বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
কলকাতা
 

সরকারি দপ্তরের গোপন কুঠুরিতে ‘গুপ্তধনের সন্ধান’

নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বিশ্বযুদ্ধের সময় কলকতার রেড রোডে নেমেছিল বিমান, সেই ছবি রয়েছে। ১৮৭০ সালে কলকাতার সাধারণ মানুষের বেশভূষা কেমন ছিল, সেই ছবিও রয়েছে। এমন দুষ্প্রাপ্য ৭০টি ছবির গ্লাস নেগেটিভ রাখা ছিল মরচে ধরা একটি লোহার বাক্সে। বাক্সটি ছিল নিউ সেক্রেটারিয়েট বিল্ডিংয়ের একটি ঘরে। ঘরটি তালাবন্ধ ছিল কত বছর কে জানে! তালা খুলে হাঁটুসমান ধুলো-কাগজ কুচিতে পা পড়ল। তারপর ধুলো ঘেঁটে উদ্ধার প্রাচীন কলকাতার কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক নিদর্শন। উদ্ধার হওয়া সেই নেগেটিভগুলির ডিজিটাইজড ভার্সান নিয়ে টাউন হলে হতে চলেছে প্রদর্শনী। শুক্রবার ‘দ্য সিটি অব ক্যালকাটা অ্যান্ড ইটস লাইফ: ১৮৭০-১৯২০’ নামাঙ্কিত এগজিবিশনটি টাউন হলে বিকেল সাড়ে চারটের সময় উদ্বোধন করা হবে। উপস্থিত থাকবেন আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক, তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন, ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ও মেয়র তথা নগরোন্নয়ন দপ্তরের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। প্রদর্শনী চলবে টানা তিনদিন। এখান থেকে ফ্রেমে বাঁধানো ছবি কিনতে পারবেন মানুষ।
রাজ্যের অ্যাডমিনিস্ট্রেটর জেনারেল অ্যান্ড অফিশিয়াল ট্রাস্টি বিপ্লব রায় ২০২১ সালের ৩০ অক্টোবর নিউ সেক্রেটারিয়েট বিল্ডিংয়ের ঘরটি খোলার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তিনি জানান, ওখানে কী রয়েছে দেখা দরকার, এটা বলতেই দপ্তরের এক কর্মী বললেন, স্যার এই দরজা খুলতে কোনওদিন দেখিনি। খুললে সাপখোপের ভয় রয়েছে। এটা শোনার পর বনদপ্তর, এমারজেন্সি সার্ভিস, স্বাস্থদপ্তরকে খবর দেওয়া হয়। সবাই আসার পর খোলা হল দরজা। ঘরে ভ্যাপসা দমচাপা গন্ধ। ঢুকতেই পা ঢুকে গেল দেড় ফুটের পেপার ডাস্টে। উই পোকায় খেয়েছে কাগজ। খেয়েছে গুরুত্বপূর্ণ বহু নথিও। সঙ্গে ইঁদুর দোসর। তবে কাগজ সরাতেই একের পর এক ‘গুপ্তধন’। ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে ব্রিটিশ ফোটোগ্রাফারের তোলা কলকাতার দুষ্প্রাপ্য ছবির নেগেটিভ রিল। আর একটা জং ধরা লোহার বাক্সের ভিতর গ্লাস নেগেটিভ। বের করা হল সব। ঢোকার আগে বনদপ্তর বলল,  দেড় ফুটের পেপার ডাস্টে সাপ থাকবে না। তখন প্রথমে আমাদের কর্মী মণিশঙ্কর দাস, পরে হোম গার্ড সত্য মণ্ডল তারপর আমি নিজে প্রবেশ করলাম। ভর্তি ইঁদুর আর টিনের বাক্সের মধ্যে উইয়ের মাটি তৈরি হয়েছে। কোনও আলো নেই। মোবাইল লাইট, পুলিসের সার্চ লাইট দিয়ে প্রথমে কাজ শুরু করি। পরে পিডব্লুডি দুটো টিউবলাইট লাগিয়ে দেয়। ততক্ষণে অনেকে ধুলোয় অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। বিপ্লববাবু বলেন, ‘ছবি সংরক্ষণ করার উপযুক্ত মানুষ আমাদের শহরে হাতে গোনা। সৈকত দত্ত নামের একজনের কাজের নমুনা দেখে তাঁকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।’ পাশাপাশি ছবিগুলি কার বা কাদের তোলা, সেই বিষয়ে এখনও গবেষণা চলছে। যদিও যে পেশাদারিত্ব নিয়ে ছবিগুলো তোলা হয়েছে তা দেখে মনে হচ্ছে এগুলি কোনও নামজাদা ব্রিটিশ ফোটোগ্রাফারেরই কাজ। ১৮৭০ থেকে ১৯২০ সালে কলকাতা শহর ও বাসিন্দাদের জীবনযাত্রা ফুটে উঠেছে ছবিগুলোর মাধ্যমে। হাইকোর্টের সামনের লেক, নিমতলা শ্মশান, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় রেড রোডে বিমান অবতরণ সহ বহু দুষ্প্রাপ্য ছবি এখানে রয়েছে। পাশাপাশি এই এগজিবিশনে ১০ জন স্বাধীনতা সংগ্রামীর পরিবারকে সংবর্ধনা দেওয়া হবে। তাঁদের অনেকের পরিচয় মানুষ জানেন না। তাঁরা হলেন, রাসবিহারী বোস, প্রফুল্ল চাকী, কানাইলাল দত্ত, দীনেশ গুপ্ত, রামেশ্বর বন্দ্যোপাধ্যায়, মতিলাল রায়, সুনীল বন্দ্যোপাধ্যায়, সত্যরঞ্জন বক্সী, সুদীপরঞ্জন বক্সী ও রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। 

21st     September,   2023
 
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ