বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
রাজ্য
 

তৃণমূলের ভোটব্যাঙ্কে
চিড় ধরেনি, বরং বেড়েছে

তন্ময় মল্লিক: বিজেপি লোকসভা ভোটে জিতলেও তৃণমূল কংগ্রেসের মতুয়া ভোটে থাবা বসাতে পারেনি। ভোটের পরিসংখ্যান বলছে, সর্বাধিক মতুয়া প্রভাবিত বনগাঁ লোকসভা আসনে তৃণমূল প্রার্থী পরাজিত হলেও তাঁদের ভোট কমেনি। সিপিএমের ভোট ধুয়েমুছে গেরুয়া শিবিরে যাওয়ার কারণেই বিজেপি জিতেছিল। সেই সুযোগে তৃণমূলের মতুয়া ভোটে ধস নেমেছে বলে বিজেপি প্রচার করছে। কিন্তু বাস্তবটা হল উল্টো। ২০১৫ সালে উপনির্বাচনের তুলনায় ২০১৯ সালে তৃণমূলের ভোট বেড়েছে ৩৬ হাজার। অর্থাৎ তৃণমূলের মতুয়া ভোট আছে তৃণমূলেই।
ভোটে হাওয়া তোলায় বিজেপির জুড়ি মেলা ভার। ২০১৯ সালে পুলওয়ামা এবং বালাকোটকে ভোটের ইস্যু করে বিজেপি প্রমাণ করে দিয়েছে, একাজে তাদের ধারেকাছে কেউ নেই। এবার গেরুয়া শিবিরের প্রচার, মতুয়া ভোট বিজেপিতে চলে গিয়েছে। নাগরিকত্ব আইনই নাকি তার কারণ।
গত কয়েক মাসে বিজেপি নেতাদের আচরণ খতিয়ে দেখলেই বোঝা যাবে, সিএএ ইস্যুটা বিজেপি মতুয়াদের জোর করে গেলাতে চাইছে। প্রথমে হাইপ তৈরি। তারপর তাতে জল ঢালা। বিজেপির সাংসদ শান্তনু ঠাকুর প্রথমে সিএএ ইস্যুতে বেসুরো হলেন। বিভিন্ন সভায় গিয়ে এমন কিছু কথাবার্তা বললেন যাতে কী হয়, কী হয় ভাব তৈরি হল। তারপর কৈলাস বিজয়বর্গীয়ের সঙ্গে ঘটা করে বৈঠক। অমিত শাহের সভায় আশ্বাস, কোভিডের কারণে নাগরিকত্ব দেওয়ায় সমস্যা। বিজেপি নাগরিকত্ব দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সঙ্গে সঙ্গে কাঁসর, ঘণ্টা, জয়ডঙ্কা বাজিয়ে বিজেপি কর্মীদের উল্লাস। যেন নোবেল প্রাইজ জিতেছে! সবটাই পূর্ব পরিকল্পিত চিত্রনাট্য। মতুয়াদের বোঝানোর চেষ্টা, তাঁদের নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য বিজেপি নেতাদের ঘুম নেই। অমিত শাহের সভায় হরিণঘাটার বিজেপি প্রার্থী অসীম সরকার বলেছেন, ‘আধার কার্ড, ভোটার কার্ড, প্যান কার্ড, রেশন কার্ড থাকলে দেশের নাগরিক হওয়া যায় বলে যারা দাবি করছে, তারা চিটিংবাজ।’ কী ভয়ঙ্কর কথা! 
মতুয়া প্রভাবিত এলাকায় কেন নাগরিকত্ব আইন নিয়ে বিজেপির এত প্রচার? উত্তরটা খুব সোজা। বিজেপি নেতৃত্ব পর্যালোচনা করে দেখেছে, ২০১৯ সালে বালাকোটের প্রবল ঝড়ে সিপিএমের ভাঁড়ার ফাঁকা করে দিতে পারলেও তৃণমূলের মতুয়া ভোটব্যাঙ্কে চিড় ধরাতে পারেনি। উল্টে সেই অবস্থাতেও তৃণমূল তাদের ভোট বাড়িয়ে নিয়েছে।
ভোটযুদ্ধে হাওয়া তোলার জন্য বিজেপি নেতারা মুখে যাই বলুন, ভোটের এই পরিসংখ্যানে তাঁরাও নজর বুলিয়েছেন। তাঁরা এও জানেন, ২০১৯ সালের পর মতুয়াদের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বহু কাজ করেছেন। ঠাকুর হরিচাঁদ-গুরুচাঁদের নামে বিশ্ববিদ্যালয় করেছেন। তাঁরই উদ্যোগে পাঠ্যপুস্তকে জায়গা পেয়েছে হরিচাঁদ-গুরুচাঁদের জীবনী, বড়মা বীণাপাণিদেবীকে বঙ্গবিভূষণ উপাধি, মতুয়া উন্নয়ন পর্ষদ গঠন হয়েছে। তবে, হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মতিথি উপলক্ষে ৯ এপ্রিল রাজ্য সরকারের ছুটি ঘোষণা এবারের ভোটে তৃণমূলের ‘মাস্টারস্ট্রোক’ হতে পারে। 
তাই ঘাসফুল শিবিরের মনোবল ভাঙার নিরলস চেষ্টা চালাচ্ছে বিজেপি। প্রচার করছে, চার দফায় সেঞ্চুরিতে তৃণমূলের মতুয়া ভোটব্যাঙ্কে ধস নেমেছে। একেবারে প্রধানমন্ত্রীর স্টাইলে। তবে, বিজেপি নেতাদের ঠিক উল্টো কথা বলছে ভোটের পরিসংখ্যান। (চলবে)

14th     April,   2021
 
 
কলকাতা
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ