নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: রাজ্যের উপর দিয়ে বয়ে চলা ১৭টি নদীর বিভিন্ন অংশে দূষণ মারাত্মক। বৃহস্পতিবার লোকসভায় লিখিতভাবে এই তথ্য দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। সেখানে বলা হয়েছে, সারা দেশের ৩২৩টি নদীর ৩৫১টি অংশকে (রিভার স্ট্রেচ) দূষিত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এক্ষেত্রে পর্যাপ্ত পরিকাঠামোর অভাবও মেনে নিয়েছে কেন্দ্র। এদিন লোকসভায় কেন্দ্রীয় জলশক্তিমন্ত্রী গজেন্দ্রসিং শেখাওয়াত লিখিতভাবে জানিয়েছেন, দেশজুড়ে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার যে পরিকাঠামোগত সীমা রয়েছে, শহুরে অঞ্চলে তার থেকে বহুগুণ বেশি বর্জ্য নিষ্কাশিত হচ্ছে। এতে নদীর পরিচ্ছন্নতার উপর ব্যাপক প্রভাব পড়ছে। দেশে নদী দূষণের যে ছবি লোকসভায় জলশক্তিমন্ত্রকের লিখিত জবাব থেকে স্পষ্ট হয়েছে, তাকে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছে তথ্যাভিজ্ঞ মহল।
পশ্চিমবঙ্গের উপর দিয়ে বয়ে চলা যে ১৭টি নদীর অংশকে সবথেকে দূষিত বলে চিহ্নিত করা হয়েছে, সেগুলি হল বিদ্যাধরী, মহানন্দা, চূর্ণি, দ্বারকা, দামোদর, জলঙ্গি, মাথাভাঙা, কাসি, বরাকর, দ্বারকেশ্বর, কালজানি, করোলা, ময়ূরাক্ষী, রূপনারায়ণ, শীলাবতি, তিস্তা এবং গঙ্গা। সারা দেশের মধ্যে সবথেকে বেশি দূষিত নদী অংশ রয়েছে মহারাষ্ট্রে। ৫৩টি। তারপর রয়েছে অসমে। ওই রাজ্যের উপর দিয়ে বয়ে চলা ৪৪টি নদী অংশকেই দূষিত বলে চিহ্নিত করেছে সরকার। অন্তত তেমনটাই উল্লেখ করা হয়েছে লোকসভায় পেশ করা পরিসংখ্যানে। তবে সংশ্লিষ্ট নদীগুলির নির্দিষ্ট করে কোন অংশগুলির দূষণ মারাত্মক, তার উল্লেখ এদিনের লিখিত জবাবে করেনি জলশক্তিমন্ত্রক। রাজ্যের উপর দিয়ে বয়ে চলা মাথাভাঙা, কালজানি, করোলা, তিস্তা নদী উত্তরবঙ্গের প্রকৃতির সঙ্গেই মিলেমিশে গিয়েছে।
এদিন কেন্দ্রীয় জলশক্তিমন্ত্রী লোকসভায় লিখিতভাবে জানিয়েছেন, সময়ে সময়ে কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ সারা দেশের নদীগুলির দূষণের পরিমাণ খতিয়ে দেখে সেইমতো রিপোর্ট প্রকাশ করে। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে পর্ষদ প্রকাশিত এই সংক্রান্ত সর্বশেষ রিপোর্টেই ওই পরিসংখ্যান সামনে এসেছে। মন্ত্রী জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের গত মার্চ মাসের রিপোর্ট থেকে জানা যাচ্ছে যে, দেশের শহুরে অঞ্চল থেকে প্রতিদিন ৭২ হাজার ৩৬৮ মিলিয়ন লিটার (এমএলডি) বর্জ্য নিষ্কাশিত হচ্ছে। অথচ বর্জ্য ব্যবস্থাপনার পরিকাঠামোগত সীমাই হচ্ছে ৩১ হাজার ৮৪১ এমএলডি। এই ব্যবধান প্রভাব ফেলছে নদীর দূষণ নিয়ন্ত্রণে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী লিখিতভাবে জানিয়েছেন, নদীর দূষণ রোধের লক্ষ্যে ন্যাশনাল রিভার কনজার্ভেশন প্ল্যান (এনআরসিপি) এবং নমামি গঙ্গের মতো দুটি কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে।
সংসদে ঢুকছেন লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লা। -পিটিআই