বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
বিদেশ
 

হিজাব বিরোধী আন্দোলনে খোলা চুলের
প্রতিবাদী তরুণীকে গুলি করে হত্যা ইরানে

তেহরান: ইরানে হিজাব বিরোধী আন্দোলনে একেবারে সামনের সারিতে ছিলেন তিনি। নিরাপত্তা বাহিনীর রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে তাঁর মাথার খোলা চুল সোচ্চার প্রতিবাদের রূপক হয়ে উঠেছিল। নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে বিক্ষোভকে জোরালো করেছিল তাঁর সাহসী ভূমিকা।  প্রতিবাদের এই ভাষা সাহস জুগিয়েছিল অনেকের মনেই। কিন্তু এই দামাল তরুণীকে বরদাস্ত করল না ইরান সরকার।  বছর কুড়ির এই তরুণী হাদিস নাজাফির প্রতিবাদকে চিরতরে থামিয়ে দিতেই তাঁকে ঝাঁঝরা করে দেওয়া হল গুলিতে।  তাঁর হাত, পেট, বুক ও ঘাড় এফোঁড়-ওফোঁ‌ড় করে দিল নিরাপত্তা বাহিনীর বুলেট। হাদিসকে এভাবে হত্যার ঘটনায় ইরান তো বটেই,  স্তম্ভিত গোটা বিশ্বও। ভাইরাল  ভিডিওতে দেখা গিয়েছে,  হাদিসের অন্ত্যেষ্টির জন্য খোঁড়া কবরের পাশে তাঁর ছবি হাতে কান্নায় ভেঙে পড়ছেন উপস্থিত লোকজন। 
সম্প্রতি ইরানে মাশা আমিনি নামে ২২ বছরের এক তরুণী হিজাব না পরেই রাস্তায় বের হয়েছিলেন। এই ‘অপরাধে’ তাঁকে গ্রেপ্তার করে ইরানের নীতি পুলিস। অভিযোগ, পুলিসের হেফাজতেই মারাত্মক অত্যাচার চলে তাঁর উপর। কোমায় চলে যান কুর্দিস্তান প্রদেশের ওই তরুণী। গত ১৬ সেপ্টেম্বর মৃত্যু হয় তাঁর। মেডিক্যাল রিপোর্টে দেখা যায়, ওই তরুণীর মাথায় বড় ধরনের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। যদিও ইরান সরকার দাবি করে, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ওই তরুণীর।  
এ ঘটনার পরই অশান্ত হয়ে উঠেছে গোটা ইরান। হিজাব-বিরোধী গণ আন্দোলনে ফুটছে গোটা দেশ। ক্ষোভের এই আগুন ছড়িয়ে পড়েছে সারা বিশ্বজুড়েই। পুলিসি অত্যাচারে আমিনির মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে লন্ডনেও মিছিল হয়েছে। ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে ব্রিটেন সরকার। সমালোচনায় সরব হয়েছে অন্যান্য পশ্চিমী দেশও।  মাশার মৃত্যুর পর সরকারের রোষে পড়ার অনেকে চুপ  থাকলেও নিজেকে গুটিয়ে রাখেননি হাদিস । আমিনির মৃত্যুর  ‘বিচার’ চেয়ে নিজে সামনের সারিতে থেকে অন্যদেরও প্রতিবাদে শামিল হওয়ার সাহস জুগিয়েছিলেন তিনি। আর তারই মাশুল দিতে হল তাঁকে। তবে শুধু তিনি নন, আমিনির মৃত্যুর পর ইরানে ছড়িয়ে পড়া বিক্ষোভ, অশান্তির জেরে এখনও পর্যন্ত ৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এঁদের মধ্যে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতেই বেশিরভাগের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ। ইসলামি বিপ্লবের পর ১৯৭৯ সালে ইরানে মহিলাদের জন্য হিজাব বাধ্যতামূলক হয়। এই আইন নিয়ে দেশের বেশিরভাগ মানুষ, বিশেষ করে মহিলারা মেনে নিতে পারেননি। ১৯৮১ সালে যখন এই আইন বাস্তবায়িত হয়, সেসময়ই গোটা ইরানে আছড়ে পড়েছিল প্রবল অসন্তোষ। তার পর থেকে বিভিন্ন সময়ে বিক্ষিপ্তভাবে বিক্ষোভ হয়েছে। কিন্তু গুলি-বন্দুকের ভয় দেখিয়ে চুপ করিয়ে দেওয়া হয়েছে প্রতিবাদীদের। সেই ধামাচাপা বিক্ষোভ ফের মাথা তুলেছে।
হাদিসকে  খুনের ঘটনায় সরব হয়েছেন ইরানের আইনজীবী মহম্মদ হোসর। তিনি বলেন, মাশা আমিনির উপর তারা কোনও অত্যাচার চালায়নি, এটা প্রমাণ করতেই সরকারের বাহিনী আন্দোলনকারীদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ছে। এর চেয়ে লজ্জার আর কী হতে পারে। টিভিতে বসে তারা বলছে, হেফাজতে থাকাকালীন আমিনিকে কেউ স্পর্শ পর্যন্ত করেনি। অথচ একইসময়ে আন্দোলনকারীদের উপর রাস্তায় গুলি চালানো হচ্ছে।

29th     September,   2022
 
 
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ