বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
দেশ
 

‘বাড়ির মেয়েদেরও ছাড়ছে না এজেন্সি’
সিঙ্গুরের মঞ্চ থেকে তীব্র আক্রমণ মমতার,মোদিকে ‘নন্দলাল’ বলে কটাক্ষ

নিজস্ব প্রতিনিধি, চুঁচুড়া: আজ, বুধবার কেন্দ্রীয় সরকারের ‘বঞ্চনার রাজনীতি’ ও ‘হিংসা’র বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামবেন তিনি। আম্বেদকরের মূর্তির নীচে বসবেন ধর্নায়। সিঙ্গুরের মাটিতে দাঁড়িয়ে তারই মহড়া সেরে রাখলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্য সরকারের কর্মসূচির উদ্বোধনে এসে ‘কাজে’ ও ‘কথায়’ কেন্দ্রবিরোধী লড়াইয়ের শিঙা ফুঁকে গেলেন দেশের সর্বাধিক চর্চিত বিরোধী নেত্রী। মঙ্গলবার দুপুরে সিঙ্গুরের লাখো মানুষের জমায়েতে সরোষে মুখ্যমন্ত্রী বললেন, ‘একের পর এক মানুষবিরোধী কাজ করছে। কিন্তু কিছু বলা যাবে না। তাহলেই ইডি, সিবিআই পাঠিয়ে দেবে। বাড়ির মেয়েদেরও ছাড়ছে না এজেন্সি। এমনই প্রতিহিংসাপরায়ণ।’ এনিয়ে গত সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকেও মুখ্যমন্ত্রী ক্ষোভপ্রকাশ করেছিলেন বলেই সূত্রের খবর।
এদিন নাম না করে দেশের প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তীব্র আক্রমণ শানালেন তিনি। কটাক্ষ করলেন ‘নন্দলাল’ বলে। কেন ওই সম্বোধন? কৌশলে তার জবাবও দিয়েছেন বাংলার দাপুটে নেত্রী। বলেছেন, ‘এখন সব কিছুতেই বন্ধু বলছি, কারণ শত্রু শুনতে খারাপ লাগে।’ তারপরেই সুর করে বলেন, ‘বাহবা বাহবা। ওহে নন্দলাল, ১১৪৯ টাকার গ্যাসে ফুটছে বিনা পয়সার চাল’। রাজনৈতিক মহল বলছে, আম জনতাকে ‘মিত্র’ সম্বোধন করেই পরিচিত দেশের প্রধানমন্ত্রী। প্রকারান্তরে এদিন সেটিকেই বাংলার মুখ্যমন্ত্রী কটাক্ষ করেছেন। হিন্দিতে ‘মিত্র’ শব্দের বাংলা প্রতিশব্দ ‘বন্ধু’। সঙ্গে গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রসঙ্গও জুড়ে দিয়ে প্রতিবাদকে অন্য মাত্রায় নিয়ে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। 
সিঙ্গুরে এদিন রাজ্যজুড়ে ৮ হাজার ৭৬৭টি রাস্তার শিলান্যাস একসঙ্গে করেন মমতা। প্রকল্পে রাজ্যের নিজস্ব তহবিল থেকে ৩ হাজার ৬৮৫ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। সেই অনুষ্ঠান মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী আগাগোড়াই কেন্দ্রীয় সরকার এবং বিজেপির বিরুদ্ধে সরব ছিলেন। তাঁর মন্তব্য, ‘সবেতেই পলিটিক্যাল এজেন্ডা। কিন্তু আমাদের দমানো যাবে না। মাথা নত করব না। আমরা লড়ব। বাংলার মানুষ লড়বে।’ মুখ্যমন্ত্রী যখন লড়াইয়ের ডাক দিচ্ছেন, তখন রতনপুরের মাঠে লাখো মানুষের কণ্ঠ তাঁর সঙ্গে সুর মেলাচ্ছে। কীভাবে হবে লড়াই? এদিন একটি নমুনা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। কথায় যেমন বিঁধেছেন প্রধানমন্ত্রীকে, তেমনি কাজেও দিয়েছেন মোক্ষম জবাব। কেন্দ্রীয় সরকার ১০০ দিনের কাজ বাংলাকে দিচ্ছে না। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী পথশ্রী ও রাস্তাশ্রী প্রকল্পে জব কার্ড হোল্ডারদের নিয়োগ বাধ্যতামূলক করেছেন। এদিন তিনি বলেছেন, ‘কেন্দ্রকে দেখালাম, তুমি দিলে না। কিন্তু বাংলার বুদ্ধি আছে। তারা নিজের কাজ নিজেই করতে পারে। ইতিমধ্যেই ২৬ দিনের কাজের সংস্থান হয়ে গিয়েছে। রাজ্যের প্রতিটি প্রকল্পে জবকার্ডধারীরা কাজ পাবে।’ পাশাপাশি সতর্কও করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘আমরা ওদের এক পয়সাও নিইনি। এরপরও কিন্তু কেন্দ্র নজর রাখবে। বর্ষার আগে কাজ শেষ করতে হবে। হিংসা হতে পারে, রাজনীতিও হতে পারে। আমরা ১০০ দিনের কাজে পুরস্কার পেয়েছি। জাতীয় স্তরে আমাদের একাধিক প্রকল্প সেরা, বিশ্বসেরা হয়েছে। মডেল হয়ে উঠেছে বাংলা সহায়তা কেন্দ্র, দুর্গাপুজো। অথচ কেন্দ্র টাকা দিচ্ছে না। আমরা ঈদে ছুটি দিই, বীরসা মুন্ডার জন্য ছুটি দিই। রাজ্যে ৪৫ দিন ছুটি মেলে। ওরা দেয় না।’ 
শেষে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সিপিএম এবং বিজেপি ভাই ভাই হয়েছে। ওরা আমাকে ভয় দেখায়। কিন্তু জানে না, আমি জীবন্ত লাশের মতো বেঁচে আছি।’ তারপরই ডাক ছাড়েন, ‘ছাত্র-যুব-মা-বোনেরা লড়বে তো?’ গর্জে ওঠে জনতা। ছড়া কাটেন নেত্রী, ‘লড়তে পারলে লড়ো, নইলে কলসি নিয়ে...’। শূন্যস্থান পূরণ করে দেয় ভিড়।

29th     March,   2023
 
 
কলকাতা
 
রাজ্য
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ