বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
রাজ্য
 

যুগাবসান
প্রয়াত তরুণ মজুমদার

নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: এনটিওয়ান স্টুডিও। বিকেল সাড়ে তিনটে। শববাহী গাড়িতে শায়িত তরুণ মজমুদার। স্বজনবিয়োগের বেদনা তখন ‘দাদার কীর্তি’র বিনির চোখেমুখে। নিজেকে আর সামলাতে পারলেন না দেবশ্রী রায়। আবেগের চোরাস্রোতে ভাসল যাবতীয় পেশাদারিত্ব। গলার কাছে কী যেন একটা বিঁধছে। বিনি বলে উঠল, ‘আরও একবার পিতৃহারা হলাম। এ অভাব পূরণ হওয়ার নয়। বাংলা সিনেমায় শেষ হল একটা যুগ।’ দেবশ্রীর মতোই মন ভেঙেছে তনুবাবুর সহকারী পরিচালক অরিন্দম লাহিড়ি, মিহির সরকারের। দীর্ঘ তিন সপ্তাহ লড়াই শেষে সোমবার সকাল ১১-১৭ মিনিটে এসএসকেএমে থামল তাঁর ‘সংসার সীমান্ত’। কিডনি, হার্ট এবং খাদ্যনালীতে সমস্যা ছিল তরুণবাবুর। শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাওয়ায় কৃত্রিম শ্বাসযন্ত্রের সাহায্য নিতে হয়েছিল তাঁকে। শেষ চেষ্টা। কিন্তু বিফল। সোমবার ‘আলো’ নিভল সিনেমাপাড়ার। শেষ শ্রদ্ধায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, তরুণ মজুমদারের প্রয়াণ চলচ্চিত্র জগতে এক অপূরণীয় ক্ষতি। আমি তাঁর পরিবার-পরিজন ও অনুরাগীদের আন্তরিক  সমবেদনা জানাচ্ছি।
১৯৩১’এর ২২ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের বগুড়ায় জন্ম তরুণবাবুর। সত্যজিৎ-ঋত্বিক-মৃণালের আবর্তে নিজেকে কোনওদিনই রাখতে চাননি তরুণ মজুমদার। শিল্প নয়, তাঁর কাছে চলচ্চিত্র ছিল বিনোদনের চালচিত্র। বিন্দুমাত্র আঁতলামো না করেই তনুবাবুর ঝুলি সমৃদ্ধ পাঁচটি জাতীয় পুরস্কারে। ১৯৯০’এ পেয়েছেন পদ্মশ্রী। সহজ-সরল পথেই চিরকাল তাঁর ছবি। অহেতুক কালোয়াতি একেবারেই পছন্দ করতেন না। জীবনপুরের ওপারে পৌঁছেও তা বজায় থাকল। 
হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, ইন্দ্রনীল সেন ও সিপিএম নেতা কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়। একে একে হাজির হন রবীন দেব, সুজন চক্রবর্তী, বিমান বসু, সুকান্ত মজুমদাররা। এনটিওয়ান স্টুডিওয় শেষ শ্রদ্ধা জানান সৃজিত মুখোপাধ্যায়, শিবাজি চট্টোপাধ্যায়, দেবদূত ঘোষ, শঙ্কর চক্রবর্তীরা। প্রণামেই শুরু, আর শেষও। কারণ, মৃত্যুর পর ফুল-মালা থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে চেয়েছিলেন তরুণ মজুমদার। এমনকী, শেষ ইচ্ছেকে সম্মান দিতেই তাঁর মরদেহ এনটিওয়ানের মাটি ছোঁয়নি। ওই স্টুডিওতেই যে তাঁর অফিস। আর আজ তার দরজায় ঝুলছে ছোট্ট তালা। সেখানেই রয়েছে একগোছা লাল গোলাপ, আর শোকবার্তা। 
সোমবার সকালে শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। শুনেই হাসপাতালে ছুটে গিয়েছিলেন তরুণবাবুর স্ত্রী সন্ধ্যা রায়। কিন্তু শেষ দেখা হয়নি। মৃত্যুর পর দেহদান করতে চেয়েছিলেন ‘পথভোলা’ মানুষটি। পরিবারের সদস্যরাও তাই চেয়েছেন। এক নিকটাত্মীয়কে বলতে শোনা গেল, ‘উনি চেয়েছিলেন মরদেহর সঙ্গে যেন রবি ঠাকুরের গীতাঞ্জলি থাকে।’ প্রিয় লাল পতাকা, আর কবিগুরুর অমর সৃষ্টি নিয়েই অনন্ত ঘুমে শায়িত বাঙালির প্রেম-পারিবারিক গল্পের রূপকার তরুণ মজুমদার।

5th     July,   2022
 
 
কলকাতা
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ