বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
দেশ
 

ভোটের আগে গণতন্ত্রের কণ্ঠরোধ, দেশজুড়ে হানা, গ্রেপ্তার ২

নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: লোকসভা ভোটের আগে সংবাদমাধ্যমকে কড়া বার্তা, নাকি গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভের কণ্ঠরোধের প্রয়াস? মঙ্গলবার অমিত শাহের পুলিসের অতিসক্রিয়তায় এমনই প্রশ্ন উঠল দেশজুড়ে। কারণ, ভোটের আগে ফের কেন্দ্রের টার্গেট সেই সাংবাদিক এবং সমাজকর্মীরা। এদিন ভোর থেকে ‘নিউজক্লিক’ নামে একটি অনলাইন সংবাদমাধ্যমের বিরুদ্ধে তেড়েফুঁড়ে নামে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীন দিল্লি পুলিস। রাজধানী দিল্লি ও মুম্বইয়ের প্রায় ৩০টি জায়গায় একযোগে চলে অভিযান। আটক করা হয় একঝাঁক সাংবাদিক, লেখক, ইতিহাস গবেষক, সমাজকর্মীকে। মোট ৪৬ জনকে লোধি রোড স্পেশাল সেলে নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিস। দিনভর জেরার পর রাতে গ্রেপ্তার করা হয় ‘নিউজক্লিক’-এর প্রতিষ্ঠাতা-এডিটর ইন চিফ প্রবীর পুরকায়স্থ এবং এইচআর হেড অমিত চক্রবর্তীকে। সংস্থার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ আইনে (ইউএপিএ) মামলাও করা হয়েছে।
ঠিক কী অভিযোগ ‘নিউজক্লিক’-এর বিরুদ্ধে? পুলিসের দাবি, চীন থেকে অর্থসাহায্য অর্থাৎ লগ্নি আসে এই সংবাদ পোর্টালে। আর সেই টাকায় তারা চালায় দেশ ও মোদি সরকার বিরোধী প্রচার, যা কার্যত সন্ত্রাসবাদেরই সমতুল। বিষয়টি প্রথম সামনে এনেছিল একটি মার্কিন সংবাদপত্র। তারপর গত ১৭ আগস্ট এই অভিযোগে মামলা দায়ের করে পুলিস। সোমবার রাত দুটোয় দিল্লি পুলিসের স্পেশাল সেলের সদর দপ্তরে এক জরুরি বৈঠক হয়। তারপরই দিল্লি পুলিসের স্পেশাল সেল ও মুম্বই পুলিসের অন্তত ২০০ কর্মী দুই শহরের কমপক্ষে ৩০টি স্থানে একযোগে অভিযানে নামে। ভোর থেকে তল্লাশি চলে নিউজক্লিকের অফিস সহ সাংবাদিক, সমাজকর্মী, লেখকের বাড়িতে। প্রবীরবাবুরা ছাড়াও খ্যাতনামা সাংবাদিক পরঞ্জয় গুহঠাকুরতা, অনিন্দ্য চক্রবর্তী, অভিসার শর্মা, সঞ্জয় রাজৌরা, সোহেল হাশমির মতো একঝাঁক সাংবাদিক, লেখককে আটক করা হয়। প্রত্যেকের ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন সহ যাবতীয় ইলেকট্রনিক্স গ্যাজেটস  বাজেয়াপ্তও করে পুলিস। তল্লাশি চালানো হয়েছে তিস্তা শেতলাবাদের বাড়িতেও। অভিযোগ একটাই—এঁরা সবাই দেশবিরোধী কাজে মদত দিয়েছেন। 
দিনভর এই ইস্যুতে মোদি সরকারকে তুলোধোনা করেছে বিরোধীরা। তাদের অভিযোগ, এই ঘটনা আদতে স্বৈরতন্ত্রের পদধ্বনি। পরোক্ষে হুঁশিয়ারি দেওয়া হচ্ছে—মোদি সরকারের বিরুদ্ধে কিছু লেখা অথবা বলা হলেই এই ব্যবস্থা অপেক্ষা করে আছে। কংগ্রেস নেতা পবন খেরা বলেন, সংবাদমাধ্যমকে ভয় দেখানো মানে আসলে মোদি সরকার ভয় পেয়েছে। জাতিগত জনগণনার দাবি জোরালো হচ্ছে। তাই এসব করে ওই ইস্যুকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। অভিযান হয়েছে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির বাসভবনে। তিনি বলেন, ‘নিউজক্লিকের সঙ্গে যুক্ত এক কর্মীর বাবা আমার বাসভবনে থাকে, তাই এই অভিযান। কিন্তু কেন? মিডিয়ার মুখ বন্ধ রাখার জন্য?’ তৃণমূল এমপি মহুয়া মৈত্র প্রশ্ন তুলেছেন, ‘এই তাহলে নিউ ইন্ডিয়া?’ আরজেডি এমপি মনোজ ঝা বলেছেন, ‘দিল্লি পুলিস আবার কী? ও তো অমিত শাহের অধীনে। এজন্য ঩কিন্তু মাশুল গুনতে হবে।’ পুলিসের কাজের নিন্দায় সরব হয়েছে প্রেস ক্লাব অব ইন্ডিয়া, এডিটর্স গিল্ডও। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ সিং ঠাকুর অবশ্য বলেন, ‘পুলিসের কাছে তথ্য প্রমাণ না থাকলে কেন অভিযান চালাবে? আর যদি কোনও মিডিয়া দেশবিরোধী কাজ করে তাহলে তার বিরুদ্ধে তদন্ত তো হওয়াই উচিত!’
লোধি রোড স্পেশাল সেলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে দুই প্রবীণ সাংবাদিক ঊর্মিলেশ  (উপরে) ও পরঞ্জয় গুহঠাকুরতাকে (নীচে)। 

4th     October,   2023
 
 
কলকাতা
 
রাজ্য
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ