বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
কলকাতা
 

‘ওরা কি বেঁচে?’ জবাব শুনেই
পল্লবী বলে ওঠে ‘আবার মারব’

দীপন ঘোষাল, হাওড়া: পেশাদার খুনি না হলে অনেকক্ষেত্রে ভয়ানক অপরাধের পর অনুশোচনার ছাপ দেখা যায় তাদের চোখেমুখে। কিন্তু পরিবারের চার সদস্যকে কুপিয়ে খুনের পর সেসবের কোনও বালাই ছিল না হাওড়া হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত পল্লবী ঘোষের মধ্যে। বরং তিনি যা বলেন, তাতে রীতিমতো চমকে উঠেছেন ঝানু পুলিসকর্তারাও। বুধবার রাতেই পুলিস আটক করে পল্লবীকে। তাকে নিয়ে বেরিয়ে আসার সময় এক পুলিসকর্মীকে সে জিজ্ঞাসা করে, ওরা কি বেঁচে আছে? জবাবে ‘হ্যাঁ’ শুনে সে বলে, ‘আবার মারব ওদের’। তার এই কথায় ঘাবড়ে যায় পুলিস। ব্যক্তি আক্রোশ কোন পর্যায়ে পৌঁছলে এই নৃশংসতার পরও এমন মন্তব্য করা যায়, তা ভেবে কূলকিনারা পাচ্ছেন না কেউ। 
বুধবার রাত ১১টা নাগাদ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা টের পান ৮৯, এম সি ঘোষ লেনের ঘোষ পরিবারের প্রতিবেশীরা। তাঁরাই হাওড়া থানায় ফোন করেন। পুলিস এসে দেখে, নীচের তলার একটি ঘরজুড়ে রক্তের স্রোত বইছে। রক্তের উপর পড়ে রয়েছে চার-চারটি নিথর দেহ। এলোপাথাড়ি কাটারির কোপে দেহগুলি ক্ষতবিক্ষত। পাশেই পড়ে রয়েছে খুনের অস্ত্র, রক্তাক্ত কাটারি। সঙ্গে সঙ্গে আটক করা হয় খুনের মূল অভিযুক্ত তথা বাড়ির ছোট বউ পল্লবী ঘোষকে। রক্তে ভেজা নাইটি পরে ঘরেই বসেছিল সে। এই ফাঁকেই চম্পট দিয়েছে তার স্বামী দেবরাজ। একটি সূত্রের খবর, পুলিসের হাতে ধরা পড়ার সময়ও পল্লবীর চোখে ছিল সেই একই রোষের আগুন। সেই সময় সে রক্তাক্ত দেহগুলিকে আবারও কোপানোর কথা বলে। হাওড়া থানার ওসি নিজেই সেখানে ছিলেন। তাঁকে উদ্দেশ্য করে পল্লবী বলে, বাড়িতে আমার ছেলে রয়েছে।  কে
যেন একটু দেখা হয়। ভাসুরের একরত্তি মেয়েকে কাটারি দিয়ে কোপানোর পর নিজের সাত বছরের ছেলের জন্য এই ‘মাতৃসুলভ’ আচরণে হকচকিয়ে যান সবাই। প্রাথমিক তদন্তে পুলিস জেনেছে, মানসিক কিছু সমস্যা রয়েছে পল্লবীর। তার মানসিক চিকিৎসার প্রয়োজন। কিন্তু কোনও রক্তমাংসের মানুষ এতটা নৃশংস কীভাবে হতে পারে? এ বিষয়ে প্রখ্যাত মনোবিদ তথা কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ এবং আর জি কর হাসপাতালের মনোরোগ বিভাগের প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান ডাঃ দিলীপ মণ্ডল বলেন, এটা একটা অস্বাভাবিক মানসিকতার পরিচয়। সুস্থ মস্তিষ্কের কোনও মানুষ এমন কাজ করতে পারেন না। এই মহিলার কাছে সম্পত্তি মুখ্য বিষয় হয়ে উঠেছিল। সেই লোভ থেকে সে এই নৃশংস পথ অবলম্বন করে। মানুষের সুকুমার মনোবৃত্তিগুলো ক্রমশ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।  তবে এই ধরনের হত্যাকাণ্ড পরিকল্পনামাফিক হতে পারে না। কারণ, পরিকল্পনা করে কেউ এভাবে কুচিকুচি করে কাটতে পারে না। এক্ষেত্রে একটি ‘সাইকোপ্যাথিক পার্সোনালিটি’ থাকতে পারে। সিরিয়াল কিলারদের তেমন কোনও মানসিক আলোড়ন হয় না এরকম নৃশংসতা দেখে। ওই মহিলার ক্ষেত্রে হয়তো সম্পত্তিগত চাহিদা এতটাই তীব্র হয়েছিল যে  সেই আলোড়ন আর তৈরিই হয়নি। 

12th     August,   2022
 
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ