বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
রাজ্য
 

গোরু পাচারকাণ্ডে নজরে
এবার কেষ্ট ঘনিষ্ঠ কেরিম
হদিস বিপুল সম্পত্তির

সংবাদদাতা, বোলপুর: সায়গল, অনুব্রতর পর নানুরের তৃণমূল নেতা আব্দুল কেরিম খানের সম্পত্তির পরিমাণ দেখে চক্ষুচড়ক গাছ সিবিআইয়ের। ইতিমধ্যেই তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছেন সিবিআই ও ইডি আধিকারিকরা। বেশ কিছু নথিপত্র, পেনড্রাইভ সংগ্রহ করেছেন তাঁরা। অনুব্রত মণ্ডলের সম্পত্তি কার কাছে, কীভাবে রাখা রয়েছে, সেই সূত্র খুঁজে বের করতেই কেরিমের নাম জানতে পারে সিবিআই। নানুরের পাশাপাশি বোলপুর শান্তিনিকেতন এলাকায় নামে-বেনামে প্রচুর বাড়ি ও সম্পত্তি রয়েছে এই কেরিমের। ফের তার বাড়িতে সিবিআই হানা দিতে পারে বলে খবর। এনিয়ে তাঁর বক্তব্য জানতে এদিন ফোন করা হয় কেরিমকে। তিনি ‘কোনও মন্তব্য করব না’ বলে ফোনের লাইন কেটে দেন। 
গত ৩ আগস্ট শান্তিনিকেতনের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালায় সিবিআই। তখনই কেরিম খানের বাড়িতেও হানা দেয় ইডি ও সিবিআই। তার ঠিক ১০ দিনের মাথায় গ্রেফতার হন অনুব্রত মণ্ডল। অনেকেই মনে করছেন, অনুব্রতকে ধরতে আটঘাঁট বেঁধেই এগিয়ে ছিল সিবিআই। সেই কারণেই কেরিমের বাড়িতে তল্লাশি।  
কে এই আব্দুল কেরিম খান? নানুরের থুপসারা পঞ্চায়েতের প্রত্যন্ত সাঁতরা গ্রামে বাড়ি কেরিমের। সুচপুর গণহত্যা মামলার পর থেকেই রাজনৈতিক জীবন শুরু তাঁর। জেলা রাজনীতিতে তিনি বরাবরই অনুব্রত-অনুগামী। প্রথমে তাঁকে দায়িত্ব দেওয়া নানুরের। তখন উত্তপ্ত নানুর। কেরিমের হাতে ‘শান্ত’ হলে পুরস্কার স্বরূপ দেওয়া হয় জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষের পদ। বর্তমানে জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ হওয়ার পাশাপাশি নানুরের থুপসারা, নোয়ানগর-কড্ডা ও জলুন্দী পঞ্চায়েতের দায়িত্বে রয়েছেন কেরিম। অনুব্রতকে ‘বড়দা’ হিসেবেই মানেন তিনি। সেই মতো ‘দাদা’কে খুশি রাখতে কোনও কার্পণ্য করতেন না। প্রতিবছর তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবসে নানুরে আয়োজিত মিলন মেলায় অনুব্রতকে উপহারে ভরিয়ে দিতেন। কখনও মাথায় রুপোর মুকুট, কখনও প্রিয় দাদার হাতে তুলে দিতেন রুপোর তরোয়াল, রুপোর পাচন। দাদাও দু’হাত ভরে আশীর্বাদ করে গিয়েছেন সর্বদা। 
সেই সুবাদে পূর্ত দপ্তরের কর্মাধ্যক্ষ হিসাবে টেন্ডারেও বহু বেনিয়মের অভিযোগ উঠেছে কেরিমের বিরুদ্ধে। রাস্তা তৈরি সহ অন্যান্য কাজে নিজের পছন্দের ঠিকাদারদের কাজ পাইয়ে দিতেন বলেও অভিযোগ। অনলাইনে টেন্ডার জমা পরলেও দায়িত্ব কে পাবেন, তা স্থির করতেন কেরিম নিজেই। সেটা টাকার বিনিময়ে হতো বলেই তদন্তকারীদের ধারণা। তার একটা বড় অংশ প্রভাবশালীদের কাছে পৌঁছে যেত বলেও তাঁরা মনে করছেন। এরই পাশাপাশি বিরোধীদের অভিযোগ, নানুর সংলগ্ন অজয় নদের সকল বৈধ ও অবৈধ বালিঘাটের ‘অদৃশ্য নিয়ন্ত্রক’ কেরিমই। এখান থেকেও তিনি প্রচুর টাকা উপার্জন করেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। 
প্রাথমিক অভিযানে কেরিমের বিপুল সম্পতির হদিশ পেয়েছেন সিবিআই কর্তারা। নানুর, বোলপুর ও শান্তিনিকেতনে রয়েছে তাঁর একাধিক বিলাসবহুল বাড়ি। কোনওটা তাঁর নিজের নামে। আবার কোনওটা বেনামে। ‌রয়েছে ওষুধের দোকানও। সেটি অন্যের নামে বলে জানা গিয়েছে। বোলপুরের জামবুনি বাসস্ট্যান্ড এলাকায় রয়েছে দু’টি ফ্ল্যাট। শান্তিনিকেতনের উদয়নপল্লী ও সীমান্তপল্লীর মাঝামাঝি জায়গায় রয়েছে তাঁর প্রাসাদোপম বাড়ি। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছে, বাড়িটি নির্মাণে আনুমানিক খরচ হয়েছে প্রায় চার কোটি টাকা। বাড়িতে ব্যবহৃত মার্বেল ও গ্লাস নিয়ে আসা হয়েছে বেলজিয়াম থেকে। আলোকসজ্জার খরচ পড়েছে প্রায় সাত লক্ষ টাকা। 
গোরু পাচারেও নাম জড়িয়েছে কেরিমের। তদন্তে নেমে সিবিআই জানতে পেরেছে, গোরুর হাট চালানোর দায়িত্বে থাকা আব্দুল লতিফ খানের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে কেরিমের। ইলামবাজার গোরুর হাটের টাকা কেরিম খানের হাত ধরে পৌঁছত অনুব্রতর দেহরক্ষী সায়গল হোসেনের কাছে। তাঁর বাড়ি থেকে বাজেয়াপ্ত হওয়া মোবাইল ঘেঁটে এই দুজনের ঘন ঘন কথা বলার  তথ্য জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা।  ঝাড়খন্ড থেকে গোরুর সরবরাহ যাতে বন্ধ না হয়, সেই বিষয়টি দেখতেন করিম। 

14th     August,   2022
 
 
কলকাতা
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ