বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
দেশ
 

মোদিই বিশ্বগুরু, নয়া সংসদে সদর্প ঘোষণা কেন্দ্রীয় সরকারের

সমৃদ্ধ দত্ত, নয়াদিল্লি: পৃথিবীর নেতা কে? নরেন্দ্র মোদি।  জি-২০ সম্মেলন থেকে দলীয় স্তরে ঘটে চলা এই স্তুতির বিস্ফোরণে বুধবার সরকারি সিলমোহর পড়ল। নয়া সংসদ ভবনের অন্দরে দাঁড়িয়ে মোদিকে বিশ্বগুরুর শিরোপা দিলেন তাঁরই মন্ত্রিসভার এক গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। অধিবেশন চলাকালীন ডঃ জিতেন্দ্র সিং ঘোষণা করলেন, ‘আগে ভারতকে চালাত অন্য দেশ। সেই দিন আর নেই। এখন ভারতের নেতৃত্বেই সব দেশ চলে। বিশ্বের নেতা এখন একজনই—প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।’ 
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ব্যক্তিগত নৈশভোজে আমন্ত্রণ হোক, কিংবা দিল্লিতে আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন—নানাবিধ ইভেন্টের ক্ষেত্রে দলের নেতা-মন্ত্রীরা এতদিন মোদির জয়গান গেয়ে এসেছেন। কিন্তু এদিন সংসদের ঘোষণায় বুঝিয়ে দেওয়া হল—নিছক নেতাবন্দনা নয়, সরকার মনে করছে ‘মোদিই বিশ্বগুরু’। বিশেষ অধিবেশনের তৃতীয় দিনে লোকসভায় চলছিল মহিলা সংরক্ষণ বিল নিয়ে আলোচনা। আর তখন রাজ্যসভায় চর্চার সময় ধার্য করা হয়েছিল চন্দ্রযান ৩’এর সাফল্য নিয়ে। তার প্রারম্ভিক ভাষণেই বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং বললেন, ‘প্রধানমন্ত্রী মোদিজিই এখন বিশ্বকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।’ ২৪ লক্ষ কোটি ডলার অর্থনীতির জো বাইডেন নন, ১৮ লক্ষ কোটি ডলারের জি জিনপিং নন, এমনকী কমবেশি ৫ লক্ষ কোটি ডলারের অর্থনীতি জার্মানি কিংবা জাপানও নয়। ৩ লক্ষ ১৮ হাজার কোটি ডলারের অর্থনীতি নিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ঠিক কোনদিক থেকে পৃথিবীর নেতা, অর্থাৎ বিশ্বগুরু হয়ে গেলেন, তার বিস্তারিত ব্যাখ্যা অবশ্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেননি। উল্টে ভবনের উদ্বোধন পর্বে প্রধানমন্ত্রী যাঁদের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছিলেন, সেই জওহরলাল নেহরু এবং ইন্দিরা গান্ধীর নামে তীব্র সমালোচনা করলেন মন্ত্রী।
তবে জিতেন্দ্র সিং বক্তব্য রাখার আগে এদিন মোদি সরকারকে রীতিমতো তুলোধোনা করেছেন কংগ্রেসের এমপি জয়রাম রমেশ। তাঁর কটাক্ষ, ‘ভুলে যাবেন না, চন্দ্রযান ৩ অভিযানের আগে কিন্তু চন্দ্রযান ১ ছিল। অটলবিহারী বাজপেয়ি এই প্রকল্প ঘোষণা করেন এবং মনমোহন সিং তার সূচনা করেন। সুতরাং এমন নয় যে, ২০১৪ সালের পরই সব হয়েছে। অবশ্য প্রধানমন্ত্রী যদি মনে করেন তিনি ক্ষমতায় আসার দিন থেকেই পৃথিবীর শুরু, তাহলে আমি একমত নই।’ জয়রাম রমেশের সেই শ্লেষের জবাব দিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং বলেন, ‘নেহরুজি কী কী মারাত্মক ভুল করেছেন সেই ইতিহাসের মধ্যে আমি যাব না। সারাভাই যখন তহবিলের অভাবে কাজ করতে পারছিলেন না, তখন কে প্রধানমন্ত্রী ছিলেন সেটাও সবাই জানে!’ তিনি বলেন, ‘১৯৬২ সালে মহাকাশ গবেষণার সংস্থা নেহরুজি তৈরি করেছিলেন। ১৯৬৯-এ ইসরোর জন্ম হয়, এসবই আমরা জানি। কিন্তু এটাও ভারতবাসী জানে যে, রকেট লঞ্চারের উপকরণ সাইকেলে করে নিয়ে যেতে হয়েছিল বিক্রম সারাভাই ও অন্য বিজ্ঞানীদের। সামান্য যানবাহনও পাননি তাঁরা। অথচ, সেই সময়ই সোভিয়েত ইউনিয়ন ও আমেরিকা মহাকাশে মানুষ পাঠিয়ে দিয়েছে।’ জিতেন্দ্র সিং বলেন, ‘আমরা কী করেছি জানেন? বিজ্ঞানীদের স্বাধীনতা দিয়েছি, তহবিল দিয়েছি।’ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বক্তব্যের ছত্রে ছত্রে ছিল মোদিজির আত্মস্তুতির প্রতিফলন। তাঁরাই করেছেন, তাঁরাই করেন। এমনকী, ২০১৪ সালের আগের শিক্ষানীতি নাকি বিজ্ঞানী তৈরি হওয়ারও সহায়ক ছিল না। মোদিজি সেই সুযোগ এনে দিয়েছেন। রাজ্যসভার সদস্যদের তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশের নামেই একমাত্র একটি মহাসাগর আছে! ইন্ডিয়ান ওশান! এই গর্ব আর কারও নেই।’ বিরোধী পক্ষের কয়েকজন এমপি হাসতে হাসতে বলেন, ‘ইন্ডিয়ান ওশান কেন? ইন্ডিয়া নাম বাদ দিন। ভারত ওশান হোক!’ লুফে নিলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী। বললেন, ‘ভালো প্রস্তাব দিয়েছেন তো! এটা নিয়ে ভাবতে হবে!’

21st     September,   2023
 
 
কলকাতা
 
রাজ্য
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ