বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
দেশ
 

দুর্ঘটনার কারণ ট্রেনের
ঝুলতে থাকা যন্ত্রাংশই 
মনে করছেন অকুস্থলে কর্তব্যরত ইঞ্জিনিয়ার

নির্মাল্য সেনগুপ্ত, দোমোহনি: নিউ দোমোহনি ও নিউ ময়নাগুড়ি স্টেশনের মাঝে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনার পর কেটে গিয়েছে বেশ কয়েকঘণ্টা। শুক্রবার দিনভর রেলের তরফে দুর্ঘটনার কারণ নিয়ে কোনও স্পষ্ট বিবৃতি পাওয়া যায়নি। দিনভর রেলের তাবড় আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকলেও এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।  তবে ট্রেনটির কোনও ‘হ্যাঙ্গিং পার্টস’ বা ঝুলন্ত যন্ত্রাংশ দেখেই চালক দ্রুত ব্রেক কষেন বলে মনে করা হচ্ছে। তা থেকেই দুর্ঘটনা বলে অনুমান রেলেরই ইঞ্জিনিয়ারের। শুক্রবার এমনই সম্ভাবনার ইঙ্গিত দিয়েছেন দুর্ঘটনাস্থলে রেললাইন মেরামতির তদারকিতে নিযুক্ত সিনিয়র সেকশন ইঞ্জিনিয়ার (ফালাকাটা) বংশীলাল কর্মকার। এবার বিকানির-গুয়াহাটি এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনার কারণ নিয়ে শুরু হয়েছে চূড়ান্ত চাপানউতোর। এদিকে দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে রেলমন্ত্রী  অশ্বিনী বৈষ্ণব বলেন, প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে লোকোমোটিভে কিছু সমস্যা ধরা পড়েছে।  রেল ইঞ্জিন থেকে সেই যন্ত্রাংশটি খুলে পরীক্ষা করলে এ ব্যাপারে আরও তথ্য মিলবে। কমিশনার অব রেলওয়ে সেফটি ঘটনার তদন্ত শুরু করেছেন। 

তবে দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে প্রাথমিক পর্যবেক্ষণের কথা অকপটে জানিয়েছেন বংশীলালবাবু। তাঁর দাবি, দুর্ঘটনার কারণ ওই ঝুলন্ত যন্ত্রাংশ  রাইট ও লেফট রেলের মাঝে অর্থাৎ দু’লাইনের মাঝে স্লিপারের সঙ্গে আটকাচ্ছিল এবং রেলের গতিকে প্রতিরোধের চেষ্টা করছিল। যার জন্য দুর্ঘটনাস্থলের প্রায় এক কিলোমিটার রেলের স্লিপার বেঁকে, দুমড়ে যেতে থাকে। রেললাইনও বেঁকে যায়। যার জন্য দুর্ঘটনার সময় ট্রেনের যাত্রীরা প্রবল ঝাঁকুনি অনুভব করেন। তাঁর কথায়, নিউ দোমোহনি স্টেশন থেকে যখন বিকানের এক্সপ্রেস ১১০ কিমি বেগে ছুটছে, এমন সময় ধরলা নদীর ব্রিজ অতিক্রম করতেই ‘হ্যাঙ্গিং পার্টস’ বা ঝুলন্ত কোনও যন্ত্রাংশ লাইনের সঙ্গে জোরদার ঘষা লাগতে থাকে। যার চিহ্ন শুক্রবার স্পষ্ট দেখা গিয়েছে। সিমেন্টের তৈরি স্লিপার ট্রেনের কোনও যন্ত্রাংশের সঙ্গে ঘষা লেগে ভাঙতে ভাঙতে গিয়েছে এবং রেললাইন বেঁকেও গিয়েছে। আর ওই অভিঘাতের জেরেই ট্রেনচালক আপতকালীন ব্রেক কষেন, তখন ট্রেন দাঁড়ালেও একের পর এক কামরা হুড়মুড়িয়ে লাইনচ্যুত হয়ে যায়। কয়েকটি কামরা পাল্টি খেয়ে আশপাশের জলাশয় ও খেতের উপর গিয়ে পড়ে। একটি কামরা আরেকটি কামরার উপর উঠে দুমড়েমুচড়ে উঠে। 
বংশীলালবাবুর দাবি, ঝুলন্ত যন্ত্রাংশ দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রেনের ইঞ্জিন থেকে নাকি, কোনও বগি থেকে ঝুলে ছিল সেটাই অনুসন্ধানের বিষয়। তবে ইঞ্জিনিয়াররা নির্দিষ্টভাবে ট্রেনের কোন যন্ত্রাংশ ঝুলে ছিল, সেটাই খোঁজ করছেন। তিনি বলেন, দুর্ঘটনার পর বৃহস্পতিবার রাতে ট্রেনটি যে পথ ধরে এসেছে, সেই পথে অনুসন্ধান চালিয়েছে তাঁদের একটি টিম। জলপাইগুড়ি রোড থেকেই সেই হ্যাঙ্গিং পার্টস লেফট রেল ও রাইট রেলের মাঝের স্লিপার আঘাত করা শুরু করেছিল। কিন্তু সমস্যা হয়নি। কিন্তু ট্রেন ১১০ কিমি বেগে ছুটতে শুরু করার পরেই হ্যাঙ্গিং পার্টস লেফট রেল ও রাইট রেলের মাঝের স্লিপারে জোরে আঘাত করে। গতি বাধাপ্রাপ্ত হয়, ব্যাপক ঝাঁকুনি হয়। কিন্তু ট্রেনের গতিবেগে বেশি থাকায় ব্রেক কষতেই লাইন থেকে ছিটকে যায় কামরাগুলি।  এদিকে, দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রেনে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে যাত্রা করছিলেন উত্তম রায় নামে এক ব্যক্তি। জানা গিয়েছে, তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে চালক ও অন্যান্যদের বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা রুজু করেছে ময়নাগুড়ি জিআরপি।

15th     January,   2022
 
 
কলকাতা
 
রাজ্য
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ