বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
দেশ
 

নাটক শেষে ডেপুটি ফড়নবিশ
কুর্সি সিন্ধেকে! মহারাষ্ট্রের
 শাসক বকলমে বিজেপিই

নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: মহারাষ্ট্রের ‘মহা-ড্রামা’ শেষ হওয়ার কোনও লক্ষণ নেই। মহা বিকাশ আগাড়ি সরকারের পতন হয়েছিল বুধবার রাতেই। দীর্ঘ নাটকের প্রাথমিক পর্বের পর ইস্তফা দিয়েছিলেন  সংখ্যা হারানো মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব থ্যাকারে। তখনই স্পষ্ট হয়ে যায় যে, বিদ্রোহী শিবসেনা শিবিরের সমর্থনে ফের মুখ্যমন্ত্রী হবেন বিজেপির দেবেন্দ্র ফড়নবিশ। অর্থাৎ মহারাষ্ট্র সরাসরি আসছে বিজেপির হাতে। বৃহস্পতিবার উল্টে গেল গোটা ছবিটা। কিংমেকার হতে চেয়ে বিদ্রোহী শিবসেনা বিধায়ক একনাথ সিন্ধে নিজেই হয়ে গেলেন রাজা। স্বপ্নভঙ্গ হল ফড়নবিশের। আড়াই বছর আগে যিনি ছিলেন দাপুটে মুখ্যমন্ত্রী, নরেন্দ্র মোদি-অমিত শাহের ইচ্ছায় তাঁকেই শেষ পর্যন্ত থাকতে হল এক শিবসৈনিকের অধীনে। একদা অটোচালক একনাথ সিন্ধেই হলেন মহারাষ্ট্রের নতুন মুখ্যমন্ত্রী। মুম্বই থেকে থ্যাকারে-রাজ শেষ করতে তাঁকে সামনে রেখে বকলমে সরকার চালানোর সিদ্ধান্ত নিল বিজেপি। এদিন বিকেলে সেই অপ্রত্যাশিত ঘোষণাটিও হল স্বয়ং ফড়নবিশের মুখ থেকে। আর তার জেরে আর এক প্রস্থ নাটক চলল গেরুয়া শিবিরে।
মুখ্যমন্ত্রীর নাম ঘোষণার সময় ফড়নবিশ স্পষ্ট করে দেন, ‘আমরা বাইরে থেকে সমর্থন করব। সরকারে এবং মন্ত্রিত্বে থাকছি না।’ অর্থাৎ একনাথ সিন্ধেকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে বসিয়ে রিমোট কন্ট্রোল হতে  চায় বিজেপি। এতে মহারাষ্ট্রজুড়ে যেমন বিস্ময় সৃষ্টি হয়, তেমনই হতাশ হয়ে পড়েন গেরুয়া শিবিরের কর্মী সমর্থকরাও। প্রশ্ন ওঠে, সরকার দখলের জন্য বহু দাবাখেলার পরও বিজেপি কেন প্রধান চালিকাশক্তি হল না? এই আত্মত্যাগের আড়ালে প্রধান লক্ষ্য কি শিবসেনায় থ্যাকারে-রাজ খতম করে দেওয়া? কিন্তু এতসব অঙ্ক মানতে নারাজ ছিলেন বিজেপির সাধারণ নেতাকর্মীরা। তাঁদের ক্ষোভ এবং নিরাশা দ্রুত পৌঁছে যায় দিল্লিতে। শেষ পর্যন্ত আসরে নামেন স্বয়ং বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎপ্রকাশ নাড্ডা। তৎক্ষণাৎ বিবৃতি জারি করে তিনি কার্যত ফড়নবিশকে নির্দেশ দেন মন্ত্রিসভায় যোগ দিতে। বলেন, ‘আমরা চাই ফড়নবিশ হবেন উপ মুখ্যমন্ত্রী।’ প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর কাছে যা চরম অস্বস্তিকর এক পদাধিকার। যদিও ক্ষোভ থাকলেও শীর্ষ নেতৃত্বের অবাধ্য হননি তিনি। সন্ধে সাড়ে সাতটা নাগাদ সিন্ধের সঙ্গে শপথ নেন ফড়নবিশ। রাতে বসে নতুন সরকারের প্রথম মন্ত্রিসভার বৈঠক। সেখানেই স্পিকার নির্বাচনের জন্য ২-৩ জুলাই বিধানসভার জরুরি অধিবেশন ডাকার সিদ্ধান্ত হয়। এদিকে, ফড়নবিশকে খোঁচা দিতে ছাড়েননি শারদ পাওয়ার। বলেন, ডেপুটি পদে বসা একেবারেই পছন্দ ছিল না ফড়নবিশের। চোখমুখ দেখেই তা বোঝা গিয়েছে। উদ্ধব অবশ্য টুইট করে নতুন মুখ্যমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানান।
আড়াই বছর পর উদ্ধব থ্যাকারের সরকারের পতন ঘটিয়ে বিজেপি ফের ঘুরপথে সরকারে প্রবেশ করেছে। কিন্তু ১০৬ জন বিধায়কের শক্তি নিয়েও তাদের থাকতে হচ্ছে ৩৯ জন বিধায়কের নেতা সিন্ধের অধীনে। এই বকলমে শাসন কি শুধুই রাজনীতির স্বার্থে? নাকি একনাথ সিন্ধের তরফেই চাপ দেওয়া হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রী পদের জন্য? তাঁর দাবিতেই নত হল বিজেপি? নাকি এটা কোনও কৌশল? সেই রহস্যভেদ হয়নি এখনও। তাহলে বিজেপির লক্ষ্য কী? প্রথমত সিন্ধের আড়ালে সরকারের নিয়ন্ত্রক হওয়া। দ্বিতীয়ত শিবসেনা বিধায়ক ও নেতাকর্মীদের বিদ্রোহী শিবিরে নিয়ে আসা। অর্থাৎ যেন একা হয়ে যান উদ্ধব। খতম হয় থ্যাকারে রাজ! 
একনাথ সিন্ধের পক্ষে নিছক পুতুল হওয়া ছাড়া উপায় নেই। কারণ, তাঁকে গদিতে টিকে থাকতে হলে বিজেপির সমর্থনই ভরসা। একনাথের রাজনৈতিক শক্তি কম, তবুও বিজেপির কাছে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার মুখ তিনি। অর্থাৎ বিহার ফরমুলা। কিন্তু একনাথ কি নীতীশ কুমার হয়ে উঠতে পারবেন? মিশন শিবসেনা দখল কি আদৌ সম্ভব হবে?  নাকি শিবসৈনিকদের আরাধ্য হয়ে থেকেই যাবে শেষমেষ সেই থ্যাকারে মিথ? মহারাষ্ট্র পলিটিক্যাল থ্রিলার শেষ হল? নাকি আগামী দিনে আসছে সিরিজ টু! 

1st     July,   2022
 
 
কলকাতা
 
রাজ্য
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ