বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
রাজ্য
 

টানা বর্ষণে বিপর্যস্ত রাজ্য
মৃত ২, দুর্যোগ চলবে আজও

নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বুধবার থেকে টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত রাজ্যের বেশিরভাগ অংশ। মূলত দক্ষিণবঙ্গ এবং পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলির জনজীবন বৃষ্টিতে জেরবার। শহরাঞ্চলে জমা জলে ভোগান্তি বেড়েছে মানুষের। জেলাগুলির নানা জায়গায় ব্যাপক বৃষ্টির জেরে তৈরি হয়েছে বন্যা পরিস্থিতি। কলকাতায় তড়িদাহত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন এক ব্যবসায়ী। বুধবার রাত রাত ৯টা ১৫ নাগাদ কলকাতার জোড়াবাগান থানা এলাকার দর্পনারায়ণ ঠাকুর স্ট্রিটে তড়িদাহত হয়ে কাশীনাথ জ্যোতি (৫৬) নামে ওই ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়। তাঁর বাড়ি হাওড়ার পূর্ব কুমোরপাড়ার তাজপুরে বলে জানিয়েছে পুলিস। এছাড়া, বর্ধমানের গলসির রামনগর গ্রামে দেওয়াল চাপা পড়ে এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। মৃতার নাম জাহেদা বিবি (৬২)। এদিন বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ আলিপুর পুলিস আদালত চত্বরে দু’জন আইনজীবী বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে জখম হন। তাঁদের নাম অরোদীপ মুখোপাধ্যায় এবং সুপ্রতিম বারিক। 
উদ্বেগ বাড়িয়ে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর জানিয়ে দিয়েছে, এই দুর্যোগ চলবে আজ, শুক্রবারও। আজ রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলিতে বৃষ্টির প্রকোপ বাড়বে। বৃষ্টি হবে ঝাড়খণ্ডেও। শনিবার সকাল থেকে আবহাওয়ার উন্নতি হতে পারে বলে জানিয়েছে তারা। একটি সুস্পষ্ট নিম্নচাপ বলয় পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের উপর অবস্থান করছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় নিম্নচাপ বলয়টি পশ্চিম দিকে সরে গিয়ে ঝাড়খণ্ড এবং বিহারের উপর অবস্থান করবে। এর জেরে আজ ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে পুরুলিয়া জেলায়। বাঁকুড়া, পশ্চিম বর্ধমান, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।  
বুধবার রাত থেকে টানা বৃষ্টিতে কয়েক ঘণ্টার জন্য জলমগ্ন হয়ে পড়ে কলকাতার বিভিন্ন অংশ। বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিট, সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ, ঠনঠনিয়া, সুকিয়া স্ট্রিট, ট্যাংরা, তপসিয়া, বাইপাস ও লাগোয়া বিভিন্ন এলাকায় জল জমে। কৈলাস কবিরাজ লেন ছাড়াও আরও দু’টি জায়গায় বাড়ি ভেঙে পড়ে কয়েকজন সামান্য জখম হন। হাওড়া শহরের বহু জায়গায় জল জমে জনজীবন বিপর্যস্ত। বালি থেকে বোটানিক্যাল গার্ডেন, সালকিয়া থেকে সাঁতরাগাছি—প্রায় সর্বত্র কোথাও হাঁটুসমান, কোথাও এক কোমর জল দাঁড়িয়ে যায় বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই। হুগলির উত্তরপাড়া, শ্রীরামপুর, চুঁচুড়া সহ শহরাঞ্চলগুলিতে একইরকম বেহাল অবস্থা চোখে পড়েছে। নিকাশির নোংরা জল রাস্তা উপচে ঘরের মধ্যে গিয়ে ঢুকেছে। এই দুই জেলার রেল স্টেশনগুলির বেশিরভাগ আন্ডারপাসই পাঁচ-সাত ফুট জলের তলায় চলে গিয়েছে। গ্রামীণ হাওড়ার রঘুনাথপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বলরামপোতা গ্রামের প্রায় ৪০টি বাড়ি জলমগ্ন হয়েছে। তারকেশ্বর পুরসভার ৬ ও ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা এদিন সকাল থেকেই জলবন্দি। 
উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার বেশ কিছু এলাকায় রীতিমতো বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বরানগর থেকে বারাকপুর, বারাসত থেকে বসিরহাট—জলচিত্রে মিলে গিয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা। মহেশতলা, বারুইপুর, সোনারপুর, ক্যানিংয়ের পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নন্দীগ্রাম, হলদিয়া, পাঁশকুড়া, তমলুকের পরিস্থিতি দুশ্চিন্তা বাড়িয়েছে স্থানীয় প্রশাসনের। বৃহস্পতিবার বৃষ্টির পর ভোগান্তি আরও বেড়েছে। নন্দীগ্রামের দাউদপুরে বাড়ি ভেঙে এক দম্পতি জখম হন। পাঁশকুড়া পুরসভা এলাকাতেও দু’টি বাড়ি ভেঙে পড়ে। বর্ধমান শহরে বহু বাড়িতে জল ঢুকে যাওয়ায় অনেকেই ঘরছাড়া। গলসির বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। রায়নার একলক্ষ্মীতে দ্বারকেশ্বর নদ ফুঁসছে। এর জেরে ওলিবাজারে দেব খালের উপরের কাঠের ব্রিজ ভেসে যায়। বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর মহকুমার কোতুলপুর, জয়পুর, পাত্রসায়র ও ইন্দাসের নিচু এলাকায় জল জমে। পাত্রসায়রের জামকুড়ির হরিণমুড়িতে খালের উপর কালভার্ট জলের তোড়ে ভেঙে যায়। পরিস্থিতি এমনই যে, বিভিন্ন জায়গায় ত্রাণের প্রয়োজন হয়ে পড়েছে।  

30th     July,   2021
 
 
কলকাতা
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ