নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: গত ১৩ জানুয়ারি ময়নাগুড়িতে লাইন থেকে ছিটকে গিয়েছিল বিকানির-গুয়াহাটি এক্সপ্রেস। উত্তরবঙ্গের ওই ভয়াবহ  দুর্ঘটনায় হতাহতের সংখ্যাও ছিল অনেক। এবার সেই দুর্ঘটনার ঠিক এক সপ্তাহের মাথায় রেল বোর্ডের এক গুরুত্বপূর্ণ সদস্যের স্বেচ্ছাবসরের আবেদন গ্রহণ করল রেলমন্ত্রক। দুর্ঘটনার বিষয়টি এখনও পর্যন্ত তদন্ত সাপেক্ষ হলেও প্রাথমিকভাবে অভিযোগের আঙুল উঠেছে সংশ্লিষ্ট ট্রেনটির ইঞ্জিন বা লোকোমোটিভের দিকেই। কেন আধুনিক এলএইচবি কোচের পরিবর্তে পুরনো আইসিএফ কোচ দিয়েই বিকানির-গুয়াহাটি এক্সপ্রেস ট্রেনটি চালানো হচ্ছিল, সেই প্রশ্নও উঠছে। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, রাহুল জৈন নামে রেল বোর্ডের যে গুরুত্বপূর্ণ সদস্যের স্বেচ্ছাবসরের আবেদন গৃহীত হয়েছে, তিনি ছিলেন রেল বোর্ডের রোলিং স্টক ও ট্র্যাকশনের দায়িত্বে।
রোলিং স্টক, অর্থাৎ রেলমন্ত্রকের যে বিভাগ দেশব্যাপী লোকোমোটিভ, ওয়াগন, কোচের দায়িত্ব সামলায়। স্বাভাবিকভাবেই গোটা বিষয়টিকে কেন্দ্র করে তুমুল জল্পনার সৃষ্টি হয়েছে। প্রশ্ন উঠছে যে উত্তরবঙ্গের ভয়াবহ ওই ট্রেন দুর্ঘটনার জেরে এটিই তাহলে প্রথম কোপ কোনও আধিকারিকের উপর? যদিও পুরো বিষয়টি নিয়ে প্রত্যাশিতভাবেই মুখে কুলুপ এঁটেছেন  আধিকারিকরা। উল্লেখ্য, গত ১৯ জানুয়ারি ওই আধিকারিকের ভিআরএস সংক্রান্ত যে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে রেল বোর্ড, সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে সংশ্লিষ্ট রেল বোর্ড সদস্য গত ১০ জানুয়ারি স্বেচ্ছাবসরের আবেদন জমা দিয়েছিলেন। যার অর্থ, উত্তরবঙ্গের দুর্ঘটনার আগে ওই আবেদন জমা পড়েছিল। কিন্তু যেভাবে দুর্ঘটনার অব্যবহিত পরেই সেই আবেদন গৃহীত হল, তাতেই জল্পনা দানা বেঁধেছে। রেলমন্ত্রকের শীর্ষ সূত্রে জানা যাচ্ছে, এর আগে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের কোপে পড়েছিলেন সংশ্লিষ্ট আধিকারিক।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির স্বপ্নের বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের টার্গেট পূরণ নিয়ে যখন হিমশিম খাচ্ছে রেলমন্ত্রক, সেইসময় এই ইস্যুতে আধিকারিকদের সঙ্গে পর্যালোচনা বৈঠকে বসেছিলেন রেলমন্ত্রী। রেল সূত্রের খবর, সেইসময়ই বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের কোচ তৈরির গতি খতিয়ে দেখে রেল বোর্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকের উপর নাকি চরম অসন্তুষ্ট হয়েছিলেন মন্ত্রী। এমনকী রেগে গিয়ে ভিআরএস নিয়ে নিতেও বলেছিলেন। এমনই জানিয়েছে রেলমন্ত্রক সূত্র। এবার ময়নাগুড়ির ট্রেন দুর্ঘটনার জেরে অতীতের সেই প্রেক্ষিতটাকেই টেনে এনে আবেদন পত্র গ্রহণের ব্যাপারে তাড়াহুড়ো করা হল কি না, সেই প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। -ফাইল ছবি