ধির হার যা ছিল, পরবর্তী ১০ বছরে তা ১০ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে তা পাঁচগুণ। ইতালির ইনসুব্রিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক নিকোলেটা ক্যানোন এবং তাঁর সহকর্মীরা ২০০৯ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত সাউথ অর্কনি দ্বীপপুঞ্জের অন্তর্গত সিগনি দ্বীপের বেশ কয়েকটি স্থানে ওই দু’টি প্রজাতির উদ্ভিদের বৃদ্ধি পরিমাপ করেছেন। সেই সঙ্গে গত ৫০ বছরের সমীক্ষার ফলাফলের তুলনামূলক বিশ্লেষণও করা হয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, বর্তমানে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে উদ্ভিদগুলির সংখ্যা অনেক বেড়ে গিয়েছে। উষ্ণায়নের সঙ্গে সঙ্গেই ফি বছর পাল্লা দিয়ে বেড়েছে তাদের বৃদ্ধির হারও।
তীব্র ঠান্ডায় এতদিন মূলত মস ও লিচেন জাতীয় শৈবালই দেখা যেত। সেখানে নতুন ধরনের উদ্ভিদের দ্রুত বেড়ে ওঠার ঘটনা বিজ্ঞানীদের দুশ্চিন্তা বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। কারণ, এতে আন্টার্কটিকার বাস্তুতন্ত্রের উপর প্রভাব পড়তে পারে। এই পরিবর্তনের ফলে মাটির চরিত্র বদলে যাবে। জন্ম নিতে পারে নতুন ব্যাকটিরিয়া, যার বিরূপ প্রভাব পড়বে সামগ্রিক পরিবেশের উপর। এসব ভেবেই প্রমাদ গুণছেন পরিবেশবিদরা। 
সিগনি দ্বীপে ফুলের উপস্থিতি প্রথম ধরা পড়ে অস্ট্রেলিয়ার ওলংগং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের চোখে। শুরুতে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় এই ধরনের উদ্ভিদের বেড়ে ওঠার ঘটনা লক্ষ্য করা গিয়েছিল। পরে অন্যান্য এলাকাতেও তাদের উপস্থিতি ধরা পড়ে। বিজ্ঞানীদের মতে, এটা বিশ্ব উষ্ণায়নের সবথেকে বড় প্রমাণ। আরও একটি বিষয় তাঁদের ব্যাখ্যায় উঠে এসেছে— আন্টার্কটিকায় গবেষক ও অভিযাত্রীদের ক্রমবর্ধমান ভিড়। মানুষের পায়ে পায়ে একাধিক উদ্ভিদের বীজ হিমশীতল মহাদেশের বিস্তীর্ণ এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। প্রবল ঠান্ডায় সেগুলি এতদিন অঙ্কুরিত হতে পারেনি। কিন্তু, ক্রমে দূষণ বাড়ায় দ্রুত হারে গলছে বরফ। তাই, উদ্ভিদগুলি জন্ম নিতে পারছে। ফুল ফুটছে। তাতেই ঘুম উড়েছে বিজ্ঞানীদের। ভবিষ্যতের কথা ভেবে তাঁরা শিউরে উঠছেন।

26th     September,   2023
 
 
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ