বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
দেশ
 

প্রিয়জনের দেহ নিয়ে চলে গিয়েছে অন্য
কেউ, এইমস জুড়ে আত্মীয়দের আর্তনাদ
ভুবনেশ্বর

অলকাভ নিয়োগী, ভুবনেশ্বর: টেবিলে রাখা ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃতদের ছবি দেওয়া ক্যাটালগ। তার পাতা উল্টে উল্টে প্রিয়জনদের মৃতদেহ খুঁজছেন পরিবারের সদস্যরা। সকাল থেকেই পরিজনরা একে একে আসছেন। চোখের কোলে জল শুকিয়ে গিয়েছে এতদিনে। তবুও বুকে সামান্য আশা। ক্যাটালগে যদি ছবি না থাকে, তাহলে হয়তো বেঁচে থাকার আশা আছে। মঙ্গলবার সেভাবে ক্যাটালগ দেখতে দেখতে ডুকরে কেঁদে উঠলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগরের বাসিন্দা পারভেজ সাহারাজ লস্কর। বাবা যে আর নেই। সমস্ত নথিপত্র নিয়ে মর্গে বাবার দেহ আনতে গিয়ে আরও ভেঙে পড়লেন পারভেজ। হাসপাতাল থেকে বলা হল, তাঁর বাবা আবু বক্কর লস্করের দেহ মালদার এক ব্যক্তি এসে নিয়ে চলে গিয়েছেন। আর্তনাদ করে পারভেজ বলে উঠলেন, ‘রেলের কাছ থেকে কোনও ক্ষতিপূরণ চাই না। বাবার মৃতদেহ নিয়ে যেতে চাই।’
শুধু পারভেজ একা নন। সদ্য সাবালক হওয়া ছেলের ছবি ক্যাটালগে খুঁজে পেয়েছিলেন তাঁর বাবা হরি হাজরা পাসোয়ান। সুদূর নেপাল থেকে ছেলের দেহ নিতে এসেছেন, তাঁরও একই অবস্থা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁকেও বলেছেন, ‘আপনার ছেলের দেহ অন্য কেউ নিয়ে গিয়েছেন।’ প্রিয়জনের শেষ স্মৃতিচিহ্নটুকুও না পেলে, কী নিয়ে বাড়ি ফিরবেন তাঁরা? শেষকৃত্যটাও কি শেষ করা যাবে না? এখন এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে পরিজনদের মধ্যে। 
একজনের দেহ অপরজন কীভাবে নিয়ে চলে যাচ্ছেন? নথিপত্র মিলিয়ে মৃতদেহ কি ছাড়া হচ্ছে না? ভুবনেশ্বর মিউনিসিপাল কমিশনার বিজয় আমরুতা কুলাঙ্গেকে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘এমনটা হওয়ার কথা নয়। সকলের নথি দেখেই মৃতদেহ পরিবারের হাতে দেওয়া হচ্ছে। আর যে মৃতদেহ চিহ্নিত করা যায়নি, আমরা সেগুলোর ডিএনএ নমুনা নিয়ে রেখেছি। পরিবারের লোকেদের ডিএনএ নিয়ে মিলিয়ে তবেই সেগুলো ছাড়া হবে।’ নেপালের বাসিন্দা হরি হাজরা বলছিলেন, ‘আমাকেও এখন বলছে ডিএনএ পরীক্ষা করতে হবে।’
হঠাত্ই মর্গ থেকে কাঁদতে কাঁদতে বেরতে দেখা গেল শীর্ণকায় চেহারার এক বৃদ্ধকে। ক্যাটালগের দিকে ছুটে গিয়ে একটি ছবির দিকে তাকিয়ে কেঁদেই চলেছেন তিনি। ট্রেন দুর্ঘটনায় ছেলেকে হারিয়েছেন। ঝাড়খণ্ড থেকে ছেলের খোঁজে এসেছিলেন ছোটকা কিসকু। ক্যাটালগে ছেলের ছবিও দেখেন। কিন্তু সেই একই সমস্যা। মর্গ থেকে বলা হল, তাঁর ছেলে মুন্সি কিসকুর দেহ নিয়ে অন্য কেউ চলে গিয়েছেন। ছেলের ছবি হাতে নিয়ে পাথর হয়ে গিয়েছেন ছোটকা। মনে মনে বলে চলেছেন, ‘রেল বলছে টাকা দেবে। ওই টাকা নিয়ে কী হবে? ছেলের দেহটাও এখনও হাতে পেলাম না।’
কটকের হাসপাতালে জখমদের সঙ্গে দেখা করার পর মমতা। -পিটিআই

7th     June,   2023
 
 
কলকাতা
 
রাজ্য
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ