বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
কলকাতা
 

‘ট্রেনে উঠতেই দিতে চাইছে না পরিজনরা’
করমণ্ডল দুর্ঘটনার ভয়াবহ স্মৃতি থাবা বসাচ্ছে যাত্রী মনে   

নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: শরীর একদিন ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু মন? মন যে কিছুতেই ভুলতে পারছে না ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনার দৃশ্য। শুক্রবার করমণ্ডল এক্সপ্রেসে ছিলেন হুগলি জেলার উত্তরপাড়ার বাসিন্দা শানু দাস। বর্তমানে ভয়ানক মানসিক ট্রমার মধ্যে রয়েছেন তিনি। পেশায় ভ্রমণ সংস্থার ম্যানেজার। কর্মসূত্রে তাঁকে ট্রেনে চেপে সারা দেশ ঘুরে বেরতে হয়। ১৭ জুন লাদাখ যাওয়ার কথা। কিন্তু ট্রেনে ওঠার কথা ভাবলেই আতঙ্ক গ্রাস করছে। বিশেষ করে বাড়ির লোকই তাঁকে আর ট্রেনে ছাড়তে চাইছেন না। নিজেই বললেন, ‘স্ত্রী বারবার বলছে আর ট্রেনে যেতে হবে না। অন্য কোনওভাবে যাও। শ্বশুর-শাশুড়ি থেকে পাড়া প্রতিবেশীরা, প্রত্যেকেরই বক্তব্য, কী দরকার ট্রেনে যাওয়ার। বিকল্প ব্যবস্থা রয়েছে, সেই পথেই যাও।’ তিনি আরও বলেন, বিছানা থেকে উঠতে গেলে এখনও ব্যথা পাচ্ছেন। ওষুধ খেয়ে শরীরের ব্যথা বাগে এনেছেন একটু। কিন্তু মন? এখনও চোখ বন্ধ করলে দুমড়েমুচড়ে যাওয়া কামরার দৃশ্য ভেসে উঠছে। ঘুমের মধ্যেও রেহাই নেই। খালি মনে হচ্ছে, ‘এই বোধহয় পড়ে গেলাম।’ শেষমেশ মনোবিদের পরামর্শ নিতে হচ্ছে তাঁকে।
শানুরা ছ’জন মিলে চেন্নাই যাচ্ছিলেন। পরেরদিন অন্যদের যাওয়ার কথা ছিল। বললেন, ‘জানলা দিয়ে দেখলাম একটা একটা করে বগি উল্টে যাচ্ছে। মৃত্যু আসন্ন বুঝলাম।’ সানুরা ছিলেন এস ওয়ান বগিতে। সেটি ইঞ্জিন থেকে চার নম্বর বগি। ‘পরে জেনেছি আমাদের বগির উপর এস টু বগি উঠে গিয়েছিল। চোখে দেখছিলাম কাপড়ের মতো কুঁকড়ে যাচ্ছে বগি। আমি লাগেজের পাশে রড ধরে কোনওরকমে বসেছিলাম’, বললেন শানু। জানালেন, এর আগে বহুবার করমণ্ডলে চড়েছেন। কিন্তু এমন একটা গুরুত্বপূর্ণ ট্রেনের এ হেন অবস্থা দেখে সবাই অবাক। দুর্ঘটনাস্থল থেকে রিলিফ ট্রেনে কলকাতায় ফিরেছিলেন। এখন দুশ্চিন্তা পেশার কারণে আজ না হোক কাল 
ট্রেনে উঠতেই হবে। কীভাবে এই আতঙ্ক ভুলবেন বুঝে উঠতে পারছেন না। বললেন, ‘এখন 
মনে হচ্ছে, বেঁচে ফিরলাম কীভাবে? ট্রেনে উঠতেই ভয় লাগছে। পরিবারও ট্রেনে ওঠার কথা শুনলে রেগে যাচ্ছে। মনোচিকিৎসকের কাছেও যেতে হল আমাকে। চিকিত্সা শুরু হয়েছে। ওষুধও খাচ্ছি।’ 
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্কুল শিক্ষিকারও কার্যত একই অবস্থা। দুর্ঘটনাগ্রস্থ ট্রেনের জানলা থেকে ঝাঁপিয়ে তিনি কোনওক্রমে কামরার বাইরে বেরিয়েছিলেন। কিন্তু তারপর ট্রমার মধ্যে পড়েন। স্কুলে যেতে পারছেন না। শরীরে আঘাতের ব্যথা কমে গেলেও মনে গভীর দাগ কেটেছে দুর্ঘটনার অভিজ্ঞতা। যা কিছুতেই কাটছে না।

9th     June,   2023
 
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ