বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
দেশ
 

গণতন্ত্র বাদ, সিলেবাসেও

নয়াদিল্লি: মোদি সরকার গণতন্ত্র মানে না। বরাবর এই অভিযোগ করে আসছে বিরোধীরা। কিন্তু এবার আর অভিযোগ নয়, সরাসরি বাদ গেল গণতন্ত্র। দশম শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের কেন্দ্রীয় স্কুল সিলেবাস থেকে গণতন্ত্র সংক্রান্ত আস্ত অধ্যায় ছেঁটে ফেলল কেন্দ্র। ‘ডেমোক্রেটিক পলিটিক্স-২’ বই থেকে সম্পূর্ণ বাদ দেওয়া হয়েছে মোট তিনটি অধ্যায়, ‘গণতন্ত্র ও বৈচিত্র্য’, ‘জনপ্রিয় আন্দোলন’ এবং ‘গণতন্ত্রের সঙ্কট’।
এমনটা অবশ্য নতুন নয়। মুঘল সাম্রাজ্য, গান্ধী হত্যাকারী নাথুরাম গডসের হিন্দুত্ববাদী পরিচয়, আরএসএসকে নিষিদ্ধ ঘোষণা, দেশভাগ, ঠান্ডা যুদ্ধ, প্রজনন, ডারউইনের বিবর্তন তত্ত্ব—দশম, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির পাঠক্রম থেকে বাদ পড়েছে আগেই। তা নিয়ে দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। কিন্তু কেন্দ্রের যে তাতে বিন্দুমাত্র হেলদোল নেই, তা বোঝা গেল বৃহস্পতিবার বাদের তালিকা আরও লম্বা হওয়ার খবরে। দশমের বিজ্ঞানের বই থেকে মেন্ডেলিফের পর্যায় সারণি ও শক্তির উৎসের মতো গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ও সিলেবাস থেকে সরিয়ে দিয়েছে ন্যাশনাল কাউন্সিল অব এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং (এনসিইআরটি)। তাদের যুক্তি অবশ্য সেই একই—পড়ুয়াদের ‘বোঝা’ কমিয়ে পাঠক্রমকে ‘বাস্তবমুখী’ করে তুলতে এই সিদ্ধান্ত। করোনাকলেই ওই অধ্যায়গুলি বাদ দেওয়া হয়। যদিও তাতে সমালোচনার ঝড় থামছে না। নিন্দুকদের কটাক্ষ, দেশে-বিদেশে গণতন্ত্র নিয়ে গালভরা ভাষণ দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। অথচ তাঁর সরকারই সিলেবাস থেকে গণতন্ত্র বিষয়ক অধ্যায় পুরোপুরি ছেঁটে দিচ্ছে! 
সিলেবাস নিয়ে এই বিতর্কের মধ্যেই এদিন প্রধানমন্ত্রী মোদিকে তীব্র কটাক্ষ করেছেন প্রবীণ বলিউড অভিনেতা নাসিরুদ্দিন শাহ। তিনি বলেন, ‘আজকাল স্কুলের পাঠ্যপুস্তকে সব বদলে দেওয়া হচ্ছে। বিবর্তন তত্ত্ব বাদ পড়েছে। ইসরো প্রধান বলছেন যে, সমস্ত বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার নাকি বেদে আছে। কোনদিন দেখব আইনস্টাইনকেও বই থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।’ শুধু তাই নয়, নতুন সংসদ ভবন উদ্বোধন অনুষ্ঠান নিয়েও সরাসরি খোঁচা দিয়েছেন তিনি। বলেছেন, ‘সর্বোচ্চ নেতা’ তাঁর নিজের জন্য একটি ‘সৌধ’ বানাতে চান।
ভারত সরকার যে স্কুলবই থেকে পর্যায় সারণি এবং বিবর্তন বাদ দিয়েছে, বুধবার মাঝরাতে টুইটারে সেই খবর পোস্ট করেন ব্রিটিশ বায়োলজিস্ট রিচার্ড ডাওকিন্স। সঙ্গে লেখেন, ‘ভারতের ধর্মনিরপেক্ষতার পক্ষে নিদারুণ অপমানের প্রতীক মোদির বিজেপি।’ তাঁর এই পোস্ট ঘিরে সোশ্যাল মিডিয়ায় শোরগোল পড়ে যায়। ডাওকিন্সকে পাল্টা আক্রমণ করেন বিজেপি সমর্থকরা। উল্লেখ্য, এর আগে বিবর্তনবাদ ছেঁটে ফেলার প্রতিবাদে সরকারকে খোলা চিঠি পাঠিয়েছিলেন ১ হাজার ৮০০ জনের বেশি বিজ্ঞানী ও শিক্ষাবিদ। কেন্দ্রীয় শিক্ষা রাষ্ট্রমন্ত্রী সুভাষ সরকারের বক্তব্য ছিল, এটা অপপ্রচার। কোনও পড়ুয়া ডারউইনের তত্ত্ব পড়তে চাইলে প্রচুর ওয়েবসাইট রয়েছে। তাছাড়া ডারউইনের তত্ত্ব তো দ্বাদশের সিলেবাসে পড়ানো হচ্ছে। একই সুরে এদিন এনসিইআরটিও জানিয়েছে, এই বিতর্ক অনর্থক। দশমে বাদ গেলেও নবম কিংবা একাশ-দ্বাদশে পর্যায় সারণি পড়ানো হচ্ছে। তা সত্ত্বেও এভাবে সিলেবাস বদলের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব নিয়ে উদ্বিগ্ন শিক্ষক মহলের বড় অংশ। তাঁদের বক্তব্য, একাদশ-দ্বাদশে বিষয়গুলি বিস্তারিতভাবে পড়তে হলে দশমে তা নিয়ে প্রারম্ভিক জ্ঞান থাকা প্রয়োজন।
শুধু দশম নয়, ষষ্ঠ শ্রেণির বই থেকেও বাদ পড়েছে গণতন্ত্রের উপাদান, ভারতের জলবায়ু ও বন্যপ্রাণের মতো অধ্যায়গুলি। সপ্তম শ্রেণির সিলেবাসে নেই সাম্য প্রতিষ্ঠান সংগ্রাম বিষয়ক চ্যাপ্টার। সব মিলিয়ে কোভিড পর্বে সিলেবাসের সাময়িক কাটছাঁট এখন কার্যত স্থায়ী। 

2nd     June,   2023
 
 
কলকাতা
 
রাজ্য
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ