বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
রাজ্য
 

ছুঁতে পারেনি কলেরা, করোনা আবহেও
দিব্যি রয়েছেন বহরমপুরের শতায়ু ভবানী

সুখেন্দু পাল, বহরমপুর: দেখেছেন ইংরেজ শাসন। সাক্ষী রয়েছেন দেশভাগেরও। ১০০বছর আগে কলেরার তাণ্ডবও চাক্ষুষ করেছেন। কিন্তু তাঁকে ছুঁতে পারেনি মহামারী। বর্তমানে করোনা দাপটের মধ্যেও দিব্যি রয়েছেন বহরমপুরের রাজধরপাড়ার খট্টাডাঙা গ্রামের ভবানী কোনাই। দ্বিতীয় ঢেউয়ে এখনও পর্যন্ত করোনা তাঁকে স্পর্শ করতে পারেনি। এমনকী, এই বয়সে তাঁর শরীরে কোনও রোগ নেই। রোজ কোনও ওষুধ খাওয়ার প্রয়োজন হয় না। করোনার হাত থেকে বাঁচতে নিজেকে গৃহবন্দি রাখেননি। আর মাস্ক পরার বালাই নেই। মনের জোর অসম্ভব। তার জোরে দিব্যি সুস্থ রয়েছেন। শতায়ু ‘যুবতী’ ভবানীদেবীর মানসিক জোর যে কোনও টিনেজারকে হার মানাবে।
চশমা ছাড়াই এখনও চোখে স্পষ্ট দেখতে পান ওই বৃদ্ধা। ঘড়ি ধরে সকাল ৬টায় ঘুম থেকে ওঠেন। আগে বাড়ির কাজেও হাত লাগাতেন। তবে কয়েক মাস আগে পড়ে গিয়ে পায়ে চোট পান। তাই কিছুদিনের জন্য তাঁর চলাফেরার গতি কিছুটা কমেছে। তাতেও মনোবলে চিড় ধরেনি। প্রতিবেশীরা বলেন, পা পিছলে পড়ে যাওয়ার জন্য তিনি কিছুদিনের জন্য বাড়িতে বন্দি রয়েছেন। তা না হলে তিনি পাড়ায় সকলের বাড়িতেই যেতেন। অনেক অজানা কথা বলতেন। তাঁর স্মৃতিশক্তিও অত্যন্ত প্রবল। ভবানীদেবীর দুই ছেলে ও ছয় মেয়ে। বড় ছেলের বয়স ৮০ পেরিয়েছে। এমনকী, এক নাতনির মেয়েরও বিয়ে হয়ে গিয়েছে।
বড় ছেলে বাদল কোনাই বলেন, মা সব কিছুই খান। সকালে উঠেই চায়ের সঙ্গে বিস্কুট চাই। একটু বেলা হলেই মুড়ি। তেলেভাজা খেতেও তিনি পছন্দ করেন। বাড়িতে যা রান্না হয়, তা দিয়েই ভাত খান। মাকে কোনওদিন অসুস্থ হতে দেখিনি। আগে বাড়ির সব কাজ করতেন। ভোরের আলো ফুটলেই তাঁর দিন শুরু হয়ে যেত। তবে রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়েন। চোট পাওয়ার জন্য এখন মায়ের পায়ের ব্যথা রয়েছে। কথাও কিছুটা জড়িয়ে যাচ্ছে। তবে আমাদের বিশ্বাস, মা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন। 
বৃদ্ধার এক নাতবউ রুবি কোনাই বলেন, উনি লাঠি ছাড়াই হাঁটাচলা করেন। এক জায়গায় বেশিক্ষণ থাকতে পছন্দ করেন না। পায়ের চোট পাওয়ার জন্য কষ্টে রয়েছেন। বাইরে যাওয়ার জন্য চিৎকার করেন। করোনার সময় আমরা আতঙ্কে আছি। কিন্তু উনি ভয় পান না। কথায় কথায় বলেন, অনেক রোগ দেখেছি। কিছু হয়নি। করোনাও কিছু করতে পারবে না। প্রথম ঢেউয়ের সময় তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ ছিলেন। সেই সময় পাড়ার লোকজনদেরও মনোবল জোগাতেন। ভবানীদেবীও দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, আমি শীঘ্রই সুস্থ হয়ে উঠব। 
প্রতিবেশীরা বলেন, সকলেই করোনার ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে রয়েছে। কিন্তু ভবানীদেবী সে সবের তোয়াক্কা করেন না। কলেরার মতো কোভিডও তাঁকে ছুঁতে পারবে না বলেই গ্রামবাসীদের বিশ্বাস। তাঁর এই শক্তি সকলকে প্রেরণা জোগায়।

15th     June,   2021
 
 
কলকাতা
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ