বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
কলকাতা
 

ভস্মীভূত তিন গাড়ি...। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে চাঁদনি চক এলাকার ম্যাডন স্ট্রিটে। প্রথমে একটি গাড়ির বনেট থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখা যায়। নিমেষে সেটি দাউদাউ করে জ্বলতে থাকে। সেটি থেকে বাকি দু’টি গাড়িতেও আগুন ছড়িয়ে পড়ে। দমকলের তিনটি ইঞ্জিন আগুন নেভায়। যান্ত্রিক গোলযোগ ও তীব্র গরমের জন্যই এই ঘটনা বলে প্রাথমিকভাবে অনুমান দমকলের। -নিজস্ব চিত্র

‘লাশ’ হয়েও কলকাতায় জীবিত
অবস্থায় ফিরলেন বিশ্বজিৎ মালিক
গায়ে কাঁটা দেওয়া গল্প শোনালেন বাবা

নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: লাশের স্তূপ থেকে যেন মাথা তুলে দাঁড়াল নতুন করে ফিরে পাওয়া এক জীবন। হাজারো শোকের মধ্যে একটি ব্যতিক্রমী আশার গল্প শোনাতে পারে বিশ্বজিৎ মালিকের ঘটনা। দুর্ঘটনার পরে কোচ থেকে বেরিয়ে স্রেফ অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলেন অভিশপ্ত করমণ্ডল এক্সপ্রেসের এই যাত্রী। ঘটনার অভিঘাত এবং ক্ষতবিক্ষত ডানহাত থেকে রক্ত ঝরতে দেখে সম্বিত ধরে রাখতে পারেননি তিনি। জ্ঞান ফিরতে দেখেন, আট-দশটি লাশের স্তূপের নীচে চাপা পড়ে রয়েছেন। আর সেই লাশ ভর্তি ট্রাক ছুটছে বাহানাগার অস্থায়ী মর্গের দিকে।
ডানহাত ক্ষতবিক্ষত হলেও বাঁ হাত ঠিক ছিল। কোনওক্রমে সেটা নেড়েই উদ্ধারকারী দলের সদস্যদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন বিশ্বজিৎ। অবশেষে মর্গের বদলে তাঁর ঠাঁই হয় হাসপাতালের বেডে। অবিশ্বাস্য এই ঘটনার বিবরণ দিচ্ছিলেন বিশ্বজিতের বাবা হেলারাম মালিক। তিনি হাওড়ার একটি কামারশালায় কাজ করেন। ইস্পাত কঠিন হেলারাম প্রথম থেকেই নিশ্চিত ছিলেন, তাঁর ছেলে বেঁচে রয়েছে। জ্বলন্ত ফাউন্ড্রির সামনে বসে নিরলস কাজ করার যে ক্ষমতা, তা যে ছেলের মধ্যেও সঞ্চারিত হয়েছে। ঘটনাস্থলে অনেকেই তাঁকে বলছিলেন, তাঁর ছেলে মর্গের পথে। তবে, বিশ্বাস করতে চাননি তিনি। শেষ পর্যন্ত তাঁর ধারণাই সঠিক বলে প্রমাণিত হয়েছে। অফুরন্ত জীবনশক্তির প্রমাণ 
দিয়ে বিশ্বজিৎ কার্যত যমদূতকেই বাঁ হাতের ইশারায় থামিয়ে দিয়েছেন। ২৩০ কিলোমিটার অ্যাম্বুল্যান্সে চাপিয়ে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে ছেলেকে নিয়ে এসে ভর্তি করেছেন হেলারাম।
অবশ্য ছেলেকে খুঁজে পাওয়ার ঘটনা পরম্পরা এতটা আশাব্যঞ্জক ছিল না। দুর্ঘটনার খবর পেয়েই হেলারাম ফোন করেন ছেলেকে। কেউ ফোন ধরে জানান, বিশ্বজিৎ বেঁচে থাকলেও প্রবল যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। তখন তিনি হাওড়ার এক স্থানীয় অ্যাম্বুল্যান্স চালককে ডেকে নিজের শ্যালককে নিয়ে রওনা দেন বালেশ্বরে। তবে, কোনও হাসপাতালে ছেলেকে খুঁজে না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েন তিনি। স্থানীয় হাইস্কুলের অস্থায়ী মর্গেও যান তাঁরা। তবে, তাঁদের সরাসরি দেহ দেখতে দেওয়া হয়নি। সেটা নিয়ে উদ্ধারকারী এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে তাঁদের কিছুটা বাদানুবাদও হয়। এমন সময় খবর পান, ছেলে ট্রাকে করে ফিরেছে, তবে জীবিত আছেন। হাত নড়তে দেখে তাঁকে লাশের স্তূপ থেকে তুলে এনেছেন উদ্ধারকারীরা। ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাতে থাকেন হেলারাম। তবে, আরও দুর্ভোগ অপেক্ষা করেছিল তাঁদের জন্য। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিশ্বজিৎকে ছাড়তে রাজি হয়নি। কলকাতায় ফিরিয়ে আনার জন্য অনুমতি দেওয়া তো দূরের কথা। অনেক চেষ্টার পরে তাঁদের বোঝাতে সক্ষম হন হেলারাম। অবশেষে এসএসকেএমে বিশ্বজিতের অস্ত্রোপচার হয়েছে। হাতের পাশাপাশি তাঁর পায়ের আঘাতও গুরুতর। তবে, ছেলে বেঁচে রয়েছে, এটাই সর্বোচ্চ সান্ত্বনা হেলারামের কাছে।

6th     June,   2023
 
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ