বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
দেশ
 

আর্তনাদ কানে এলেও পৌঁছতে পারিনি, আক্ষেপ বিপ্রদাদের
বিকট শব্দ শুনে স্থানীয়রাই প্রথম
উদ্ধারের কাজে ঝাঁপিয়ে পড়েন

বালেশ্বর: রেললাইনের ধারে তখন কেউ ছোট্ট চায়ের গুমটিতে বসে। কেউ আবার লাইনের ধারে ত্রিপলের ছাউনিতেই ঘরকন্নার কাজ সারছিলেন। আচমকাই একটা বিকট আওয়াজ। সঙ্গে সঙ্গে পড়িম঩ড়ি করে রেললাইনের দিকে ছুটে যান স্থানীয়রা। তারপর যে দৃশ্য দেখলেন, তাতে আঁতকে উঠলেন তাঁরা। চোখের সামনে তাসের ঘরের মতো উল্টেপাল্টে গিয়েছে একের পর এক ট্রেনের বগি। মাত্র এক লহমা। সম্বিত ফিরতেই আর দেরি করেননি রণজিৎ গিরি, বিপ্রদা বাগ, আশা বেহেরা, আশোক বেরার মতো স্থানীয়রা বাসিন্দারা। তড়িঘড়ি উদ্ধারকাজে ঝাঁপিয়ে পড়েন তাঁরা। চারদিক থেকে তখন সাহায্যের জন্য যাত্রীদের কাতর আর্তি শোনা যাচ্ছে। তারইমধ্যে দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া ট্রেনের বিভিন্ন বগি থেকে যতজনকে সম্ভব তাঁরা উদ্ধার করেন। 
শুক্রবার সন্ধ্যার সেই ঘটনার কথা বলতে গিয়েও যেন কেঁপে উঠছিলেন রণজিৎ গিরি। তিনি বলেন, ‘সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ আমি কাছেই একটি চায়ের দোকানে বন্ধুদের সঙ্গে বসেছিলাম। হঠাৎই আমরা বিকট শব্দ শুনতে পাই। তাড়াতাড়ি আমরা রেললাইনের ধারে ছুটে গিয়ে যা দেখি, তাতে কার্যত কথা হারিয়ে গিয়েছিল। ঘন অন্ধকারের মধ্যে থেকে শুধু অসহায় কান্না শুনতে পাচ্ছি। সময় নষ্ট না করে তখনই আমরা উদ্ধারকাজ শুরু করি। পাশাপাশি পুলিস ও রেলের আধিকারিকদেরও খবর দিই।’ অন্য অনেকের মতো বিপ্রদা বাগ ও আশা বেহেরাও উদ্ধার কাজে হাত লাগিয়েছিলেন।  তাঁরা জানিয়েছেন, ‘আমরা অন্তত ৫০ জনকে উদ্ধার করেছি। এমনকী আমাদের গাড়ি করে তাঁদের কাছাকাছি হাসপাতালেও নিয়ে যাই।’ কিন্তু অনেকের আর্তনাদ শুনেও পৌঁছতে পারেননি তাঁরা। সেই আক্ষেপ এখনও ঝরে পড়ছে তাঁদের গলায়। তাঁরা বলছেন, জায়গাটা এতটাই অন্ধকার ছিল যে, অনেকের সাহায্যের আর্তি শুনতে পেয়েও আমরা তাঁদের কাছে পৌঁছতে পারিনি।’  
শুধু উদ্ধার কাজই নয়, চিকিৎসাধীন আহতদের সাহায্যেও এগিয়ে এসেছেন এলাকার বাসিন্দারা। তাঁদের মধ্যে একজন ৬০ বছরের অশোক বেরা।  রক্ত দিতে হাসপাতালে পৌঁছে যান তিনি। অশোক বলেছেন, ‘আহতদের কারও যদি রক্তের প্রয়োজন হয়, সেজন্যই হাসপাতালে এসেছি। তবে আমার বয়স বেশি হওয়ায় রক্ত নেওয়া হয়নি। আমি আমার ছেলে ও আত্মীয়দের হাসপাতালে আসতে বলেছি।’
ভুবনেশ্বর থেকে সরকারি সূত্রে খবর, উদ্ধারকাজের জন্য ২০০টি অ্যাম্বুলেন্স, ৫০টি বাস এবং ৪৫টি মোবাইল স্বাস্থ্য ইউনিট দুর্ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। এছাড়াও প্রায় ১২০০ উদ্ধারকর্মী সেখানে রয়েছেন। জানা যাচ্ছে, ঘটনাস্থল থেকে মৃতদেহ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য সব ধরনের গাড়িই ব্যবহার করা হচ্ছে। এমনকী ট্রাক্টরে করেও মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।   

4th     June,   2023
 
 
কলকাতা
 
রাজ্য
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ