বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
রাজ্য
 

পারবে পুলিসই, রাজ্যের প্রতি
সিবিআইয়ের আস্থা হাইকোর্টে
ভিন্ন চিত্র শিশু পাচার মামলায়

নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: এ যেন উলট পুরাণ! শিশু পাচারের মতো গুরুত্বপূর্ণ মামলা হাতে নিতে নারাজ সিবিআই। বরং এই কেন্দ্রীয় সংস্থা আস্থা রাখছে রাজ্য পুলিসের তদন্তের উপরেই। সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টে এমন দাবি করেছে তারা। সিবিআই তদন্তের দাবিতেই করা হয়েছিল মামলা। তার শুনানিতে এজলাসে দাঁড়িয়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আইনজীবী বলেছেন, ‘এই  ঘটনায় রাজ্য পুলিসই তদন্ত করে সমাধানে পৌঁছতে সক্ষম।’ সাম্প্রতিক অতীতে ভোট পরবর্তী হিংসা, গোরু-কয়লা পাচার থেকে শুরু করে শিক্ষা সংক্রান্ত দুর্নীতি, বগটুই-ঝালদা কাণ্ড, এমনকী তপন দত্ত হত্যা মামলাতেও তদন্তভার গিয়েছে সিবিআইয়ের কাছে। আর সব ক্ষেত্রে তারা দফায় দফায় জেরা করেছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের একাধিক শীর্ষ নেতাকে। এখন সেই সিবিআই উল্টে রাজ্য পুলিসে আস্থা রাখায় অবাক রাজ্যের আইনজীবী মহল। শেষ কবে এমন ঘটনা ঘটেছে, মনে করতে পারছেন না তাঁরা। 
এই সূত্রেই উঠছে একাধিক প্রশ্ন। তবে কি একাধিক মামলার তদন্তভারে নাজেহাল সিবিআই? নাকি তাদের কাছে পর্যাপ্ত লোকবল নেই? সে কারণেই কি নতুন কোনও তদন্তের দায়িত্ব থেকে এড়িয়ে যেতে চাইছে তারা? রাজনৈতিক মহলের দাবি, নোবেল থেকে যে ব্যর্থতা শুরু হয়েছিল, সিবিআই সেই গতিতে লাগাম দিতে পারেনি। তদন্ত হয়েছে, দোষী সাব্যস্ত নয়। তাই ব্যর্থতা ঢাকা দিতেই ব্যাকফুটে যাওয়ার ঘটনা নয় তো? দেখা যাচ্ছে, সিবিআই অনুমোদিত কর্মী সংখ্যা ৭২৭৩। যদিও সেন্ট্রাল ভিজিল্যান্স কমিশনের (সিভিসি) সর্বশেষ রিপোর্ট অনুযায়ী, ১৩৭৪টি পদ এখনও খালি। আধিকারিক এবং কর্মী মিলিয়ে মোট ৫৮৯৯ জন যাবতীয় তদন্তভার সামলাচ্ছেন। সাম্প্রতিক সময়ে এরাজ্যে একগুচ্ছ মামলা গিয়েছে তাঁদের হাতে। এছাড়া সারদা, নারদ সহ বেশ কিছু পুরনো মামলা তো রয়েছেই। সূত্রের খবর, কলকাতা শাখায় কর্মী সংখ্যা মেরেকেটে দুশোর বেশি নয়। ফলে নতুন মামলা ঘাড়ে চাপলে চাপ যে আরও বাড়বে, তা নিশ্চিত।
২০১৪-র জুনের পর থেকে সিবিআইয়ের কলকাতা শাখায় মোট ৩০৩টি এফআইআর দায়ের হয়েছে। ভোট পরবর্তী হিংসার ক্ষেত্রেই সংখ্যাটা অন্তত ৫০। রিপোর্টে আরও উল্লেখ, ২০২০ সাল পর্যন্ত সিবিআইয়ের হাতে থাকা ১১১৭টি মামলার তদন্তপ্রক্রিয়া এখনও বাকি। এছাড়াও বিভিন্ন আদালতে সিবিআইয়ের হাতে থাকা মোট ৯৭৫৭টি মামলার বিচার শেষ হয়নি। এর মধ্যে ৬৪৭৯টি দুর্নীতি সংক্রান্ত। সেগুলির ৮০ শতাংশ অর্থাৎ ৫১৯৩টি তিন বছরেরও বেশি পুরনো। এছাড়াও জমে ১০ বছরের বেশি পুরনো দু’হাজারের বেশি মামলা। ২০২০ সালে নয়া ৫৯৮টি এফআইআর করেছে সিবিআই। চলতি বছর সেই সংখ্যা বেড়েছে। এই কারণে সম্প্রতি বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ও সিবিআই তদন্তের প্রতি সংশয় প্রকাশ করেছেন। 
এবার কোন মামলায় রাজ্য পুলিসের তদন্তে আস্থার কথা বলেছে সিবিআই? আরামবাগের বাসিন্দা মামলাকারী সুভাষ লাহার অভিযোগ ছিল, তাঁর পুত্রবধূ সুস্থ শিশুর জন্ম দিয়েছিলেন। কিন্তু নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ জানায় শিশুটি অপরিণত ছিল এবং পরে তার মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু মৃতদেহ পরিবারকে হস্তান্তর করা হয়নি।  এনিয়ে আরামবাগ থানায় অভিযোগ জানিয়ে কাজ না হওয়ায় হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন সুভাষবাবু। হাইকোর্ট ঘটনায় ডিআইজি সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দেয়। কিন্তু তা কার্যকর হয়নি। কাজেই সিবিআই তদন্তের দাবিতে সুভাষবাবু ফের আদালতের যান। সম্প্রতি বিচারপতি শম্পা সরকারের এজলাসে সেই মামলাতেই সিবিআইয়ের আইনজীবী তথা অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল ধীরজ ত্রিবেদী রাজ্য পুলিসের উপর আস্থার কথা শোনান। মামলাকারীর আইনজীবী নীলাদ্রি শেখর ঘোষের বক্তব্য, তদন্তকারী সংস্থার তরফে এমন বক্তব্য অপ্রত্যাশিত।

1st     July,   2022
 
 
কলকাতা
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ