বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
রাজ্য
 

ইঞ্জিন ত্রুটিতেই দুর্ঘটনা,
শিকেয় ট্র্যাক সংস্কারও
কেন্দ্রের উদাসীনতা প্রকাশ্যে

নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি ও জলপাইগুড়ি: ইঞ্জিনে যান্ত্রিক ত্রুটি থেকেই দুর্ঘটনা। শুক্রবার দুর্ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে প্রাথমিকভাবে এমনই ইঙ্গিত দিলেন স্বয়ং রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। বৃহস্পতিবার বিকেলে জলপাইগুড়ির দোমোহনিতে ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ১৫৬৩৩ আপ বিকানির-গুয়াহাটি এক্সপ্রেস। ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে এদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত ন’জন যাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। জেলাশাসক জানিয়েছেন, আহতের সংখ্যা ৪৬। নর্থ-ইস্ট ফ্রন্টিয়ার রেল অবশ্য এক বিবৃতিতে জানায়, ৩৬ জন বর্তমানে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। স্বয়ং মন্ত্রী ইঞ্জিনে ত্রুটির কথা বলায় আঙুল উঠেছে রেলের গাফিলতির দিকে। কেন্দ্রের উদাসীনতাকেও দায়ী করছে অনেকে। গত কয়েকটি অর্থবর্ষে উত্তরবঙ্গ সহ বাংলার একাধিক জায়গায় রেলওয়ে ট্র্যাক নবীকরণের জন্য প্রায় কোনও বরাদ্দই করা হয়নি। ফলে এই দুর্ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রশ্নের মুখে রেল বোর্ড।
শুক্রবার সকাল পৌনে দশটা নাগাদ রেলের শীর্ষকর্তাদের নিয়ে রেলমন্ত্রী দোমোহনি পৌঁছন। লাইনচ্যুত রেকগুলি খুঁটিয়ে পরিদর্শন করেন অশ্বিনী বৈষ্ণব। পরিদর্শন শেষে তিনি বলেন, ‘আমি নিজে সব খতিয়ে দেখেছি। প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে লোকোমোটিভে (ইঞ্জিনে) কিছু যান্ত্রিক সমস্যা নজরে এসেছে। ক্ষতিগ্রস্ত যন্ত্রাংশগুলি সংগ্রহ করা হচ্ছে। বিস্তারিত তদন্ত করছে কমিশন অব রেলওয়ে সেফটি। আগামী দু’-তিন দিনের মধ্যে ঘটনার প্রাথমিক কিছু তথ্য পাওয়া যাবে।’ পরে ময়নাগুড়ি হাসপাতাল, জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজ ও উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি থাকা জখম যাত্রীদের দেখতে যান রেলমন্ত্রী। হাসপাতালের ব্যবস্থা দেখে তিনি সন্তোষপ্রকাশ করেন। রেলবোর্ড জানিয়েছে, ইতিমধ্যে সামান্য আঘাত প্রাপ্ত ২৬ যাত্রীর হাতে ২৫ হাজার টাকা করে তুলে দেওয়া হয়েছে। গুরুতর আহত ১০ জন পেয়েছেন এক লক্ষ টাকা করে সাহায্য। মৃত ন’জনের পরিবারের হাতে ৫ লক্ষ টাকা করে তুলে দেওয়ার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।
ইঞ্জিনের যন্ত্রাংশ খুলে রেললাইনের স্লিপারে আঘাতের জেরেই বিপত্তি বলে অনুমান সেকশন ইঞ্জিনিয়ারদের। লোকো পাইলট আপৎকালীন ব্রেক কষায় হুড়মুড়িয়ে লাইনচ্যুত হয়ে যায় ইঞ্জিনের পরের ১২টি কামরা। ট্রেনটি ডব্লুএপি-ফোর বা ওয়াপ-ফোর ইঞ্জিনে চলছিল। প্রায় ৬-৭ বছর আগে এই ধরনের ইঞ্জিন তৈরি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বর্তমানে ওয়াপ-সেভেন ইঞ্জিন চলে এসেছে রেলের হাতে। ওয়াপ-ফোর ইঞ্জিনে চারটি ট্র্যাকশন মোটর থাকে। তার একটি খুলে গিয়েছিল বলেই মনে করা হচ্ছে। যদিও বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করতে নারাজ রেল সেফটি কমিশনার। 
এই দুর্ঘটনার সঙ্গে ট্র্যাকের সম্পর্ক নেই বলে রেলমন্ত্রী দাবি করলেও এই বিষয়ে কেন্দ্রের উদাসীনতা কিন্তু চাপা দেওয়া যাচ্ছে না। ২০২১-২২ অর্থবর্ষের পিঙ্ক বুক অনুযায়ী উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের বহু রেল ট্র্যাক রিনিউয়াল প্রকল্পে বাজেট বরাদ্দের পরিমাণ আক্ষরিক অর্থেই শূন্য। রানিনগর-জলপাইগুড়ি-নিউ বঙ্গাইগাঁও কিংবা আলিপুরদুয়ার জংশন-শিলিগুড়ি জংশনের প্রায় সাড়ে পাঁচ কিমি অংশ। ওল্ড মালদহ-কুমেদপুরের ১২.২০ কিমি ট্র্যাক নবীকরণে বরাদ্দ তথৈবচ। পূর্ব রেল ও দক্ষিণ-পূর্ব রেলের হালও এক। এবার বাজেটে রেল সুরক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়ানো হতে পারে বলেই খবর। কিন্তু সেই তালিকায় কি ট্র্যাক রিনিউয়াল থাকবে? সেটাই লাখ টাকার প্রশ্ন।

15th     January,   2022
 
 
কলকাতা
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ