বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
কলকাতা
 

শালীর সঙ্গে সম্পর্ক, ভায়রার এক
কোপে খুন পানিহাটির শুভ্রজ্যোতি

নিজস্ব প্রতিনিধি, চুঁচুড়া: স্বামী জেলে। সেই সুযোগেই শ্যালিকাকে কুপ্রস্তাব দিয়েছিলেন জামাইবাবু। সূত্রের খবর, দু’জনের মধ্যে ‘সম্পর্ক’ও গড়ে উঠছিল গোপনে। সেই অবৈধ সম্পর্কের মাশুল গুনতে হল পানিহাটির বাসিন্দা শুভ্রজ্যোতি রায়কে। কারণ, সম্প্রতি সংশোধনাগার থেকে মুক্তি পান শ্যালিকার স্বামী। গোটা ঘটনা তাঁর কানে যেতে দেরি হয়নি। রাগের মাথায় শুভ্রজ্যোতিকে ডেকে পাঠিয়ে নৃশংসভাবে খুন করেন তিনি। ক্ষুব্ধ ভায়রার চপারের এক কোপেই তাঁর ধড়-মুণ্ড আলাদা হয়ে গিয়েছিল। কাটা মুণ্ড গঙ্গার জলে ভাসিয়ে দিয়ে বাকি দেহ অন্যত্র ফেলে এসেছিলেন সুবীর অধিকারী। সোমবার ভোররাতে উত্তরপাড়া থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিস। একইসঙ্গে গ্রেপ্তার করা হয়েছে শুভ্রজ্যোতির স্ত্রী পূজা রায় ও তাঁর পাতানো দিদি তথা সুবীরের স্ত্রী শর্মিষ্ঠাকে। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করেই মিলেছে যাবতীয় তথ্য। পুলিস অবশ্য সরকারিভাবে জানিয়েছে, শ্যালিকাকে কুপ্রস্তাব দেওয়ার জেরেই খুন হতে হয় শুভ্রজ্যোতিকে।
চন্দননগর কমিশনারেটের ডিসিপি (শ্রীরামপুর) অরবিন্দ আনন্দ এদিন জানিয়েছেন, ‘ঘটনার মূল অভিযুক্ত সুবীর। পেশায় বাসচালক। কিন্তু তার মানসিকতা অপরাধীর মতো। স্ত্রী শর্মিষ্ঠাকে নিয়ে সে খুব স্পর্শকাতর ছিল। তাঁকে কুপ্রস্তাব দিয়েছিল শুভ্রজ্যোতি। এর জেরেই খুনের পরিকল্পনা করে সুবীর। শর্মিষ্ঠা এবং মৃত শুভ্রজ্যোতির স্ত্রীর সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল। ধৃতদের সকলের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা করা হয়েছে।’ পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, এর আগে বরানগরে একটি চপার দিয়ে খুনের চেষ্টার মামলায় সুবীরের কারাদণ্ড হয়েছিল। সংশোধনাগার থেকে বেরিয়েই তিনি পরিকল্পনামাফিক শুভ্রজ্যোতিকে কোন্নগর ঘাটে ডেকে পাঠান।
গত ২ মে হুগলির শ্রীরামপুরের বাঙ্গিহাটির নিকাশিনালায় মুণ্ডহীন একটি দেহ পাওয়া যায়। ২০ দিন পর, রবিবার সেই দেহ পানিহাটির নিখোঁজ শুভ্রজ্যোতির বলে শনাক্ত করে পুলিস ও পরিবার। তারপরেই শুরু হয় তদন্ত। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, শুভ্রজ্যোতির পরিবার যেহেতু স্ত্রী পূজার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছিল, তাই প্রথমে তাঁর সম্পর্কেই খোঁজ শুরু হয়। তখনই পূজার পাতানো দিদি শর্মিষ্ঠার স্বামীর সম্পর্কে জানতে পারেন তদন্তকারীরা। সেই সূত্র ধরেই গোটা মামলার কিনারা হয়। 
ঠিক কী হয়েছিল ঘটনার দিন? পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, পূজাকে বিয়ের পরেও শর্মিষ্ঠার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হতে চাইতেন শুভ্রজ্যোতি। সুযোগ বুঝে তিনি কুপ্রস্তাব দেন শ্যালিকাকে। সেকথা জানতে পেরেই শুভ্রজ্যোতিকে খুনের ছক কষে সুবীর। গত ১ মে তিনি কোন্নগর ঘাটে ডেকে পাঠান জামাইবাবুকে। সেখানে দু’জনে মিলে মদ খান। তারপর খুব শান্ত মাথায় শুভ্রজ্যোতির গলায় চপার চালিয়ে দেন সুবীর। এক কোপেই ধড় থেকে মুণ্ড আলাদা হয়ে যায়। পুলিসের দাবি, শুভ্রজ্যোতিকে খুনের বিষয়ে শর্মিষ্ঠা ও পূজার সঙ্গে আলোচনা করেছিলেন তিনি। সেইমতো কোন্নগর ঘাটে আগে থেকেই একটি ঠেলাগাড়ি ও চপার রাখা ছিল। খুনের পরে সুবীর নিজেই ঠেলাগাড়িতে করে মৃতদেহ নিয়ে গিয়ে নিকাশি নালায় ফেলে দেন। আর মুণ্ড ভাসিয়ে দিয়েছিলেন গঙ্গার জলে। রাতে বৈদ্যবাটির বাড়িতে চলে যান সুবীর। পরদিন সকালে আবার ফিরে যান নিজের কাজে। পুলিসের জেরার মুখে তিনি নিজেই এসব তথ্য দিয়েছেন। 
এদিকে, শুভ্রজ্যোতির সৎকার অবশ্য এখনও হয়নি। পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মুণ্ড না পাওয়া পর্যন্ত দেহ নেওয়া হবে না। অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক সাজা চেয়েছেন তাঁরা। 

24th     May,   2022
 
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ