নয়াদিল্লি: ৩৫ টুকরো করা হয়েছিল শ্রদ্ধা ওয়াকারকে। খুনের পর প্রেমিকাকে কেটে ফ্রিজে ভরে রেখেছিল অভিযুক্ত আফতাব পুনাওয়ালা। মাত্র ১৫ দিন আগে দিল্লির ওই ঘটনা সামনে এসেছে। এর মধ্যেই সেই নারকীয় হত্যাকাণ্ডের পুনরাবৃত্তি রাজধানীর বুকে। এবার এক ব্যক্তিকে ১০ টুকরো করার অভিযোগ স্ত্রী ও সৎ ছেলের বিরুদ্ধে। এক্ষেত্রেও দেহাংশগুলির ঠাঁই হয় ফ্রিজে। পরে পূর্ব দিল্লির বিভিন্ন জায়গায় তা ফেলে আসে অভিযুক্তরা। নিহতের নাম অঞ্জন দাস (৪৫)। খুনের দায়ে তাঁর দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী পুনম (৪৮) এবং সৎ ছেলে দীপককে (২৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিস। জেরায় দু’জনেই অপরাধের কথা স্বীকার করে নিয়েছে বলে খবর। পুনমের অভিযোগ, সৎ মেয়ে এবং সৎ ছেলের স্ত্রীর দিকে কুনজর ছিল অঞ্জনের। এমনকী, তাঁর গয়না বিক্রি করে বিহারে প্রথম পক্ষের স্ত্রীর কাছে টাকা পাঠিয়েছিলেন অঞ্জন। সেই নিয়ে অশান্তির জেরেই খুন।
পুলিসের দাবি, শ্রদ্ধা এবং অঞ্জন দু’টি হত্যাকাণ্ডই হয়েছে চলতি বছর মে মাসে। গত ৫ জুন পূর্ব দিল্লির কল্যাণপুরীর রামলীলা ময়দানে একটি ব্যাগ থেকে এক অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তির দেহের কয়েকটি টুকরো পায় পুলিস। পরবর্তী কয়েকদিনে ফের ওই এলাকায় উদ্ধার করা হয় দু’টি পা, করোটি এবং কনুই থেকে কাটা একটি হাত। ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে খুনের মামলা দায়ের করে পুলিস। বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজ শুরু হয়। পরে তদন্তে জানা যায়, দেহাংশগুলি পাণ্ডবনগরের বাসিন্দা অঞ্জন দাস নামে এক ব্যক্তির। এরপর পুনম এবং দীপককে জিজ্ঞাসাবাদ করে সামনে আসে গোটা ঘটনা। রাতে ব্যাগ নিয়ে দীপক-পুনমের রাস্তার ঘোরার ছবিও দেখা যায় সিসি ক্যামেরার ফুটেজে।
জানা গিয়েছে, গত ৩০ মে রাতে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে একটি ছুরি ও ভোজালি দিয়ে অঞ্জনকে খুন করে দুই অভিযুক্ত। তারপর দেহ ১০ টুকরো করে রেখে দেওয়া হয় ফ্রিজে। প্রমাণ লোপাটের জন্য তিন-চারদিন ধরে সেগুলি বিভিন্ন স্থানে ফেলে দিয়েছিল অভিযুক্তরা। তদন্তে উঠে এসেছে অঞ্জন ও পুনমের একাধিক বিয়ের প্রসঙ্গও। প্রথমে সুখদেব তেওয়ারি নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে বিয়ে হয় পুনমের। কিন্তু স্ত্রীকে ছেড়ে দিল্লি চলে যান তিনি। ২০১৬ সালে স্বামীকে খুঁজতে দিল্লি আসে পুনম। পরে সেখানেই সে দ্বিতীয়বার বিয়ে করে কাল্লু নামে এক ব্যক্তিকে। ২০১৭ সালে তাঁর মৃত্যুর পর পুনমের পরিচয় হয় অঞ্জনের সঙ্গে। পরিচয় বিয়েতে গড়াতে দেরি হয়নি। আগের পক্ষের এক মেয়ে ও ছেলেকে নিয়েই অঞ্জনের সংসারে গিয়ে ওঠে পুনম। অন্যদিকে, আদতে বিহারের বাসিন্দা অঞ্জনেরও এটি প্রথম বিয়ে নয়। বিহারে তাঁর প্রথম পক্ষের স্ত্রী ও আট সন্তান রয়েছেন। কিন্তু সেসব গোপন করে তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করেন বলে অভিযোগ পুনমের।