বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
রাজ্য
 

টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত দক্ষিণবঙ্গের
জনজীবন, দুর্যোগের বলি ১২

নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: দুর্যোগের বলি হলেন ১২ জন। শুক্রবার রাত পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী, রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় বৃষ্টি ও দুর্যোগের জেরে মোট ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। কেউ মারা গিয়েছেন দেওয়াল চাপা পড়ে, কেউ ঘরে জমা জলে দাঁড়িয়ে বিদ্যুতের সুইচে হাত দেওয়ায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়েছেন। পাশাপাশি বিভিন্ন জেলা থেকেও বন্যা পরিস্থিতি, জমা জলের দুর্ভোগের খবর পাওয়া গিয়েছে। কলকাতা সংলগ্ন শহরাঞ্চল তো বটেই, জেলা শহরগুলিতেও জলযন্ত্রণা থেকে মুক্তি মেলেনি মানুষের। তবে আজ থেকে বৃষ্টির প্রকোপ কমে আসবে রাজ্যে। কারণ গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের উপর যে নিম্নচাপ অবস্থান করছিল, সেটি দ্রুত সরে যাচ্ছে বিহার ও উত্তরপ্রদেশের দক্ষিণ অংশের দিকে। আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, নিম্নচাপের জেরে দক্ষিণবঙ্গ ও রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলিতে আর বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। তবে বর্ষার স্বাভাবিক বৃষ্টি হতে পারে। আজ দার্জিলিং ও কালিম্পং জেলায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। পাশাপাশি উত্তর বঙ্গোপসাগরে ঝোড়ো হাওয়ার দাপট থাকবে। তাই মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। 
দেওয়াল চাপা পড়ে ও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা গিয়েছেন এবার। দেওয়াল চাপা পড়ে বাঁকুড়ায় দু’জন, পশ্চিম মেদিনীপুর, পশ্চিম বর্ধমান ও মুর্শিদাবাদে আরও তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। আসানসোলে দেওয়াল চাপা পড়ে পাঁচ বছরের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় এক মহিলা মাটির দেওয়াল মেরামতির সময় সেটি চাপা পড়ে মারা যান। মুর্শিদাবাদের ভরতপুরে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে তড়িদাহত হয়ে একজন মারা গিয়েছেন। এছাড়াও হাওড়ায় ঘরের জমা জলে দাঁড়িয়ে বিদ্যুতের সুইচে হাত দিলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন এক ব্যক্তি। এই জেলাতেই রাস্তায় জমা জলের কারণে সাইকেল থেকে পড়ে গিয়ে এক শ্রমিক মারা গিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। খড়্গপুরেও এক ভবঘুরের মৃত্যু হয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় বাড়ির সামনে জমা জলে সাপের কামড়ে মারা যান একজন। এছাড়াও পুরুলিয়া ও শান্তিপুরে দু’টি ঘটনায় বাড়ির ছাদের একাংশ ধসে দুই শিশু গুরুতর জখম হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরের দাউদপুরেও এক ব্যক্তি দেওয়াল চাপা পড়ে জখম হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার প্রায় সারারাত ধরেই অঝোরে বৃষ্টি হয়েছে। শুক্রবার সকাল থেকে বৃষ্টির দাপট কিছুটা কমলেও ভোগান্তি কমেনি মানুষের। হাওড়া শহরের বেশিরভাগ রাস্তা এদিনও ছিল জলের তলায়। ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থা কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। উলুবেড়িয়া, বাগনান, আমতার নিচু এলাকাতে জল জমেছিল এদিনও। হুগলির শেওড়াফুলিতে জিআরপি বারাকে জল ঢুকে যায়। শ্রীরামপুরের ২৫ নম্বর ওয়ার্ড, মানকুণ্ডুতে জমা জলে জেরবার মানুষ বিক্ষোভ দেখান। চুঁচুড়া, ব্যান্ডেল, শ্রীরামপুর স্টেশনের রেলওয়ে আন্ডারপাস এদিনও জলমগ্ন ছিল। উত্তর ২৪ পরগনার বরানগর, কামারহাটি, পানিহাটি, খড়দহ পুরসভার বিস্তীর্ণ অংশ জলমগ্ন ছিল এদিন রাত পর্যন্ত। একাধিক হাসপাতাল চত্বর, রেলের ওয়ার্কশপেও জল জমে থাকতে দেখা যায়। মধ্যমগ্রাম, বারাসতের নিচু এলাকাগুলির অবস্থাও একই। দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুর, বারুইপুর, ক্যানিং এলাকার বহু অংশে অস্থায়ীভাবে পাম্প বসিয়েও সব জল বের করা সম্ভব হয়নি। 
গোটা দক্ষিণবঙ্গে অজস্র কাঁচাবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বহু মানুষকে ত্রাণ শিবিরে সরানো হয়েছে। বীজতলা থেকে শুরু করে সদ্য চারা রোপণ করা জমি জলের তলায় চলে যাওয়ায় চাষিদের মাথায় হাত। বাঁকুড়ার ইন্দাস, কোতুলপুর ও পাত্রসায়র ব্লকে বিস্তীর্ণ এলাকা এখনও জলমগ্ন। সেখানে প্রায় ৫০০ জনকে উদ্ধার করে ত্রাণ শিবিরে রাখা হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুর, দাসপুর, ঘাটাল ও চন্দ্রকোণার বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ভারী বৃষ্টিতে শিলাবতী নদী ফুলেফেঁপে উঠেছে। যার ফলে ঘাটাল মহকুমায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। কেশপুরের দুর্গত মানুষজনকে উদ্ধার করতে সকাল থেকেই নৌকো নামাতে হয়। বিকেলে এনডিআরএফ টিম গিয়ে পৌঁছয় সেখানে। বীরভূমে কোপাই নদীর জলে কঙ্কালীতলা মন্দির প্রাঙ্গণ প্লাবিত হয়েছে।
 প্লাবিত বোলপুরের কঙ্কালীতলা। -ইন্দ্রজিৎ রায়

31st     July,   2021
 
 
কলকাতা
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ